ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

জনপ্রতিক্রিয়া

অবাধ নির্বাচন এদেশের জনগণেরই চাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার
২৭ মে ২০২৩, শনিবারmzamin

মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তর্কযুদ্ধ। কেউ বলছেন এটি বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক একটি ঘটনা। আবার কেউ বলছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এ ভিসা নীতি টনিকের মতো কাজ দেবে। তবে এ নিয়ে কিছু ধোঁয়াশাও রয়েছে কারও কারও মনে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ কী ভাবছেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার তাগিদে মার্কিন ভিসা নীতির এ ঘোষণাকে সাধুবাদ জানাই। তবে, আমাদের দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্য একটি দেশকে তাগিদ দিতে হবে এটা ভাবলে দুঃখ লাগে। গত এক দশকে চলমান সরকার ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের কোনো অস্তিত্ব নেই। দেশের এই খারাপ পরিস্থিতির জন্য, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য অন্য দেশের চাপ সৃষ্টি করা লাগছে এটা বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার বলে মনে করি। তারপরও আমরা চাই দেশে একটা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক।

বিজ্ঞাপন
যেখানে আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের ভোট দিতে পারবো। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানভীর হাবীব বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে এটা একটা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হলে তারা এই কড়াকড়ি আরোপ করবে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তারা উদ্বিগ্ন। এ উদ্বেগ দেশেও। বিরোধী দলগুলো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য। আমি মনে করি অন্য দেশকে কেন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সতর্কতা জারি করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সবগুলো দলকে এক হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এখনো সময় আছে। রাজনীতিকরা নিশ্চয় এ নিয়ে দ্রুত এক টেবিলে বসবেন। 

বেসরকারি চাকরিজীবী তাসকিন আল আনাস বলেন,  মার্কিন ভিসা নীতির কড়াকড়ি আরোপটা মূলত সরকার ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মানুষদের জন্য করেছে। আন্তর্জাতিক মহল হিসেবে তারা বিভিন্ন সময় যেকোনো দেশের ওপর এই চাপ দেয়। আমরা যখন লেখাপড়ার জন্য বিদেশে যাব তখন এই কড়াকড়ি আমাদের পাসপোর্টে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। এজন্য আমরা কিছুটা শঙ্কিত। তবে সব শঙ্কা উবে যাবে যদি দেশে সব দল মিলে একটা সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে। আমি সেইদিনের অপেক্ষায় রয়েছি।  

ব্যবসায়ী জাবেদ আহমেদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের এই ভিসা নীতি কতোটুকু সহায়ক হবে তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। তবে, এ ভিসা নীতি যে সবাইকে ভাবিয়েছে এটা পরিষ্কার। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে এক টেবিলে বসেছেন। এনিয়ে আলাপ করেছেন। আমার মনে হয়, এক টেবিলে যখন বসা শুরু হয়েছে তা এখন শীর্ষ পর্যায়েও বসা হবে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে হবে। এবং সকল দলের অংশগ্রহণে হতে হবে। আমেরিকার এই কড়াকড়ির কারণে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে তো ভালো। কারণ আমরাও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।

যুব নেতা মুহাম্মদ উল্লাহ মধু বলেন, আমি মনে করি ভিসার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বেরিয়ার বেঁধে দিয়েছে এটি দেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদম স্পেসেফিক উল্লেখ করে দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে, খর্ব করা হচ্ছে। এবং বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই ভিসা নীতি যদি রাজনীতিবিদদের বোধোদয় ফিরিয়ে আনে তাহলে এর সুফল আমরা পাবো বলে মনে করি। 

বেসরকারি চাকরিজীবী শিউলি আক্তার, বলেন,  সুষ্ঠু নির্বাচন আমরাও চাই। আমাদের এই চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটা তো সত্যি আমরা ভোট দিতে গেলে দিতে পারছি না। আমরা প্রত্যেকটি নাগরিক চাই আমাদের গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার ফিরে আসুক। নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে হয়। সরকার সেইভাবে নির্বাচন করুক। এই ভিসা নীতির ওপর ভর দিয়ে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার। 

ছাত্রনেতা আলমগীর কবীর বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্রে বাধা সৃষ্টির ওপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি ঘোষণা দিয়েছেন এতে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন চাই। এদেশে আঠারো কোটি জনগণ এমনটি চায়। ছোটবেলায় দেখেছি উৎসব আমেজের মতো নির্বাচন হয়েছে। ভোট কেন্দ্রগুলো উৎসব প্রবণ থাকতো। আর এখন আমি একজন ভোটার হয়ে ভোট দিতে পারি না। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও অবাধ না হয়, আগামীতে এই ভিসানীতি থেকে আরও বড় পাহাড় পরিমাণ স্যাংশন আসবে। এর জন্য বাংলাদেশে অর্থনৈতিক এবং সার্বিক সামাজিক অবক্ষয় ঘটবে আগামীতে। এটা আমরা কেউই চাই না। 

বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল হাসান বলেন, বাস্তব অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে আমি বলবো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেটা বলেছে সেটি নতুন কিছু নয়। নির্বাচন মানেই হলো সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া চাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেটা চেয়েছে। আর সেটা করার জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। আমরা সাধারণ নাগরিক। আমরা চাই পাঁচ বছর পর একটা নির্বাচন হয় সেটা সুষ্ঠুভাবে হোক। 
 

পাঠকের মতামত

সাধারণ জনতা তত্তাবধায়ক সরকার এর অধীনে নিরেপপ্ক্ষ নির্বাচন চায়। যেন কোনো দুর্নীতিবাজ , সন্ত্রাসী নির্বাচিত হতে না পারে। বিনপি ,আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি বেপার না। তত্থাবধায়ক সরকার এর অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে সাধারণ পাবলিক এ নির্বাচন বর্জন করবে , কোনো দল লাগবে না।

no fame
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১০:৩১ অপরাহ্ন

It is a fact that if Bangladesh wants to return to the democratic system, the elections should be held under the caretaker government like 1991 and not with the current government.

S.Alam
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১০:১২ অপরাহ্ন

সরকারের কাছে আমার জানতে চাওয়া- নাগরিক হিসেবে ট্যাক্স, ইউটিলিটি বিল সবই নিয়মমত শোধ করে যাচ্ছি। যেভাবেই হোক, আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। তাহলে আমার দেশের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কেন? কই! নিষেধাজ্ঞা তো ভারতের উপর হয় না, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা যাদের সমকক্ষ বললেন আমাদের, তাদের কারো উপর তো দিলো না। আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর দুই বছর আগে দিলো। কোনও জবাব নাই। দুইশটা দেশ যে গনতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেলো, আমার দেশ বাদ কেন? কেন আমাদের দেশকে এই অসম্মানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে?আর বাংলাদেশের এত অপমান মেনে নেব কেন আমরা? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করব- দয়া করে আপনি পদত্যাগ করুন। এনাফ ইজ এনাফ!

সায়েম
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ৯:০৬ অপরাহ্ন

সব চেয়ে বড লজ্জাজনক হল এ দেশের জনগনকে আওয়ামিলীগের কাছে ভোটের অধীকারের জন্য ধরণা দিতে হচ্ছে। যারা ভোটের অধিকার প্রতিষ্টার জন্য গোটা দেশ টা কে নরকে প্ররিণত করেছিলেন।

shoaibulalam
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ৮:০৮ অপরাহ্ন

সরকারের টার্গেট জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ২/৩ টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিসর্জন দিয়ে হলেও বিএনপিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিয়ে আসা। বিএনপি সেই ফাঁদে পা দিবেনা। বিদেশীরাও এই ফাঁদে পা দিবেনা। সুষ্ঠু নির্বাচন অনেক দুরের কথা, মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রীর বিএনপির সাথে সংলাপে অনীহাই তার আসল চেহারা। সংকটকে অনুধাবন না করে আরো বিপদের দিকে এগিয়ে যাওয়াকেই সরকার ভালো মনে করছে। তাছাড়া সরকারও জানে এই মূহুর্তে সংলাপে রাজি হলেই যে বিএনপি হুর হুর করে সংলাপে চলে যাবে তা ভাববারও কোন কারণ নেই। বিএনপি এর মধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে আগে পদত্যাগ তারপর সংলাপ।

জামশেদ পাটোয়ারী
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ৫:১১ অপরাহ্ন

টিকেট পেলে জয় সুনিশ্চিত' - ভিসানীতি এমন গুড়ে বালি মাখিয়ে দিয়েছে। তবে দেশের সুনাম যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভুলুন্ঠিত হয়ে গেল তা নিয়ে তেমন উচ্চ বাচ্য করতে শুনা যাচ্ছে না। কেবল ব্যক্তি বা তার পোষ্যদের ক্ষতি হিসেব করে সাবাই একটা নির্মোহ ভাব দেখায়। উচিৎ হবে আগামি নির্বাচন কালিন সরকার ব্যবস্থা মানবাধিকার বাক স্বাধীনতা ও দল নিরেপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করার পথ খুঁজে বের করে একটা অবাদ অংশগ্রহনমূলক স্বচ্ছ গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করা। তখন বাই ডিফল্ট ভিসানীতি অকার্যকর হয়ে যাবে - দেশের সুনাম পূনরোদ্ধার হবে।

মোহাম্মদ হারুন আল রশ
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status