প্রথম পাতা
ঋণ করে ঘি খাওয়ার জন্য এত বড় বাজেট
স্টাফ রিপোর্টার
২ জুন ২০২৩, শুক্রবারপ্রস্তাবিত বাজেটে দেশের মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বাজেট পেশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বড় বাজেট দিয়েছে সরকার। ঋণ করে ঘি খাওয়ার জন্য এত বড় বাজেট দেয়া হয়েছে। যার বোঝা বাংলাদেশের জনগণকে বইতে হবে।
গতকাল বিকালে রাজধানীর বনানীর নিজ বাড়িতে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বাজেটে বড় বড় অঙ্ক দিচ্ছে আর বাংলাদেশের মানুষকে বড় বড় অবকাঠামোর কথা বলছে। বড় অবকাঠামোর মধ্যে বড় চুরি-ডাকাতি ছাড়া আমরা কিছু দেখছি না। বাজেট হচ্ছে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন। রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন। আজকে যেখানে একটি অবৈধ দখলদার সরকার বসে আছে, তাতে তো রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে। তাতে মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। তিনি বলেন, বড় অবকাঠামোর মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে। সে জন্য আজকে ডলার সংকট; ব্যাংকে টাকা নেই, শেয়ারবাজার ধ্বংস হয়ে গেছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতা আমরা গত ৩০-৪০ বছরে সৃষ্টি করেছি, সেটা ধ্বংস করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সামষ্টিক অর্থনীতি ভেঙে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, একটি দলীয় চিন্তার ভিত্তিতে পৃষ্ঠপোষকতার-লুটপাটের অর্থনৈতিক মডেল সৃষ্টি করে বাংলাদেশের গত ৩০ বছরের যে কষ্টের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনীতি যেখানে এসে দাঁড়িয়ে ছিল তারা সেটা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। যে জন্য তারা আজকে আইএমএফ-বিশ^ব্যাংকের দ্বারে যাচ্ছে। সবার দ্বারে যাচ্ছে, কোনো ব্যাংক বাকি নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ছাপাতে হচ্ছে এখানে। টাকা ছাপিয়েও কুলাতে পারছে না।
এখান থেকে বের হতে হলে এই অবৈধ দখলদার সরকার বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, দেশের বাইরে ও ভেতর থেকে তারা যে ঋণ নিচ্ছে, এটা শোধ করতে হবে বাংলাদেশের মানুষকে। ভাড়া, চাঁদা আর কমিশন ভিত্তিক অর্থনীতি করছে সরকার। যার দায়ভার জনগণকে দিতে হচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটে পরিণত করেছে। আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে সরকার। গত ৭ বছরে ৫২ শতাংশ ঋণ বেড়েছে, যার দায় বইতে হবে আগামী প্রজন্মকে। তিনি বলেন, ৪২ শতাংশ মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে আছে, নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে। ঢাকায় নতুন দরিদ্র হয়েছে ৫২ শতাংশ। আওয়ামী লীগের অর্থনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা লাভবান হবে, জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আওয়ামী লীগের লুটপাটের এ বাজেটে অর্থনীতি বিপাকে পড়েছে, দেশের জনগণ বিপদে পড়ছে। তিনি বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের ওপর করের চাপ বাড়বে। অনেক মানুষ এক বেলা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। তাদের স্বাস্থ্যসেবা সীমিত করেছে। যারা ধনী হচ্ছে তাদের কর দিতে হচ্ছে না। আমীর খসরু বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে গেলে সরকারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ কমাতে হবে, টাকার মান বাড়াতে হবে ডলারের বিপরীতে, লুটপাট বন্ধ করতে হবে। না হলে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না। জিনিসপত্রের দাম কমানো সম্ভব হবে না।