শরীর ও মন
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে
ডা. মো. বখতিয়ার
৪ জুন ২০২৩, রবিবার
হিট স্ট্রোক কী?
হিট স্ট্রোক সাধারণত প্রচণ্ড রোদে এক ধরনের অসুস্থতা, যেটি অধিক গরমের কারণে হয়ে থাকে। তাপদাহের কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাপমাত্রা (৩৫-৪০ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং বাতাসের আর্দ্রতার অনুপস্থিতিতে কোনো ব্যক্তি দীর্ঘ সময় তীব্র রোদে অবস্থান করলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাপজনিত তারতম্যের কারণে কোনো ব্যক্তির শরীরের স্বাভাবিক তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর বেশি হলে হিট স্ট্রোক হয়।
লক্ষণসমূহ
. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া;
. মাংসপেশীতে ব্যথা;
. অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভব করা আবার ঠোঁট, মুখ, জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া;
. রক্তচাপ কমে যায় ও নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ হতে থাকা;
. খিঁচুনি, মাথা ঘোরানো, চোখে ঝাপসা দেখা;
. মাথাব্যথা অনুভূত হওয়া;
. বমি বমি ভাব লাগা;
. অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
প্রাথমিক করণীয়
হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। রোগীকে অপেক্ষাকৃত শীতল কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। প্রচুর পানি বা খাওয়ার স্যালাইন পান করাতে হবে। যথাসম্ভব শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত হাসপাতালে বা ক্লিনিকে নিতে হবে।
প্রতিকার
হিট স্ট্রোকে অনেক সময় বড় ধরনের ক্ষতি, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গরমের এই সময়টায় তাই সাবধানে থাকতে হবে।
১. যারা জীবনের তাগিদে বাইরে রোদে কাজ করে তাদের হিট স্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সময় স্যালাইন, ফলের জুস, লেবুর শরবত, মাঠা বা ডাবের পানি খুবই উপকারী।
২. গরমের সময়ে অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে।
৩. ফল ও সবজি খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪. হালকা রঙের ঢিলেঢালা ও সুতির পোশাক পরার চেষ্টা করুন। বাইরে বের হলে ছাতা ও মাথায় টুপি ব্যবহার করুন।
৫. চা ও কফি পান থেকে বিরত থাকুন, এতে শরীরের তাপ বৃদ্ধি পায়। ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।