বাংলারজমিন
মোশা বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল রূপগঞ্জবাসী
স্টাফ রিপোর্টার
২ জুন ২০২৩, শুক্রবারনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মোশা বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ওরফে মোশাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, চাঁদাবাজি, মাদক, প্রতারণাসহ অন্তত ৪০ মামলার আসামি এই মোশা। র্যাব জানায়, মোশা দেশ থেকে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন। তিনি অবৈধভাবে ভারতে পালানোর পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে সহযোগী দেলোয়ারকে নিয়ে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে আত্মগোপন করেন। তবে দেশ ত্যাগ করার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ২৫শে মে রূপগঞ্জে স্থানীয় মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলাসহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে ২০-২৫ জন গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় দু’টি মামলা হয়। এ ঘটনায় র্যাব জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায়, র্যাব-১১ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে বুধবার রাতে ভূরুঙ্গামারী থেকে মোশারফ হোসেন ও তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৫শে মে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সৃষ্টি হলে মোশা বাহিনীর ৭০-৮০ জন এলাকায় শোডাউন, লোকজনকে মারধর ও গুলিবর্ষণ করে। স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হলে মোশা বাহিনীর সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে মোশা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চড়াও হয়ে অতর্কিত গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৫-৬ জন পুলিশ সদস্যকে আহত করে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশারফকে ছিনিয়ে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর মোশারফ কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী এলাকায় আত্মগোপনে চলে যান। তার ভারতে পালানোর পরিকল্পনা ছিল। মোশারফ সম্পর্কে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মোশারফ স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সে ‘মোশা বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪০টির অধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন। ২০১৯ সালে র্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই কাউন্সিলর সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ প্রসঙ্গে র্যাবের অবস্থান জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, সাবেক দুই কাউন্সিলর যে অভিযোগ করেছেন তা সংক্ষুব্ধ হয়ে যে কেউ করতে পারেন। তবে আমাদের যে ক্যাসিনো অভিযান তা দেশবাসী দেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে একটি শ্রেণি দুর্নীতির মাধ্যমে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করছে এমন অভিযোগে আমাদের অভিযান (ক্যাসিনো-বিরোধী) ছিল। শুধু উনাদের দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযান না, আমরা সে সময় আরও অভিযান করেছি। কিন্তু কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। দুই কাউন্সিলের অভিযোগ প্রসঙ্গে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৯ সালে আমরা অভিযান চালিয়েছি। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে এতদিনে তারা র্যাব সদর দপ্তর, আদালত কিংবা পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ জানাতে পারতেন। কিন্তু এতদিন পর তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করছেন। এটা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হিসেবে করতে পারেন।