প্রথম পাতা
ভিডিও পলিটিক্স, সেকাল-একাল
নিজস্ব প্রতিনিধি
৩১ জুলাই ২০২৩, সোমবারশনিবার। এমনিতেই ছুটির দিন। আবার পবিত্র আশুরাও। আগের দিন পল্টনের জনসমুদ্রে ‘ঢাকাগেট’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলা হয়, ঢাকার প্রবেশ পথে ১১টা থেকে ৪টা- অবস্থান নিবেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। উত্তেজনা তৈরি হতে সময় লাগেনি। কিছু পর যুবলীগও ঘোষণা দেয় তারাও অবস্থান নেবে। কিন্তু ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কাউকেই অবস্থানের অনুমতি দেননি। রাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
সকাল হতেই দেখা যায় ভিন্ন দৃশ্যপট। রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রতিনিধিদল হাসপাতালে দেখতে যান আমানউল্লাহ আমানকে। তারা তার জন্য ফলের ঝুড়িও নিয়ে যান। বিএনপি’র এই নেতার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থাও নেয়া হয়। তবে নাটকীয়তার তখনো বাকি ছিল। দিনের শেষ ভাগে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে তার অফিসে পৌঁছে দেয় পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পরই ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বরের দুপুরের খাবার গ্রহণের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদকে বিএনপি’র এই নেতাকে আতিথেয়তা করতে দেখা যায়। এই দুটি ছবি এবং ভিডিও নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই নেটিজেনরা নানা মন্তব্য করতে থাকেন। এক ভিডিও বার্তায় আমান বলেন, নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতে এ নাটক সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দল, দেশ এবং গণতন্ত্রের প্রতি গয়েশ্বর ও আমানের কমিটমেন্ট নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। গতকাল গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খাওয়ানোর ছবি ছড়িয়ে দেয়া নিম্ন রুচির পরিচায়ক। তিনি এ মন্তব্যও করেন যে, সরকারের কাছে এত টাকা নেই যে, গয়েশ্বরকে কিনতে পারে।
এইসব ছবি এবং ভিডিও নিয়ে এরইমধ্যে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। কেন ছড়ানো হলো এ ধরনের ভিডিও? অনেকে মনে করেন, এটা বিএনপি’র মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি ও সংশয় তৈরির কৌশল। বিশেষ করে কর্মীরা যেন নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। মনে রাখা প্রয়োজন, এখানে দুটি ছবি রয়েছে। গয়েশ্বরকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর ছবি। আরেকটি ডিবি কার্যালয়ে আপ্যায়নের ছবি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমান উল্লাহ আমানের ছবি ও ভিডিও দেখতে দেখতে অনেক বিশ্লেষক স্মরণ করেছেন, জরুরি জমানার সময় ছড়িয়ে পড়া দুটি ভিডিওর কথা। একটি বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং অন্যটি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের। সে ভিডিওতেও ওবায়দুল কাদেরের সামনে ফল দেখা যায়। আওয়ামী লীগের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাই ওইসব ভিডিওতে নানা মন্তব্য করেন।
ভিডিও পলিটিক্স। রাজনীতির পুরনো একটি অধ্যায়ই নতুন করে সামনে এলো। কেউ কেউ বলছেন, পুরনো কৌশলে নতুন খেলা।