শরীর ও মন
টাক মাথায় চুল প্রতিস্থাপনে যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন
অধ্যাপক ডা. এসএম বখতিয়ার কামাল
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবারমাথায় টাক হওয়ার পেছনে যে কারণগুলোকে সাধারণত মনে করা হয়-
*জেনেটিক বা পারিবারিক ইতিহাস;
*অনুপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস;
*মানসিক চাপ;
*দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা;
*হরমোনের ভারসাম্যহীনতা;
*ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কাদের জন্য চুল প্রতিস্থাপন প্রযোজ্য
*যেসব পুরুষদের পুরুষ প্যাটার্ন টাক আছে।
*যেসব নারীদের অতিরিক্ত চুলপড়া বা চুল পাতলা হওয়ার সমস্যা রয়েছে।
*মাথার ত্বকে আঘাতের কারণে চুল পড়ে গেছে এমন ব্যক্তিরা।
*যারা স্থায়ী টাকের অধিকারী।
*যারা চুল না থাকার কারণে ভীষণ মানসিক টেনশনে আছেন।
*যারা বাজার থেকে কিনা চুল ঘামের মাধ্যমে লাগিয়ে ত্বকে ইনফেকশন করে ফেলেছেন।
চুল প্রতিস্থাপন কারা করতে পারবেন না
*দীর্ঘমেয়াদি ওষুধের কারণের চুল পড়ে গেছে বা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন।
*যে মহিলাদের চুলপড়ার ধরনে রয়েছে যা পুরো মাথা বা মাথার ত্বকে বিস্তৃত।
*ট্রান্সপ্ল্যান্ট পদ্ধতির জন্য যাদের মাথার পেছনের সাইডে বা অন্য জায়গায় পর্যাপ্ত চুল নাই।
*আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরে মাথার ত্বকে পুরু ফাইব্রাস কেলয়ডের দাগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের।
চুল প্রতিস্থাপনের পূর্বে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়
*হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন রোগীর প্রত্যাশা এবং পছন্দ নিয়ে আলোচনা করবেন, তাদের সর্বোত্তম পরামর্শ দেবেন।
*ফলিসকপি পদ্ধতির আগে চুলের ঘনত্ব অ্যাক্সেস করতে এবং প্রতিস্থাপনের পরে পদ্ধতির ফলাফল জানার জন্য করা হয়।
*চুল প্রতিস্থাপনের ফলাফল উন্নত করার পদ্ধতির আগে রোগীদের টপিক্যাল মিনোক্সিডিল এবং ভিটামিন বা পিআরপি থেরাপি দেয়া যেতে পারে।
*ট্রান্সপ্ল্যান্ট ব্যর্থতা রোধ করতে অ্যালকোহল এবং ধূমপান বন্ধ করতে হবে।
*মাথার ত্বক জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।
*মাথার যে অংশে চুল প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াটি করা হবে সেটিকে অসাড় করার জন্য স্থানীয় অ্যানেস্থেসিয়া দেয়া হয়।
চুল প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিসমূহ
১) ফলিকুলার ইউনিট ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন (ঋটঞ): এই পদ্ধতিতে, সার্জন মাথার পেছন থেকে চুলসহ মাথার ত্বকের একটি ফালা কেটে ফেলেন বা কেটে নিয়ে আসেন। সার্জন মাথার ত্বকের এই সরানো অংশটিকে ছোট অংশটিকে টাক স্থানে প্রতিস্থাপন করে দেন।
২) ফলিকুলার ইউনিট এক্সট্রাকশন (ঋটঊ): এই পদ্ধতিতে মাথার পেছন থেকে চুলের ফলিকলগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে তুলে নিয়ে আসা হয় এবং পরে চুল প্রতিস্থাপনের জায়গায় চুলগুলো স্থাপন করা হয়। এক সেশনে শত শত থেকে হাজার হাজার চুল প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিস্থাপিত চুলগুলো নিরাময়ের জন্য ও রক্ত শোষণের জন্য কিছুদিনের জন্য মাথার ত্বকে ব্যান্ডেজ স্থাপন করা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ৪-৬ ঘণ্টা সময় নিতে পারে। অস্ত্রোপচারের বা চুল প্রতিস্থাপনের ১০ দিন পরে সেলাইগুলো সরানো হয় বা ব্যান্ডেজ খোলা হয়।
প্রতিস্থাপনের পর করণীয়
*চুল প্রতিস্থাপন করার পর চিকিৎসকরা কিছু ওষুধ দিয়ে থাকেন। মূলত ক্ষত শুকানো ও ব্যথা লাঘব করার জন্য।
*চুলের পুনঃবৃদ্ধি করতে ডাক্তাররা মিনোক্সিডিল, ফিনাস্টারাইড বা কিছুদিন পর থেকে পিআরপি থেরাপি দিয়ে থাকেন।
*আধা ভেদযোগ্য ড্রেসিং স্থাপন করা হয়, যা রক্ত তরল সহজে নিঃসরণ হয়, যা প্রতিদিন পরিবর্তন করতে হবে।
*প্রতিস্থাপিত স্থান অবশ্যই রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে এবং নিয়মিত শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
*চুল প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচারের ৩-৪ দিন পরে সাধারণত স্বাভাবিক কাজ করা যায়।
লেখক: হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট অ্যান্ড ডার্মাটো সার্জন চিফ কনসালট্যান্ট, কামাল হেয়ার অ্যান্ড স্কিন সেন্টার।
চেম্বার: বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড (২য় তলা) গ্রিন রোড, ফার্মগেট ঢাকা। যোগাযোগ:০১৭১১৪৪০৫৫৮
।
মন্তব্য করুন
শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন
শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত
৯৫ ভাগ কিশোরীকে টিকা দেয়ার টার্গেট/ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা পেল ১১ শিক্ষার্থী

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]