দেশ বিদেশ
ট্র্যাভেল পাস পাচ্ছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কূটনৈতিক রিপোর্টার
৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতের আসাম থেকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী দেশে ফিরতে পারবেন। বাংলাদেশি পাসপোর্ট সঙ্গে না থাকায় সীমান্ত পাড়ি দেয়ার জন্য তাকে অস্থায়ী ভ্রমণ কার্ড ট্র্যাভেল পাস দেয়া হবে। সালাহউদ্দিনের অনুকূলে ট্র্যাভেল পাস ইস্যু করতে ইতিমধ্যে গৌহাটির বাংলাদেশ মিশনকে সরকারের তরফে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (৮ই জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলি সাবরীন দেশের বাইরে অবস্থান করায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম ব্রিফ করেন। বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেয়ে আমাদের গৌহাটি মিশনকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে ট্র্যাভেল পাস ইস্যু করাসহ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। সালাহউদ্দিন এখন বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন জানিয়ে সেগুনবাগিচার মুখপাত্র বলেন, তিনি কবে ফিরবেন তা তার নিজের ওপর নির্ভর করছে। এর আগে দেশে ফিরতে ট্র্যাভেল পাস চান সালাহউদ্দিন।
গৌহাটি মিশন সেই আবেদন ঢাকায় পাঠায় সরকারের মতামতের জন্য। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১১ই মে থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে আছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। আর তার আগের দুই মাস দেশের ভেতরেই নিখোঁজ ছিলেন। ২০১৫ সালের মার্চে যখন সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হন, ওই সময়ে বিএনপি পুরোদমে আন্দোলনে। তখন দলের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছিলেন সালাহউদ্দিন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে অজ্ঞাত জায়গা থেকে প্রতিদিন দলের কর্মসূচি ও নেতাকর্মীদের কাছে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠানোর কাজটি করতেন তিনি। দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ, ২০১৫ সালের ১০ই মার্চ গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি ফ্ল্যাট থেকে র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর দুই মাস পর ভারতের আসাম রাজ্যে পাওয়া যায় তাকে। উদ্ধারের পর সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশটিতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর মামলার কার্যক্রম চলার পর ২০১৮ সালের ১৩ই আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়। ওই বছরের ২৬শে অক্টোবর আদালতের রায়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় নির্দোষ হিসেবে রায় পান সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে আবার সরকারপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। আদালত পরে তাকে বেকসুর খালাস দেয়। ২৮শে ফেব্রুয়ারি ভারতের শিলংয়ের জজ কোর্টের রায়ে তিনি বেকসুর খালাস পান বলে গণমাধ্যমকে নিজেই জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।
‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে নয়াদিল্লি: এদিকে দিল্লির নতুন সংসদ ভবনে স্থাপিত ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের ম্যুরাল বিষয়ে ভারতের কাছে জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। এর উত্তরে ভারত জানিয়েছে, ওই ম্যুরালটিতে সম্রাট অশোকের রাজত্বকালকে দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ভারতের নতুন সংসদ ভবনে একটি ম্যুরাল স্থাপিত হয়েছে, যেখানে একটি মানচিত্র রয়েছে বলে আমরা অবহিত হয়েছি। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রাথমিক মন্তব্য করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এর ধারাবাহিকতায় আমরা ভারতের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি সেটি হলো- সম্রাট অশোকের রাজ্যের ব্যাপ্তি এবং সে সময় সম্রাট অশোকের নেতৃত্বে সংঘটিত জবাবদিহিমূলক এবং মানুষের উন্নয়নকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রতীকী হিসেবে আলোচিত ম্যুরালটি স্থাপতি হয়েছে। মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানান, ওই ম্যুরাল স্থাপনের মূল ভাবনা ছিল ঐতিহাসিক প্রাচীন ভারত বিশেষত সম্রাট অশোকের রাজত্বকে ফুটিয়ে তোলা। আমরা এই মর্মে অবহিত হয়েছি যে, ম্যুরালটিতে সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্য খচিত হয়েছে, যা সংবাদ মাধ্যমে ‘অখণ্ড ভারত’ নামে প্রচার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, অখণ্ড ভারত ম্যুরালে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলকে দেখানো হয়েছে।