বাংলারজমিন
নোয়াখালী গণপূর্তের শত কোটি টাকার জায়গায় মার্কেট নির্মাণ
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার
নোয়াখালীর মাইজদীতে জেলা প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে গণপূর্ত বিভাগের শত কোটি টাকার সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণের কাজ চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ কাজ বাস্তবায়নে তদারকি করছে নোয়াখালী ক্ষুদ্র হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি। শনিবার জেলা শহরের হকার্স মার্কেটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের নামে নোয়াখালী সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে এ নির্মাণ কাজ চলছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় গণপূর্ত বিভাগের জায়গায় অবৈধ মার্কেট নির্মাণের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। তাদের দেখে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওই সময় নির্মাণ কাজের শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা চলে যাওয়ার পর পুনরায় গত দু’দিন চলছে নির্মাণ কাজ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রশাসনের কোনো অনুমতি না নিয়ে জেলা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড প্রধান সড়কের পূর্বপাশে গণপূর্তের খালি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে নোয়াখালী ক্ষুদ্ধ হকার্স সমবায় সমিতি লিমেটেডের সভাপতি একরাম উল্যাহ ডিপটি বলেন, এ কাজ আমি তদারকি করছি সত্য। গতকাল প্রেস ক্লাবে বসে সবাইকে জানিয়েছি। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু ভাইসহ বসে সকল সাংবাদিককে অবহিত করা হয়েছে। এটা নিয়ে আপনি চেয়ারম্যান আর মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন। নোয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব বলেন, দখলকৃত এই জায়গার উপর নোয়াখালী শিশুপার্কের জন্য প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখানে গণপূর্তের ৬৫ শতক জায়গা রয়েছে। গত সোমবার এ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। তারা পুনরায় বন্ধের দিনে কাজ করছে। আমাদেরতো সব সময় সেখানে বসে থাকা সম্ভব না। তবে এ অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, গতকালকে আমরা প্রেস ক্লাবে সবার সঙ্গে বসেছি। এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এটা কোনো জবরদখল নয়। এটা গণপূর্তও দেয়নি, জেলা প্রশাসনও দেয়নি। তারা আপাতত কয়েক মাসের জন্য সেখানে ব্যবসাটা করবে। তারপর তারা আবার তাদের নিজের জায়গায় চলে যাবে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজের শুরুতে সেখানে বাধা দেয়া হয়েছে। কাজ করলে পুনরায় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম পিপিএম (বার) ট্রাফিক পুলিশ বক্স উদ্ধোধনকালে গণমাধ্যমকে জানান, ৪০ হাজার অটোরিকশা শ্রমিক ও মালিকদের দাবির মুখে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয়কে অনুরোধ করে এই জায়গাটিতে যানজট নিরসনে সিএনজি পার্কিংয়ের জন্য সাময়িকভাবে নেয়া হলে ফোরলেন রাস্তার উপর এখন আর অটোরিকশা দাঁড়াতে দেয়া হবে না। মাইজদী শহরটি যানজটমুক্ত রাখতে শুধু পুলিশ নয়, জনপ্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। দুঃখের বিষয় একটি অসাধু চক্র জায়গাটি রাতের আঁধারে দখল প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালালে পুলিশ তাদের সহযোগিতা করবে। এ ভূমি দখলকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে চাউর হয়েছে। সিএনজি শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।