দেশ বিদেশ
৩৩ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরলেন হারেজ
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার
অভিমান করে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার ৩৩ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে এলেন হারেজ আলী (৫৮)। স্বজনরা হারানো বিজ্ঞপ্তিসহ অনেক খোঁজাখুঁজির পরও এতদিন তার কোনো হদিস পাননি। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। হারেজ আলী মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের সাইংজুরী গ্রামের মৃত চেনু খাঁর ছেলে। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর তাকে পেয়ে পরিবারের লোকজন খুশি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ঘিওর থানা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় তাকে ফিরে পাওয়া গেছে। তার ফিরে আসার খবর শুনে শত শত লোক হারেজ আলীকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।
হারেজের ছোট বোন নূরজাহান বেগম জানান, তার ভাই হারেজ আলী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ১৯৯০ সালে ২৫ বছর বয়সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এখন তার বয়স ৫৮ বছর। ৩৩ বছর পর হঠাৎ চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানাধীন হোগলডাংগা গ্রামের মতিয়ার নামে এক লোক ঘিওর থানা এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা জানান, তাদের বাড়িতে হারেজ ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। পরে তাদের কথা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা থেকে স্থানীয় কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে হারেজ আলীকে বাড়ি নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। হারেজের পরিবারে বৃদ্ধা মা, এক বোন- বোন জামাই, ভাগিনা ছাড়া কেউ নেই। সন্তানের অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে বৃদ্ধ হয়ে গেছেন মা। তবুও এই ফিরে আসার আনন্দে খুশির বন্যা বইছে পরিবারে। খুশির ঢেউ লেগেছে প্রতিবেশীদের মধ্যেও। কারও চোখে বিস্ময়, কারও চোখে আনন্দাশ্রু। স্থানীয় আব্দুল মালেক দেওয়ান জানান, পরিবারের সঙ্গে হারেজকে আনতে তিনিও চুয়াডাঙ্গা গিয়েছিলেন। ২৫ বছর মতিয়ার নামে এক ভদ্রলোক তাকে লালনপালন করেছেন। তারা অনেক ভালো মানুষ, এতদিন ঠিকানা না বলতে পারায় হারেজকে বাড়ি পৌঁছে দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। হারেজ ফিরে আসায় এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান জানান, ১৯৯০ সালে বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের হারেজ আলী নামে ওই ব্যক্তি বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়াল খান আমাকে জানান, হারিয়ে যাওয়া সেই হারেজ চুয়াডাঙ্গা জেলায় এক ব্যক্তির বাড়িতে বসবাস করছেন। পরে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ১৬ই সেপ্টেম্বর সকালে তাকে আনার জন্য স্থানীয়রা গিয়েছিলেন। রাতে তাকে নিয়ে আসেন। এ বিষয়ে ঘিওর থানা পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।