দেশ বিদেশ
হাঙ্গার প্রজেক্টে বদিউল আলম মজুমদারের তিন দশক পূর্তি উদ্যাপিত
স্টাফ রিপোর্টার
১ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবারনাগরিক সমাজের অন্যতম সরব কণ্ঠ সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সঙ্গে নিজের যুক্ত হওয়ার তিন দশক পূর্ণ করলেন। এ উপলক্ষে গতকাল তার সহকর্মী ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের স্বেচ্ছাব্রতীদের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ওয়াইডব্লিউসিএ অব বাংলাদেশের অডিটোরিয়ামে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রজেক্টটির বর্তমান ও সাবেক কর্মী ও স্বেচ্ছাব্রতীরা ছাড়াও অতিথি হিসেবে সাবেক সচিব মাহবুবুল আলম, শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের সভাপতি মুনিরা খান, সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত হয়ে ড. বদিউল আলম মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানান। সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, বদিউল আলম মজুমদার আমেরিকা থেকে এসে গ্রামে চলে গেলেন। গ্রামের মানুষদের সংগঠিত করে তাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করেন।
নাগরিক হিসেবে কিছু অধিকার ও দায়িত্ব আছে, এটি আমি তার কাছ থেকেই শিখেছি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, গণতন্ত্রের সংকট, ভোটাধিকারের সংকট এসব নিয়ে কাজ করা অনেক বড় বিষয়। মানুষকে কিছু জিনিসপত্র বা টাকা দিয়ে সাহায্য করা আর এসব নিয়ে কথা বলা ভিন্ন বিষয়। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য কখনো নেপথ্যে থেকে কখনো প্রকাশ্য এসে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, এমনও সময় গেছে যেসব কথা রাজনৈতিক দলগুলোর বলা দরকার, সে কথা বদিউল আলম মজুমদার এককভাবে বলে গেছেন। এসব করতে গিয়ে নিজের ও সংগঠনের জন্য অনেক ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি।
অনেকগুলো কাজ নিজে দায়িত্ব নিয়ে করছেন। অন্যদেরও উৎসাহিত করে যাচ্ছেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের পরিচালক (কর্মসূচি) নাছিমা আক্তার জলি বলেন, বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে আমি অনেক বছর ধরে কাজ করছি। তিনি আমাদের সবসময় উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। ড. বদিউল আলম মজুমদারের স্ত্রী তাজিমা হোসেন মজুমদার বলেন, কখনো চিন্তা করিনি বাংলাদেশে ত্রিশ বছর থাকবো। ত্রিশ বছরের পথচলা মসৃণ ছিল না। বদিউলের একাগ্রতা ও নিষ্ঠার কারণে এই পথচলা সম্ভব হয়েছে। ড. বদিউল আলম মজুমদার নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ত্রিশ বছরের দীর্ঘ সময়ে আমার জীবন সমৃদ্ধ হয়েছে। আমেরিকাতে আমি অনেক শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। বাংলাদেশে এসে ত্রিশ বছরে নতুন শিক্ষক পেয়েছি। আমার সবচেয়ে বড় শিক্ষক হলেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা লাখ লাখ মানুষের জীবন স্পর্শ করেছি, এটা কয়জনের ভাগ্যে জোটে? সবার উৎসাহ ও প্রেরণা আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশে উন্নয়নের বহু প্রচেষ্টা হয়েছে। একটি প্রচেষ্টা হলো মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করা আরেকটি হলো সেবা প্রদান করা। আমরা সেখান থেকে বের হয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে তাদেরকে উন্নয়নের কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমরা উন্নয়নকে আন্দোলনে পরিণত করার চেষ্টা করেছি। আমরা তরুণদের সংগঠিত করেছি। নারীদের ক্ষমতায়িত করার জন্য কাজ করেছি। এরপর আমাদের কাজের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদকে যুক্ত করি। এরপর আমরা সম্প্রীতি নিয়ে কাজ শুরু করি, কারণ আমাদের উপলব্ধি হয় উন্নয়নের অপর নাম সম্প্রীতি। আমরা বিভিন্ন সময় যে কথাগুলো বলেছি তার গুরুত্ব এখন অনেকে উপলব্ধি করতে পারছেন।