ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রকমারি

ডাইনোসরদেরও আগে পৃথিবীর বুকে এসেছিলো হাঙর

মানবজমিন ডিজিটাল

(১ মাস আগে) ২৫ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবার, ৫:০৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন

mzamin

এই গ্রীষ্মে মানুষের ওপর হাঙরের একাধিক আক্রমণের খবর সামনে এসেছে। হাঙরদের জন্য উদযাপিত সপ্তাহটি এই বছর ২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ডিসকভারি চ্যানেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর লক্ষ্য সমুদ্রের স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি এই প্রাচীন সামুদ্রিক শিকারীদের সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করা। হাঙরের ৫০০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। 

মিয়ামির ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কলেজ অফ আর্টস, সায়েন্সেস অ্যান্ড এডুকেশনের অধ্যাপক এবং ডিন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী মাইকেল হেইথাউস বলেছেন- কখনো হাঙরগুলি আকারে ছোট হয়। আবার কখনো এগুলি স্কুল বাসের মতো লম্বা হতে পারে । হাঙর প্রথিবীর বুকে কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে আছে এবং তারা নানা বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। নেচার জার্নালে প্রকাশিত একটি ২০২১-এর সমীক্ষা অনুসারে, মূলত অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে হাঙর এবং রে ফিশের সংখ্যা ১৯৭০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৭১.১% কমেছে।

হাঙর শত শত বছর বেঁচে থাকতে পারে

অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় হাঙরদের আয়ু সবচেয়ে বেশি। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ২০১৬  সালের সমীক্ষা অনুসারে, গ্রীনল্যান্ড হাঙর পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী মেরুদণ্ডী প্রাণী। রেডিওকার্বন ডেটিং ব্যবহার করে গবেষকরা দেখেছেন, উত্তর আটলান্টিকের প্রজাতিগুলি গড়ে কমপক্ষে ২৭২ বছর বেঁচে থাকে এবং ১৫০ বছর বয়সের আগে পর্যন্ত পরিপক্কতায় পৌঁছায় না। গ্রিনল্যান্ডের হাঙর অন্তত ৪০০ বছর বেঁচে থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা ।

হাঙরেরা  গাছ এবং ডাইনোসরদের থেকেও পুরানো

প্রাচীনতম হাঙরদের জীবাশ্মটি ৪৫০ মিলিয়ন বছর আগের, যার মানে এই প্রাণীগুলি গাছের প্রায় ৯০ মিলিয়ন বছর আগে এবং ডাইনোসরের ১৯০ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে আসে।

বিজ্ঞাপন
ফিল্ড স্কুলের পরিচালক এবং মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজেনস্টিল স্কুল অফ মেরিন, অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যান্ড আর্থ সায়েন্সের প্রভাষক ক্যাথরিন ম্যাকডোনাল্ড বলেছেন, প্যাঙ্গিয়া (প্রায় ২৫০ মিলিয়ন বছর আগে প্যাঙ্গিয়া নামে একটি একক বিশাল মহাদেশ ছিল)  ভেঙে যাওয়ার আগে থেকেই হাঙরেরা  ছিল। হাঙর পাঁচটি গণবিলুপ্তি থেকে বেঁচে গেছে, যার মধ্যে একটি সমস্ত সামুদ্রিক জীবনের প্রায় ৯৬% নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলো।

হাঙর আমাদের পরিবেশের জন্য সহায়ক হতে পারে

টাইগার হাঙর, অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান শিকারী প্রাণী যা বাস্তুতন্ত্রকে চরম জলবায়ুর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহায্য করতে পারে। হাঙরের উপস্থিতির জন্য সবুজ কচ্ছপ, সামুদ্রিক পাখি এবং স্টিং রে গুলি অগভীর জল এড়িয়ে চলে। ফলস্বরূপ, সি-গ্রাস বা সাগরের  ঘাস ঝোপের মতো বেড়ে উঠতে সক্ষম হয় এবং মাছ, চিংড়ি এবং কাঁকড়ার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে ওঠে। সি-গ্রাস বায়ুমণ্ডলে থাকা কার্বন শোষণ করে। যখন সি-গ্রাস মারা যায়, তখন মৃত উপাদান সমুদ্রের তলদেশে পলিতে চাপা পড়ে এবং কার্বন সঞ্চালন থেকে মুক্ত হয়ে যায়। গবেষকরা বর্তমানে নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন যে অন্যান্য হাঙর  প্রজাতি এই ঘটনাটিতে ভূমিকা পালন করে কিনা এবং এটি প্রবাল প্রাচীরের মতো সমুদ্রের অন্যান্য জায়গায় ঘটে কিনা। হেইথাউস বলেন, টাইগার হাঙর বাস্তুতন্ত্রের গঠনে সাহায্য করার জন্য একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

হাঙরের গর্ভধারণ ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে

হাঙরের বংশবৃদ্ধির ধরন পরিবর্তিত হয়। গড়ে, হাঙরগুলির গর্ভাবস্থা ১১ বা ১২ মাস স্থায়ী হয়। তবে কিছু হাঙর যেমন ফ্রিলড হাঙ্গর এবং বাস্কিং হাঙর তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে গর্ভবতী হতে পারে। ফ্লোরিডার ব্রাডেনটনে অবস্থিত হাঙর বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেসমিন গ্রাহাম বলেছেন, মাকো এবং বুল শার্ক সরাসরি নতুন হাঙরের জন্ম দেয়। আবার ক্যাট হাঙর ডিম পাড়ে। কিছু হাঙর যৌন পরিপক্কতা অর্জন করতে ১০ থেকে ১২ বছর সময় নেয়।

হাঙরদের স্বর শোনা যায় না

হাঙর  প্রাথমিকভাবে নীরব প্রাণী, কারণ তাদের শব্দ উৎপাদনের অঙ্গ নেই। শারীরিক ভাষা বোঝাতে হাঙররা তাদের চোয়ালগুলিকে নাড়াচাড়া করে যোগাযোগের  মাধ্যম হিসেবে ।

হাঙর বৈদ্যুতিক প্রভাব বুঝতে পারে

হাঙরের একটি ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে - তারা ন্যানোস্কোপিক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্রোত তুলতে পারে। এই অতিরিক্ত ইন্দ্রিয় তাদের সমুদ্রে নেভিগেট করতে এবং শিকার এবং সঙ্গীকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে । ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্রোতের মাধ্যমে তারা লুকানো শিকারকে সহজেই খুঁজে পায়। এই সূক্ষ্ম  বুদ্ধিমত্তার সাথে, হাঙররা অসুস্থ এবং দুর্বল প্রাণীদের শিকার করে, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সূত্র : সিএনএন

রকমারি থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

রকমারি সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status