বিশ্বজমিন
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, শিগগিরই গ্রেপ্তার
মানবজমিন ডেস্ক
(২ মাস আগে) ৩১ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ২:৩৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

সামনে নির্বাচন। এর আগেই বড় ধাক্কা খেলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। শিগগিরই গ্রেপ্তার হতে পারেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এক পর্নস্টারের সঙ্গে সম্পর্ক গোপন করেই এই ঝামেলায় জড়ালেন তিনি। ওই সম্পর্ক গোপন রাখতে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই পর্নস্টারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে সেই তথ্য গোপন করায় এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হলো।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা আগেই বলেছেন, অভিযুক্ত হলে তাদের মক্কেল আত্মসমর্পণ করবেন। এ আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত অভিযুক্ত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ নেয়া হয়, ছবি তোলা হয়। এমনকি হাতকড়াও পরানো হতে পারে। ট্রাম্পকে আত্মসমর্পণ করার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের এক মুখপাত্র। এদিকে এনবিসি নিউজকে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করবেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার দীর্ঘ তদন্ত শেষে গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করেছে।
ট্রাম্প অবশ্য গত সপ্তাহ থেকেই বলে আসছেন যে, তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেন সম্প্রতি জুরির সামনে নিজের জবানবন্দি দেন। আর তারপরই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় ট্রাম্পের গ্রেপ্তার। এরইমাঝে গ্র্যান্ড জুরির তরফে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হল। এই মামলার তদন্ত করছেন ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্র্যাগের দপ্তর। সেখান থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারা ট্রাম্পের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন যাতে তার আত্মসমর্পণের বিষয়টি সমন্বয় করা হয়।
কে এই স্টর্মি ড্যানিয়েলস?
বিষয়টির সাথে পরিচিত দুটি সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, সবকিছু ধারনা মাফিক ঘটলে বর্তমানে ফ্লোরিডায় থাকা ট্রাম্প সোমবার নিউইয়র্কে যাবেন। এর একদিন পর মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে। শুনানির সময় তাকে অভিযোগ পড়ে শোনানো হবে, যা প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থায়ী হবে। ট্রাম্প আদালতে উপস্থিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। এই সিক্রেট সার্ভিস সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সুরক্ষায় কাজ করে।
এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, ফৌজদারি মামলাটি ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ের দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে। ডনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে রিপাবলিকান হোয়াইট হাউস মনোনয়ন পাওয়া সম্ভাব্য সব প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন। যদিও কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেও মার্কিন আইন অনুযায়ী যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেন। সেদিক থেকে এই মামলা দিয়ে ট্রাম্পকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে ঠেকানো যাবে না। কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকানরা জানিয়েছেন যে, তারা ট্রাম্পের সঙ্গেই আছেন। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি বলেছেন, আলভিন ব্র্যাগ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে আমাদের দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করছে। যেহেতু তিনি জনমনে আতঙ্ক বাড়াতে সব সময় দাগী অপরাধীদের মুক্ত করেন, এখন তিনি সেই বিচারব্যবস্থাকে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করছেন।
যদিও ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের যুক্তি যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম শিফ বলেছেন, একজন প্রেসিডেন্টের অভিযুক্ত এবং গ্রেপ্তার হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু বেআইনি আচরণের জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে করা আরও আরও কয়েকটি মামলারও তদন্ত করা হচ্ছে।
সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্যাপিটল হিল হামলায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে ফৌজদারি মামলা করা হতে পারে বলেও জল্পনা চলেছিল বেশ কিছু দিন। তবে সেসব বিতর্ক পিছনে ফেলে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান প্রার্থীর দৌড়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন তিনি। এর আগে মার্কিন মিডটার্ম নির্বাচনে অনেক সেনেটর ও কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতেও দেখা গিয়েছিল তাকে। তবে এবার এই মামলা খেয়ে বড়সড় বিপদেই পড়লেন তিনি। এর আগে ট্রাম্প ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময়ে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস দ্বারা দুবার অভিশংসিত হয়েছেন তিনি।
পাঠকের মতামত
Bharot ar Awami Leaguer shokol asha ekhon gurey bali. Aay hai!