রকমারি
২০০০ বছরের পুরনো তরকারির রেসিপি খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা
মানবজমিন ডিজিটাল
(২ মাস আগে) ২৬ জুলাই ২০২৩, বুধবার, ৪:৩৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১১ পূর্বাহ্ন

তরি-তরকারি ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকা অসম্পূর্ণ। ইতিহাস বলছে, প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ তরকারির ভক্ত। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত একটি গ্রাইন্ডিং স্ল্যাব এবং অন্যান্য পাথরের সরঞ্জামগুলিতে মশলার চিহ্ন পাওয়া গেছে যা থেকে বোঝা যায়, এখানকার মানুষজন ২০০০ বছর আগে থেকেই মশলা দিয়ে তরকারি বানাতে জানতেন।
২০১৮ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামের Oc Eo প্রত্নতাত্ত্বিক কমপ্লেক্সে ভূপৃষ্ঠের ২ মিটার (৬.৫ ফুট) নীচ থেকে বেলেপাথরের স্ল্যাবটি উদ্ধার করা হয়েছিল। স্ল্যাবে পাওয়া পদার্থের একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে সাইটটি একসময় ফানান নামে পরিচিত একটি প্রাচীন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় রাজ্যের বিদেশী বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল।
ক্যানবেরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব ও প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগের একজন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তথা অধ্যয়নের লেখক ড. সিয়াও-চুন হুং বলছেন, ''তরকারি প্রস্তুত করার জন্য শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরণের মশলাই নয় বরং মশলা পেষার সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো। ”
লক্ষণীয়ভাবে, প্রায় ২,০০০ বছর আগে ভারতের বাইরে বসবাসকারী ব্যক্তিরাও তাদের পরিশ্রম দিয়ে তরকারির স্বাদ আনার চেষ্টা করতেন। হাং এবং গবেষকদের একটি দল স্টার্চ দানা হিসাবে পরিচিত মাইক্রোস্কোপিক অবশেষ বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের বিশ্লেষণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের বেশ কিছু রন্ধনসম্পর্কীয় মশলা সম্পর্কে জানা গেছে : হলুদ, আদা, বালি আদা, লবঙ্গ, জায়ফল এবং দারুচিনি।
গবেষকরা যে উপাদানগুলি শনাক্ত করেছেন তা আজ ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য জায়গায় খাওয়া তরকারিগুলির অনুরূপ। ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটির সাউদার্ন ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের প্রত্নতত্ত্ববিদ তথা অধ্যয়নের সহলেখক ডক্টর ট্রুং কিয়েন গুয়েনের মতে, “আজকাল, সুপারমার্কেটে কারি পাউডারের ব্যাপক প্রাপ্যতার কারণে ভিয়েতনামে তরকারি তৈরি করা বেশিরভাগ পরিবারের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। তবে এটি লক্ষ্য করা আকর্ষণীয় যে, বর্তমানে ব্যবহৃত কারি রেসিপিটির সঙ্গে প্রাচীন Oc Eo সাইট থেকে পাওয়া তরকারির রেসিপির মিল রয়েছে।''
গবেষক দলটি সাইটটিতে পাওয়া উপাদানগুলির উপর ভিত্তি করে ২,০০০ বছরের পুরনো তরকারিটি পুনরায় তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিল। হুং বলেন, প্রায় ৪০০০ বছর আগে ভারতের মানুষ সম্ভবত তরকারি রান্না করতে জানতো।
হাং বলেছিলেন, এই স্থানে কে তরকারি তৈরি করেছে তা স্পষ্ট নয়, তবে তারা সম্ভবত ভারত থেকে আসা অভিবাসী বা দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ভিয়েতনামের স্থানীয় বাসিন্দা। ৭৬ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৩১ সেন্টিমিটার চওড়া বেলেপাথরগুলি স্টিল্ট ঘরগুলির অবশিষ্টাংশের সাথে পাওয়া গেছে। কম্বোডিয়ার একটি সমাধিস্থান থেকে Oc Eo-এর সাথে যুক্ত একটি প্রাচীন খাল প্রমাণ করে দক্ষিণ এশিয়া থেকে এই পথ ধরে মানুষ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যাতায়াত করতো। নতুন গবেষণায় উপসংহারে বলা হয়েছে, কারি রেসিপিগুলি দক্ষিণ এশিয়ার ব্যবসায়ী এবং অভিবাসীদের সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এসেছিল কারণ প্রথম সহস্রাব্দের প্রথম শতাব্দীতে অঞ্চলগুলির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেইসময়ে বিশ্বব্যাপী মশলা বাণিজ্যর প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছিলো। খাদ্য সংস্কৃতি মানব ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ। শুক্রবার সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র : সিএনএন
মন্তব্য করুন
রকমারি থেকে আরও পড়ুন
রকমারি সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]