ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

এনআইডি থাকলে কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার দাবি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৮ মে ২০২৩, রবিবার

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে, তাদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, যার এনআইডি থাকবে তাকেই বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আর বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাল হওয়ার কারণে এটি সহজেই করা সম্ভব। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত-এর আমলে এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কঠিন আমলাতন্ত্রের কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। এটি দ্রুত সময়ে করলে দেশে কর আহরণের হার বাড়বে। শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইআরএফ’র উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে করের হার অনেক বেশি, আর এই কারণে কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাও বেশি। ট্যাক্স একটা সহনীয় আওতায় থাকলে কর আহরণের পরিমাণ বাড়বে। 

আবার কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাও কমে আসবে।

বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, দেশে কর ফাঁকি দেয়ার অন্যতম কারণ করের হার বেশি। পাশাপাশি যে কর দেয় তাকেই বেশি অত্যাচার করে ছাড়ে। প্রয়োজনে এই বাজেটেই করতে পারে। ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশে করদাতার সংখ্যা অনেক কম। এটা মাত্র সাড়ে সাত থেকে ৮ শতাংশ। ১৭ কোটি লোকের দেশে মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ লোক সরাসরি কর দেয়। অথচ আমেরিকাতে যারই সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড আছে, তাকেই কর দিতে হয়, রিটার্ন দাখিল করতে হয়। তবে বছরে তিন হাজারের ডলারের নিচে বার্ষিক আয় হলে কর দিতে হয় না। তাকে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। তিন হাজার ডলারের বেশি আয় হলেই সেটি যদি গিফটও হয় তাকে কর দিতে হয়। ফলে কর ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শুধু টিআইএন’র ভিত্তিতে কর দেন। এ বিষয়ে আমি অর্থমন্ত্রীকে বলেছিলাম কোম্পানি এবং বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানে টিআইএন’র মাধ্যমে কর দেয়ার ব্যবস্থা রেখে ব্যক্তিশ্রেণির কর এনআইডি’র মাধ্যমে আদায় করা হোক। এই ক্ষেত্রে যার এনআইডি নম্বর আছে, তিনিই অবশ্যই রিটার্ন দাখিল করবেন। এটি সম্ভব। এতে করে করের আওতা বাড়বে। 

তখন আর করের হার সাড়ে সাত শতাংশ থাকবে না। এটি ২০ শতাংশের উপরে উঠবে। তখন মোট রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা যায় কিনা তা যাচাই বাছাই করতে আমলাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু আমাদের আমলাতন্ত্র এমন কঠিন এখনো করা হয়নি। এটি আমাদের দাবি, কারণ আমাদের ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, সিলেট শহর থেকে আমার নানাবাড়ি (জগন্নাথপুরে সৈয়দপুর গ্রাম) গ্রামে যেতে ২০ থেকে ২৪ ঘণ্টা লাগতো কেবল নৌকায়। এ কারণে আমি নানাবাড়ি অনেক কম যেতাম। কারণ অনেক কষ্ট হতো। ফলে ১৯৭৪ সালের পর আমি ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ৩৮ বছর পর নানাবাড়ি যাই। এই সময় সিলেট শহর থেকে নানাবাড়িতে গিয়েছি মাত্র ৪৫ মিনিটে। এটিই আজকের বাংলাদেশ, এটিই উন্নয়ন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের একটা মাত্র লক্ষ্য ছিল মানুষের মঙ্গল। 

দেশের মঙ্গল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের জুটিটি অত্যন্ত ভালো জুটি ছিল। শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গল চান, আর অর্থমন্ত্রী কীভাবে মানুষের মঙ্গলটা অর্জন করা যায় সেই প্রক্রিয়াগুলো জানতেন। সেভাবে বাস্তবায়ন করতেন। এই দুই জুটি কঠোর পরিশ্রম করে বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিয়েছেন। সেটা সম্ভব হয়েছে এরকম কৃতী পুরুষ ছিল বলে। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। সৌদিতে স্থায়ী মিশন খোলার বিষয়ে মুহিতের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সময় ২৭টি মিশন করা হয়েছে এবং কেনা হয়েছে। সৌদি আরবে ৩৭ বছর পর শেখ হাসিনার সময়ে মিশন হয়েছে। সব মিলিয়ে নিজেদের মিশন থাকার কারণে সরকারের ৪৭ হাজার ডলারের মতো সেভ হচ্ছে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, মুহিত স্যার ছিলেন একজন বড় মনের অর্থনীতিবিদ। সব কিছুকে তিনি সহজভাবে নিতেন। সাবেক অর্থসচিব মাহাবুব আহমেদ বলেন, রাত ১টা-২টা পর্যন্ত তিনি জেগে জেগে ফাইল দেখতেন, পড়াশোনা করতেন। কম ঘুমিয়ে কাজ করতে পারতেন। তার প্রচুর প্রাণশক্তি ছিল। তিনি বলতেন, বাংলাদেশ আরও ভালো করতে পারতো। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কারণে করতে পারেনি। তার কথা শুনে মিয়ানমারের প্রতিনিধি নাখোশ হয়েছিলেন।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status