প্রথম পাতা
গাজীপুরে মিশ্র মডেলের ভোট
জাহাঙ্গীরের ছায়ার কাছেই হেরে গেলেন আজমত
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বাজিমাত করলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ১৬১৯৭ ভোটে হারিয়ে তিনি এ সিটির প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। জায়েদা ভোট পেয়েছেন ২,৩৮,৯৩৪, আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২,২২,৭৩৭ ভোট। দিনভর অনেকটা শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও রাতে ফল ঘোষণায় দীর্ঘ সময় লাগায় টানটান উত্তেজনা দেখা দেয়। দুই প্রার্থী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে থাকায় তাদের সমর্থকদের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করে। ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় প্রশ্ন তোলেন মেয়র প্রার্থীরা। গভীর রাতে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
ফল ঘোষণার শুরু থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন এগিয়ে ছিলেন। দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বেশি না হওয়ায় অনেকে নানা শঙ্কা প্রকাশ করতে থাকেন। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজমত উল্লা বিজয়ী হয়েছেন বলে তাকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন। ভোটের ফল দেরিতে আসায় অনেকে সামাজিক মাধ্যমে নানা রকম মন্তব্য করেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন বর্জন করে এতে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
গতকাল বিকাল চারটায় ভোট শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল আসতে শুরু করে নগরীর বঙ্গতাজ মিলনায়তনে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা শুরু হয় অনেক পরে।
মিশ্র মডেলের ভোট: ওদিকে বড় কোনো অঘটন ছাড়াই শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত চলা নির্বাচনে ৫০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে বলে ধারণা করছে নির্বাচন কমিশন। সকালে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পুরো সিটিতেই ভোটগ্রহণ করা হয় ইভিএমে। সকালে ভোট দিয়ে প্রধান দুই প্রতিদ্বনিদ্ব প্রার্থী নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ। তারা উভয়েই নিজেদের জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সামনে বড় এক চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছিল এই নির্বাচন। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে করা গেলেও নানা অভিযোগ ছিল সাধারণ ভোটারদের। ইভিএম এ ধীর গতি। আঙ্গুলের ছাপ না মেলা। কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে ভোটারদের নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়ার প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করেছেন ভোটাররা। এছাড়া ইভিএম মেশিন নষ্ট হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় ভোটারদের। সম্প্রতি হওয়া কয়েকটি নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় গাজীপুরে একটি মিশ্র মডেলের ভোট হয়েছে। এখানে আগের নির্বাচনগুলোর মতো বড় সংঘাত সহিংসতা ও কেন্দ্র দখলের মতো পরিস্থিতি হয়নি। কোনো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করতে হয়নি নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু পুরনো কিছু অভিযোগ ছিল আগের মতোই।
নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নগরজুড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল। অনিয়মের কারণে কয়েকজনকে আটকও করা হয়। একটি কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ওদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আমরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। জনগণ ও ভোটাররা সন্তুষ্ট। প্রার্থীরা সন্তুষ্ট। আপনাদের প্রতিনিধিরা (সাংবাদিক) সন্তুষ্ট। গণমাধ্যমেই তারা এ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, গাজীপুরের ভোট মিডিয়াসহ সবাই দেখেছেন; সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষেভাবে ভোট হয়েছে। প্রার্থী সবাই সন্তুষ্ট, যেই ফলাফলই হোক, সবাই মেনে নেবে বলেছেন।
আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনের আমরা দেখেছি; রিটার্নিং অফিসার, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষকসহ সবার কাছ থেকে একই তথ্য পেয়েছি- গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধভাবে হয়েছে। ভোটে যারা অংশ নিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা, বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীরা বলেছেন, নির্বাচনী পরিবেশ ও ব্যবস্থায় তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট।
ইসির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৩ সালে গাজীপুরের নির্বাচনে ৬৮ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এবার ভোটের হার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি হতে পারে বলে ধারণার কথা জানান ইসি আলমগীর।
পাঠকের মতামত
জাহাঙ্গীর আলম সাহেবের উপর থেকে বহিষ্কার উঠে যেতে পারে।না উঠানোয় উত্তম,অন্যদের নিকট এটা একটা সতর্ক বার্তা হিসেবে যাবে।আর যদি দল ফিরে নেয় তবে আগামী নির্বাচনে আজমত উল্লা খান সাহেব সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে এবং চাইকি জীতেও যেতে পারেন।এইতো চলছে। অথবা অন্যদের মতো দলে ফিরে আসতে ব্যর্থ হয়ে অন্য দলে যোগ দিতে পারে। জনগনের খাসলত বোঝা কঠিন।আগে পিছে চিন্তা না করে কিছু মানুষ হুজুগে মত্ত হয়ে পড়ে। এখন যদি উনারে দলে না নিয়ে গাজীপুর পৌরবাসীর উন্নয়নের হাতে হারিকেন ধরায়ে দিয়ে বলে যে নে ভোট খা ,তাহলে। অবশ্য ভোট পাগল কিছু ভোটারের তাতে কিছুই যায় আসেনা। এই যে তাদের কিছুই যায় আসেনা এটা একটা সমস্যা যা ভোগায় সবাইকে।
স্হানীয় স্বায়ত্বশাসিত পরিষদের নির্বাচনে জনগণ দল না দেখে কাজ দেখে ভোট দেয় গাসিক নির্বাচন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।লগুপাপে গুরুদন্ড প্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম উন্নয়ন অগ্রগতির সাথে সাধারণ জনগণের নাড়ি নক্ষত্রের হাল হকিকত সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন অপরদিকে আ'লীগ মনোনীত আজমত উল্লাহ খান সাবেকি আমলের বৈঠকখানার রাজনীতিবিদ।যার দলের কর্মী সমর্থক তথা সাধারণ জনগণের সাথে খুব একটা সম্পর্ক নেই বললেই চলে।গাসিক নির্বাচনে প্রতীয়মান হয় যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী মনোনয়নে ডি বি, সি আই ডি কতৃক গোপন রিপোর্ট সম্পুর্ন অসার প্রমানিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে সসম্মানে দলে ফিরিয়ে নিবে এবং তার প্রতি যে অন্যায় আচরন করা হয়েছে তার জন গাজীপুরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করবে। Mr.always wish u.
আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে সসম্মানে দলে ফিরিয়ে নিবে এবং তার প্রতি যে অন্যায় আচরন করা হয়েছে তার জন গাজীপুরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করবে।
আগামী জাতীয় নিবাচনে ছায়া পাটি বিজয়ী হবে ! কোন সেংশন কাজ হবে না । আবার আসিব ফিরে তোমাদের কুঁড়েঘরে……. বরগি এলো দেশে !
অরাজনৈতিক ও গৃহিণী মাকে গাজীপুরের মেয়র পদে নির্বাচিত করিয়ে জাহাঙ্গীর আলম দেখিয়ে দিলেন গাজীপুরে তার ভিত্তি ও জনপ্রিয়তা কতো মজবুত। প্রতিটি মা যেন এমন সন্তানের জন্ম দেন।
আমি আশা করবো আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে সসম্মানে দলে ফিরিয়ে নিবে এবং তার প্রতি যে অন্যায় আচরন করা হয়েছে তার জন গাজীপুরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করবে। জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে এতো ষড়যন্ত্র করেও আজমতউল্লাহ খান সাহেব জাহাঙ্গীর আলমের ছায়ার কাছে পরাজিত হবার পর তার আর রাজনীতিতে থাকা উচিত কিনা সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।
যে প্রার্থী বেশী জনপ্রিয়, বেশি ভোট পাবে সেই ঝয়ী হবে । কিন্ত দলীয় প্রার্থীর প্রতি সমর্থন দলের সদস্য ও সমর্থকদের থাকার কথা । কিন্ত গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সদস্য গণ দলের প্রার্থীকে ভোট দেয় নি । গোপনে প্রতিদ্বন্দ্বী কে ভোট দিয়েছেন। তাই আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা কর্মীদের উপর অন্ধ ভাবে আস্থা রাখতে পারবে না এই শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার দরকার।
প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনের অদক্ষ দূনীতিবাজ দলীয় চাটুকার লোকদের দিয়ে একজন প্রার্থীর তিন বার করে রিপোর্ট নিয়ে তার পর নমিনেশন দেন, তারপরও জিততে পারেনাই প্রধানমন্ত্রীর উনার প্রার্থী এটা হলো অতিরিক্ত প্রশাসন নির্ভরতার ফল.
ইভিএম এ ভোট হওয়ায় জায়েদা জিততে পারছে না হলে
গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি শেখ হাসিনার সরকার আজ অবধি যে উন্নয়ন করেছে নির্বাচন পর্যন্ত যদি এর দ্বিগুণ উন্নয়নও করে তারপরও আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২০ আসনও পাবেনা, যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়।
এক জায়েদা খাতুনের কাছেই অওয়ামী লীগের এই করুণ দশা। বিএনপি নির্বাচন করলে তো আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
মানুষ দেখানো নির্বাচন। আসল নির্বাচন হবে জাতীয় নির্বাচন।এখন দেখাইতেছে আমরা সচ্ছ ভোট গ্রহন করছি যাতে ফাদে ফেলতে পারে।এটা একটা ট্রেপ তার নাম আওয়ামী লিগ।
To the EC: The Gazipur election will not change the mindset of the Bangladeshi people about the EC.
বাহ! চমৎকার ! আমরা বাকাপথে চলা শুরু করলে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একবার জোরে "ভিসা"উচ্চারণ করলেই আমরা সোজাপথে চলতে শুরু করব। জয় জগদীশ্বর বাইডেনের জয়। জয় মার্কিন ভিসার জয়।
জাহাঙ্গীর এর মনোনয়ন বাতিল, অসময়ে দুদক কতৃক তলব, প্রচারণা কালে হামলা ভাঙ্গচুর ও সর্বোপরি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাত মুলক কর্মকাণ্ডের ফাইনাল ফলাফল জায়েদা খাতুন এর বাজিমাত। অতএব হিংসার বশবতি না হয়ে ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভদ্র-মার্জিত, জনপ্রিয় যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দিয়ে উগ্র-সন্ত্রাসী, বাচাল-মিথ্যুক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে ভরাডুবি নিশ্চিত। উল্লেখ্য, কোন কথা বা বক্তব্য সত্যি কিন্তু দল বিরোধী (অসাবধানতা বশত বলে ফললে) জনপ্রিয় নেতাকে শোকজ সহ কারণ দর্শানো করা যেতে পারে কিন্তু অন্যের প্ররোচনায় একেবারে দল থেকে বহিষ্কার দলের জন্য কখনোই শুভকর হবে না। সুতরাং ভবিষ্যতে এই ধরনের বিষয়ে আরো বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে।
আমেরিকার এক বোমার কারণে দুঃখ ও লজ্জার বিষয় হলেও ভারাক্রান্ত মন নিয়েই গাজীপুরের সিটটি ছাড়তে হল এটাই তাদের বির দুর্ভাগ্য।
এরচেয়ে ভালো শিরোনাম আর হতে পারতো কিনা জানা নাই।আ.লীগের মূল কৌশল বুঝতে হলে এই নির্বাচন কিছু না।ভবিষ্যতে হয়তো জাহাঙ্গীরকে ক্ষমা করবে আ.লীগ নিজ স্বার্থে ভোটব্যাংক রক্ষার জন্য।
জাহাঙ্গীরের ছায়ার কাছেই হেরে গেলেন আজমত।আমার যে ঈদের মতো আনন্দ লাগছে ।
আমেরিকান ভিসা নীতি পাল্টে দিলো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ।