প্রথম পাতা
টুকুর ৯, আমানের ১৩ বছরের সাজা বহাল
স্টাফ রিপোর্টার
৩১ মে ২০২৩, বুধবার
অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, দুদকের অপর মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদের ৯ বছরের কারাদণ্ড হাইকোর্ট বহাল রেখেছেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টে আমান দম্পতির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হুদা। ইকবাল হাসানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. সাইফুল্লাহ মামুন। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আমান দম্পতির আইনজীবী নাজমুল হুদা।
রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাজনীতিবিদরা জনগণ ও দেশের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার লক্ষ্যে রাজনীতিতে জড়িত হন এবং রাজনীতি জনগণ ও দেশের কল্যাণে এক ধরনের মহান ত্যাগ-নিষ্ঠার কাজ। তাই রাজনীতিবিদরা জনগণের সম্পদের রক্ষক হবেন, তারা ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন না। আদালত বলেন, বৈধ ব্যবসা এবং অন্যান্য পেশার আশ্রয় নিয়ে অর্থ-সম্পত্তি অর্জনের অনেক উপায় রয়েছে। তবে অর্থ উপার্জনের জন্য রাজনীতি কোনো পেশার আওতায় আসতে পারে না।
নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের মার্চে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করেন। কমিশনের উপ-পরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঞা ওই বছর ২৮শে জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন। ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ই জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১শে জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন টুকু। পরে ওই আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে গত ১৪ই মে দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানি শেষ হয়।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ই মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১শে জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ই আগস্ট হাইকোর্ট সেই আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬শে মে আপিল বিভাগ সে রায় বাতিল করে হাইকোর্টকে মামলাটির আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।