দেশ বিদেশ
বরগুনায় ডেঙ্গুতে আরও এক নারীর মৃত্যু
বরগুনা প্রতিনিধি
৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জুন্নুর আক্তার (৩৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ২৯ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০৫ জনে।
জুন্নুর আক্তার বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সালেহের স্ত্রী। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বরগুনা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ৬৫, আমতলী ৪, বেতাগী ২, বামনা ৪, পাথরঘাটায় ১০ এবং তালতলী ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ২৩৬ জন। এদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ১৮১, আমতলী উপজেলায় ৫, বেতাগীতে ৩, বামনায় ২০, পাথরঘাটায় ১৩ এবং তালতলী উপজেলায় ১৪ জন চিকিৎসাধীন। জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে সদর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৬৬ জন। অন্যদিকে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ২৮ জনের মধ্যে ২৪ জনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায় এবং একজনের বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলায় এবং ৩ জনের বাড়ি বেতাগী উপজেলায়। আক্রান্তদের মধ্যে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষই বেশি। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) জরিপেও গ্রামাঞ্চলে এডিসের লার্ভার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে। এর কারণ হিসেবে বৃষ্টির পানি ড্রামে ধরে রাখায় এডিস মশার লার্ভা তৈরি হচ্ছে এবং বাসাবাড়ি থেকে আক্রান্ত হচ্ছে ৫৮ শতাংশ। জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিন দিন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। একদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধার অভাবে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। আইসিইউ না থাকা, এম্বুলেন্স সংকট, চিকিৎসায় বিলম্ব এবং গ্রামাঞ্চলে বাড়তে থাকা সংক্রমণের হার বরগুনার পরিস্থিতিকে করে তুলেছে আরও ভয়াবহ। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ঘাটতি মানুষের অসহায়ত্বকে আরও প্রকট করে তুলছে। এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন অতি জরুরি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তবে রোগীরা প্রথমে জ্বর দেখে ঘরে কিছুদিন অপেক্ষা করে, তারপর হাসপাতালে আসেন। এই কারণে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।