ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খেলা

ফুটবলারদের কোয়ালিটির অভাব দেখছেন সাবেকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার
৩০ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার
mzamin

দলের অনেকেরই জীবিকার প্রধান মাধ্যম ফুটবল নয়, সবাই শৌখিন ফুটবলার। বেশিরভাগ ফুটবলার দিনে অন্য চাকরি করেন, কাজ শেষে সন্ধ্যায় বুটজোড়া নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। এমন দল নিয়ে বাংলাদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসেছিল  সেশেলস। আর ছোট দ্বীপদেশটির বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। জামালদের এই হারে ফুটবলাঙ্গনে চলছে সমালোচনার ঝড়। অনেকে এই হারে লজ্জা পেয়েছেন। সাবেক ফুটবলাররা মনে করেন, কোয়ালিটির অভাবেই এমন হার দেখতে হচ্ছে আমাদের। দেশীয় ফুটবলের অন্যতম কিংবদন্তী আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রথম হ্যাটট্রিকম্যান চুন্নু যারপরনাই হতাশ এই পারফরম্যান্সে। তিনি বলেন, ‘এই ফুটবল মানুষ দেখতে চায় না।

বিজ্ঞাপন
খুবই দুঃখজনক। এমন দলের সঙ্গে এই পারফরম্যান্স নিয়ে বলতেও খারাপ লাগছে। বিশ্লেষণ করতে গেলে অনেক বিষয়ই উঠে আসবে। তবে একটাই মূল, তা হলো কোয়ালিটির অভাব।’ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য্য কিছু দিন আগেও জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ ছিলেন। স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে গোলরক্ষক কোচ হিসেবে কাজ করেছেন বিপ্লব। সেশেলস ম্যাচের ব্যর্থতার পর এই সাবেক অধিনায়কের কাঠগড়ায়ও ফুটবলাররাই। ঘরোয়া লীগের পারফরম্যান্সের সঙ্গে জাতীয় দলের ম্যাচ পারফরম্যান্সের তারতম্য ধরা পড়েছে তার চোখে। বিপ্লব বলেন, ‘কোচ এবং ফেডারেশনকে দোষারোপের সুযোগ নেই। ফেডারেশন যথেষ্ট সময় ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। আমি হাভিয়েরের সঙ্গে ছিলাম। তার চেষ্টা ও আন্তরিকতা দেখেছি। কোচরা কৌশল সাজিয়ে দেয়। মাঠে খেলতে হবে ফুটবলারদের। ফুটবলাররা দায়িত্ব না নিলে ফলাফল আসবে না।’ জাতীয় দলে সবচেয়ে বেশি ফুটবলার বসুন্ধরা কিংসের। বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজন নিজেও বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেশেলসের বিপক্ষে এই হারে তিনিও অনেকটা ব্যথিত। হারের পর তিনি বলেন ‘প্রথম ম্যাচটি আমি দেখেছি। দ্বিতীয় ম্যাচের সময় ক্লাবের অনুশীলন থাকায় দেখতে পারিনি। পরবর্তীতে সেশেলসের গোলের মুহূর্ত দেখলাম। বাংলাদেশ দল যে প্রস্তুতি নিয়েছে এবং দেশের মাটিতে এমন হার সমর্থকদের জন্য কষ্টকর।’ কিংসের কোচ রাখঢাক রেখে খানিকটা মন্তব্য করলেও দেশীয় শীর্ষ কোচদের অনেকেই মন্তব্য করা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। তবে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও ফেডারেশন থেকে সদ্য পদত্যাগ করা সদস্য আরিফ হোসেন মুনের কাছে সেশেলস ব্যর্থতার ব্যাখ্যা ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘একটি ম্যাচ জিতেছি ১-০ গোলে, এই ম্যাচেও যদি কোনোভাবে জিততাম তাহলে কি বাংলাদেশের ফুটবল খুব এগিয়ে যেত? এটি এক-দুটি ম্যাচের বিষয় নয়, মূল বিষয় হচ্ছে সিস্টেম। জেলা পর্যায়ে ফুটবল নেই, তৃণমূলে খেলা নেই। খেলোয়াড়ও আসছে না। ফলে বর্তমানদের ওপরই জাতীয় দল নির্ভর করতে বাধ্য এবং যার মাধ্যমে ফলাফলও আসছে না।’ বাংলাদেশের ফুটবল অক্সিজেনের সাহায্যে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলের এই অবস্থা, এখন শুনছি একাডেমিও (কমলাপুর বাফুফে একাডেমি) বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাহলে ফুটবলাররা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার অবস্থায় নেই। আমাদের ফুটবল আসলে কোনোমতে অক্সিজেন দিয়ে চলছে।’ ফুটবল ফেডারেশনে মুন নিজেও এক দশক ছিলেন। গত মাসে সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক এই জাতীয় ফুটবলার। আরেক কিংবদন্তী শেখ মোহাম্মদ আসলাম বাংলাদেশের এই হারে লজ্জিত জানিয়ে বলেন, ‘আমি পুরো ম্যাচটা দেখেছি। বাংলাদেশ যে ফুটবল খেলেছে, সেটা আমাদের জন্য লজ্জার। এটা কোনো ফুটবলই নয়। বরং বেটার খেলে, প্রতিজ্ঞা করে সেশেলস ম্যাচটি জিতেছে। জিততে হলে কিভাবে খেলতে হয়, সেটা দেখিয়েছে র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৯৯ নম্বরে থাকা দলটি। আমরা পারিনি। আমাদের ফুটবলারদের শরীরী ভাষা জয়ের জন্য ছিল না। ভাবখানা এমন ছিল যে, আমরা রাজা-বাদশা, ওরা কোথাকার কে! আমাদের ফুটবলাররা পুরো আয়েসী ফুটবল খেলেছে’।

খেলা থেকে আরও পড়ুন

   

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status