দেশ বিদেশ
বিদেশি পর্যটক টানতে ট্যুরিজম বোর্ডের বিটুবি এক্সচেঞ্জ
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ মে ২০২৩, রবিবারবিদেশি পর্যটকদের দেশে নিয়ে আসার জন্য ঢাকায় শুরু হয়েছে চারদিনব্যাপী ‘মুজিবস বাংলাদেশ’- শিরোনামে ট্যুরিজম প্রমোশন অ্যান্ড বিটুবি একচেঞ্জ। শনিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার গ্র্যান্ড বলরুমে ১২৫ স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে চার দেশের ৯৭ জন বিদেশি ট্যুর অপারেটরকে নিয়ে এই আয়োজন চলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে বিটুবি একচেঞ্জের মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে দেশের ট্যুরিজমকে তুলে ধরা। ট্যুরিজম প্রোমোশন অ্যান্ড বিটুবি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে নেপাল থেকে ১২ জন, ভুটান থেকে ১৪ জন, শ্রীলঙ্কা থেকে ১৯ জন এবং ভারত থেকে ৫২ জন ট্যুর অপারেটর অংশগ্রহণ করেন। ভারতের অধিকাংশ অপারেটরই পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং অরুণাচলের। ট্যুরিজম স্টেকহোল্ডারদের সুষম অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ঢাকার স্টেকহোল্ডারদের পাশাপাশি বাংলাদেশের অঞ্চলভিত্তিক ট্যুরিজম স্টেকহোল্ডারদের এ আয়োজনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এতে করে বিদেশি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিংয়ের পাশাপাশি দেশীয় স্টেকহোল্ডারদের নিজেদের মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় এবং অঞ্চলভিত্তিক নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। বাংলাদেশি স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে ৪৬টি হোটেল ও রিসোর্ট, চারটি দেশীয় এয়ারলাইন্স, ১০টি ট্যুরিস্ট ভেসেল এবং ৬৫টি ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। ট্যুর অপারোটরসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশি ট্যুর অপারেটরদের মাধ্যমে বাংলাদেশে পর্যটক আসবেন এমন সাড়া পেয়েছেন। ভারত, ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ট্যুর অপারেটররা বাংলাদেশের অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্যাকেজ, দেশের ট্যুরিস্ট এলাকাগুলোর ব্যাপারে নোট নিয়েছেন এবং বিদেশি পর্যটকরা এলে তারা কীভাবে কম খরচে অল্প সময়ে নান্দনিক স্পটগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা তাদের কেমন সুবিধা দেবে তা নিয়েও কথা বলেছেন। শেরাটন ঢাকার ক্যাটারিং সেলস এক্সিকিউটিভ শারমিন সুলতানা বলেন, বিদেশি ট্যুর অপারেটররা আমাদের হোটেল সম্পর্কে জানছেন।
আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার সৈয়দা ফাইজা ফারিয়া বলেন, আমরা বিটুবি মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছি। এখানে তারা আমাদের সম্পর্কে আরও জানছেন। আমাদের দেশ ভ্রমণে তাদের উৎসাহিত করছি। ইয়র বাংলা ট্যুরের সিইও তানভীরুল আরফিন লিংকন বলেন, বিদেশি ট্যুর অপারেটররা আমাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে তাদের দেশ ভ্রমণে। কিন্তু আমরা তো এখানে আমাদের দেশ সম্পর্কে জানাতে বসেছি এবং সেটিই করছি। সুন্দরবন এলাকায় ট্যুর নিয়ে কাজ করা এজেন্সি রয়েল ভিশন ট্যুরিজম মালিক সাহেদ মো. ইমরান বলেন, করোনার পর মাঝে সুন্দরবনে পর্যটক আসা, অনেকটা বন্ধ ছিল। আমরা আশা করছি এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেটির জট খুলবে। এয়ার অ্যাস্ট্রার মার্কেটিং ও সেলসের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বিদেশি ট্যুর অপারেটররা আমাদের এয়ারক্রাফ্টগুলো কোন রুটে চলছে, ভাড়া কেমন এসব বিষয়ে জেনেছেন। ভারতের আগরতলা থেকে আসা ট্যুর অপারেটর অজিত কুমার পাউল বলেন, আমার মাধ্যমে প্রতি মাসে বাংলাদেশে পর্যটক আসে।
এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আরও সহজ হয়েছে। দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা বসায় এখন দুই দেশ থেকে পর্যটক আসা যাওয়ার রাস্তাটা আরও প্রসারিত হলো। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু তাহের মো. জাবের বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে বিদেশি পর্যটকরা আমাদের দেশে আসে না। তাই এই আয়োজনের মাধ্যমে চারটি দেশের ট্যুর অপারেটরদের কাছে দেশের ট্যুরিজম খাতকে উপস্থাপনের সুযোগ হলো। দিনভর তারা আমাদের ট্যুর অপারেটর, এয়ারলাইন্স ও হোটেল প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন তথ্য নিয়েছেন। আমরা আশাবাদী যারা অংশ নিয়েছেন তারা পর্যটক পাঠাবেন। এজন্য আমরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবো।