প্রথম পাতা
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু
মানবজমিন ডিজিটাল
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিবৃতিতে বলা হয়- এসব ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের নিকটতম সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। এরমধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী যারা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চান তাদের সমর্থন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিকেই প্রতিফলিত করে।’
নির্বাচনের আগেই কয়টি দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে?
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা ইতিহাসে এই প্রথম। বিশ্বের হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি দেশের জন্য এমন ভিসা নীতি গ্রহণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় বাংলাদেশের আগে ৫টি দেশ ছিল: নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, নিকারাগুয়া ও বেলারুশ। তবে, কোনো দেশের নির্বাচনের আগে সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খর্বে জড়িত সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনা বিবেচনায় এটা দ্বিতীয়।
যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা, তাদের নাম জানা যাবে?
নীতিগত অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা কারও নাম উল্লেখ করে না। গত জুলাই মাসে কম্বোডিয়ার বিতর্কিত নির্বাচনের পর ওই নির্বাচনকে ‘মুক্ত বা নিরপেক্ষ, কোনোটাই নয়’ উল্লেখ করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
নির্বাচনের রাতেই স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে উক্ত পদক্ষেপের কথা জানান।
এক সংবাদ সম্মেলনে মিলারকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় কারা থাকবেন এবং কম্বোডিয়ার সরকারের কেউ থাকবেন কিনা। জবাবে মিলার তখন বলেছিলেন, ‘নীতিগত অবস্থানের কারণে নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা কারও নাম আমরা উল্লেখ করি না। কেবল এটাই জানাই যে, নির্দিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তাকে আমরা চিহ্নিত করেছি।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে চলতি বছরের ২৪শে মে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২(ধ)(৩)(ঈ) (‘৩ঈ’) এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিনকেন। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই ভিসা নীতির বার্তা মূলত যারা বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বন্ধ।
অ্যান্টনি জে ব্লিনকেন তার বিবৃতিতে বলেছিলেন- এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এরমধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল যে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে: ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেয়া, এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।
পাঠকের মতামত
বাংলাদেশের আগে কেবল আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় এ বছরের ২৫শে ফেব্রুয়ারি একই অপরাধে দেশটির নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিছু দুর্বৃত্ত বেওকুফরা নিজের অপরাধ বুঝেও না বোঝার ভান করে সেতুমন্ত্রীর মতই ভাড়ের ভুমিকায় বিরোধী খুঁজে বেড়াচ্ছে।
অ্যামেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞায় বি এন পি বেকায়দায় পড়েগেলো , এটা বি এন পি নেতা কর্মিদের মাথায় ঢুকছে না ।
দেখার অপেক্ষায় রইলাম এরপর কারা সে সাহসী বীর, যারা আলীগের গদি রাখার জন্য নিজের পরিবারের স্বার্থ বিলিয়ে দিতে সাহস করেন। যার কপালে এই ভিসানীতি পড়বে, তার নাম যে ভিসা এপ্লিকেশানে থাকবে, সেই এপ্লিকেশানই বরবাদ। সে নিজে হোক বা বউ-ছেলে-মেয়ে হোক বা মা বাবা। ইন্টারেস্টিং!
জনগণ যদি না ই জানতে পারে কার কার উপর নিষেধাজ্ঞা আসলো এবং নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তরা নির্দিষ্ট ঠিক কোন কোন কার্যকলাপ এর জন্য নিষেধাজ্ঞা পেল ? তাহলে লাভ কি ? এতে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের ব্যক্তিগত সমস্যা হলেও নির্বাচনের উপর কোন প্রভাবই ফেলবে না। ক্ষমতাসীন সরকারকেও জনগণকে কোন জবাবদিহি করতে হবে না। বরং তাঁরা বড় ফাঁপর থেকে বেঁচে গেল। ফালতু !
Ambiguous decision. I didn't understand.
সোমালিয়া উগান্ডার সাথে আমাদের উন্নয়নের মিল দেখে আমি গৌরবান্বিত
নির্জাতিত জনতার পাশে দারানুর জন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদ
Dear Mr President, I thank you from my heart for your appropriate actions to uphold our democracy, freedom of speech, and human rights . Please do something to protect our citizens from judicial harassment. People of Bangladesh will remember you forever. May Allah bless you, May Allah bless America
অনেকের পাচার হওয়া ফান্ড ফ্রিজ হবে।বাংলাদেশের জন্য শুভ দিন ।গনতন্ত্রের মুক্তির জন্য দুরতো ব্যাবসতা চাই। আমেরিকান এ্যাকশনের যাত্রা শুভ হোক বাংলাদেশ রাহু মুক্ত হোক এই কামনায়।
কত অর্জন ! কত উন্নয়ন ! কত অপচয়ের আতশবাজি ! কত জাঁজমকপূর্ন রাষ্ট্রিয় সফর ! ক্ষমতা উদ্জাপনের কত বেহিসেবী আয়োজন ! সব যেন একটা স্বচ্ছ আবাদ নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনহীনতার বেদীমূলে মুখ থুবড়ে পড়লো। কি বলবেন স্তাবকগন ? কি প্রতিক্রিয়া দেবেন শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদগন(!) ! মুক্ত দুনিয়ায় অবরুদ্ধের মত থেকে কোন উন্নয়নের গীত গাইবো ? গনতন্ত্র ফিরে আসুক সংশ্লিষ্ট সকলের উপলব্ধি ও কর্মে।
মন্তব্য করুন
প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন
প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত
চোখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকার দিকে/ কৌতূহল, নানা আলোচনা
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়/ শেখ হাসিনাকে দিল্লির বলা উচিত...

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]