রাজনীতি
আমাদের এখন ডু আর ডাই: গয়েশ্বর
স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী থেকে
(২ সপ্তাহ আগে) ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৭:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১২ পূর্বাহ্ন

আগামীদিনের কর্মসূচি পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আমাদের এখন চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে হবে। আমাদের এখন ডু আর ডাই। হয় বাঁচবো, নয় মরে যাবো। কিন্তু কাঙালের মতো শেখ হাসিনার অত্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করে বাঁচতে চাই না। তাই আপনারা প্রস্তুত থাকেন। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতা তালিকা করেন। লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত থামবেন না। মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের টঙ্গী উপজেলার কলেজগেটে সরকার পতনের একদফা দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে দুপুর থেকেই গাজীপুর ও টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কলেজগেটে জড়ো হন।
সমাবেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসের সীমানায় নিয়ে গেছে। এই পাচার থামানো না গেলে বাংলাদেশের মানুষ অনাহারে দিন কাটাবে। অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়বে। তিনি বলেন, আজকে বিদেশিরা বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও ভোটাধিকারের কথা বলছে। তারা বলছে- বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা বিএনপি পক্ষে বলছে না। তাই জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে কে সরকার গঠন করবে।
তিনি বলেন, আজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জামিন হয় কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না। তার বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। আজকের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান যখন হাইকোর্ট বেঞ্চে ছিলেন তখন খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তিনি জামিন দেননি। তিনি বলেছিলেন- আমার ইচ্ছা আমি জামিন দেব না। তাই এই বিচার বিভাগ আমরা মানি না। বিচারের নামে প্রহসন আমরা মানি না। প্রতিদিন তারিখ দেয়, প্রতিদিন আমাদের কোর্টে হাজিরা দিতে হচ্ছে।
শেখ হাসিনা আজ ছোটাছুটি করছে। শেখ হাসিনা সেলফির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। একটা রাষ্ট্র প্রধান আরেকটা রাষ্ট্র প্রধান ছবি তুলবেন এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কতটুকু দেউলিয়া হলে একটা দলের সাধারণ সম্পাদক সেলফির কথা প্রচার করে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সঙ্গে সম্পর্ক হইলো কি হইলো না সেটা আমেরিকার নীতিতে কিছু যায় আসে না।
গয়েশ্বর রায় বলেন, এই সরকার নিজে নিজে পড়ে যাবে। আর আপনারা যদি ধাক্কা দিয়ে ফালান তখন আপনাদের কাছে চিৎকার দিবে। এই সরকারের কোনো যোগ্যতা নাই ক্ষমতায় থাকার।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের নাকি বলেন- বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পিঠের চামড়াও থাকবে না। আবার বলেন, যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিন নাকি এক লক্ষ লোক মারা যাবে। আরে আপনারা ক্ষমতায় থাকলে ১৮ কোটি লোকই মারা যাবে।
গয়েশ্বর রায় বলেন, কিছু ফেরিওয়ালা আছে, কিছু সংস্থার লোক আছে তারা আরেকটা নাটকীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতারণা করে বলবে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। তার একটা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আজকে একটা পার্টি হয়েছে- সেই পার্টির মধ্যে কিছু শকুন ঢুকে পড়েছে। রাজনীতিবিদ কেনাবেচার হাট শুরু হয়ে গেছে ভেতরে ভেতরে। আপনাদের আশেপাশে জাতীয়তাবাদী কোনো নেতা যেন বিপথগামী না হয় সেটা খেয়াল রাখবেন।
এদিকে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আজকে একদফা হচ্ছে শেখ হাসিনার পতন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের পতন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রবর্তন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। সব দফা আমরা আদায় করবো। তিনি বলেন, আমরা আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছি। এই আন্দোলনে জয়ী হতে হবে। এই আন্দোলন বিএনপির একার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির আন্দোলন। আরেকটি আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সেটা ছিল স্বাধীনতার আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধের পর আজ বাংলাদেশে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা, ভোটাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তার আন্দোলন। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনির্বাচিত শেখ হাসিনাকে বিদায় দেয়ার। সেজন্য লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমেছে। এই আন্দোলন সফল সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রোববার বগুড়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ করেছি। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান নাই। অবিশ্বাস্য ১০ ঘণ্টা লেগেছে রাজশাহী পৌঁছতে। হাজার হাজার জনতা রাস্তায় নেমে আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। মানুষ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা রাস্তায় নামছে। কিছুই মানছে না। তারা রাস্তায় থাকবে স্বৈরাচার বিদায় না হওয়া পর্যন্ত।
বিএনপির নীতি-নির্ধারণ ফোরামের এই নেতা বলেন, মানুষ এখন বুক পেতে দিচ্ছে। কোনো অস্ত্র, গুলি কাজ করছে না। আমাদের সাথে বাংলাদেশের মানুষ, তাদের সাথে কেউ নাই। বিদেশি বন্ধুরাও নাই।
তিনি বলেন, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নাই। তারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে গেছে। তারেক রহমানের নির্দেশমতো ফয়সালা রাজপথে করতে হবে। প্রয়োজনে প্রাণ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা শেষপথে চলে আসছি। এই আন্দোলনে মানুষ জয়ী হবে। কোনো অস্ত্র-গুলি এই আন্দোলন ঠেকাতে পারবে না।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে সাবেক এমপি হাসান সরকার, জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন
রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা/ যে কোনো সময় আসতে পারে সিদ্ধান্ত, নানা আলোচনা
১৫ দিনের লাগাতার কর্মসূচি/ পাঁচ বিভাগে রোডমার্চ, ঢাকায় ১২টি সমাবেশ ও কনভেনশন করার ঘোষণা বিএনপির

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]