বিশ্বজমিন
প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা কমাতে সংসদে বিল পেশ করলো পাক সরকার
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ২৯ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ১:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা খর্ব করা হলো। জিও নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত বিল উত্থাপন করেছেন। চৌধুরী মাহমুদ বশির ভির্কের সভাপতিত্বে হাউস প্রস্তাবিত বিলটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় পরিষদের (এনএ) আইন ও বিচার সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। কমিটি তা নিম্নকক্ষে ফেরত পাঠাবে। এনএ-তে বিলটি পাস হওয়ার পর সেটি অনুমোদনের জন্য সিনেটে পাঠানো হবে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি- সৈয়দ মনসুর আলি শাহ এবং জামাল খান মান্দোখাইল পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার একদিন পর পাকিস্তান সরকারের এই সিদ্ধান্ত সামনে এলো। দুই বিচারপতি বলেছেন, ''সুপ্রিম কোর্ট একজন প্রধান বিচারপতির একক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল হতে পারে না।"
বিচারপতি শাহ এবং বিচারপতি মান্দোখাইল পাঞ্জাব এবং খাইবারে শীর্ষ আদালতের ১ মার্চের রায়ের প্রেক্ষিতে ২৭ পৃষ্ঠার একটি নোটে লিখেছেন-'' পাক সংবিধানের ১৯১ অনুচ্ছেদের অধীনে আদালতের সমস্ত বিচারকদের দ্বারা অনুমোদিত একটি নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থার মাধ্যমে আদালতকে চলতে হবে। ''ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন চলাকালীন হাউসে তার বক্তৃতায়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এ বিষয়ে সংসদীয় পদক্ষেপ চেয়েছিলেন।জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে তিনি তাঁর নোটটিকে "আশারআলো" বলে অভিহিত করেছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও মনে করেন বিচার বিভাগ থেকে যে পরিবর্তনের আওয়াজ উঠেছে তা অবশ্যই দেশকে আশার আলো দেখাবে। পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার একই সুরে বলেছেন যে সুওমোটো নোটিশের নামে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে সুপ্রিম কোর্টের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
আইনমন্ত্রী মনে করেন, ‘’আদালতে আপিল করার সুযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং সংসদ সবসময় দাবি করেছে যে মানুষকে আপিল করার অধিকার দেওয়া উচিত''। বিলে প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত হওয়ার ক্ষমতা তিন প্রবীণ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিলে সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার সম্পর্কিত একটি ধারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা ৩০ দিনের মধ্যে দায়ের করা যেতে পারে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে শুনানির জন্য নির্ধারিত হবে। বিল অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের সামনে প্রতিটি ধারা, আপিল বা বিষয় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি এবং দুই সিনিয়র বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ দ্বারা শুনানি ও নিষ্পত্তি করা হবে।বিলে আরও বলা হয়েছে যে কমিটির সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নেওয়া হবে। পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় সুপ্রিম কোর্টের ১ মার্চের রায়ের জন্য একটি ২৭-পৃষ্ঠার নোটে, বিচারপতি সৈয়দ মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি জামাল খান মান্দোখাইল পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির [উমর আতা বন্দিয়াল] অফিস দ্বারা উপভোগ করা ক্ষমতা পুনর্বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন।" বিচারপতি শাহ এবং বিচারপতি মান্দোখাইল জোর দিয়েছিলেন যে -একজন ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হলে ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিতে পারে। বিচারপতিরা বলেছেন যে একটি কলেজিয়াল সিস্টেম "ক্ষমতা প্রয়োগে অপব্যবহার রোধ করতে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রচার করতে সহায়তা করে।''তারা জোর দিয়েছিলেন যে কলেজিয়াল সিস্টেম সুশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে কারণ এটি ক্ষমতার ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে।
সূত্র : এনডিটিভি
পাঠকের মতামত
বিল পাশও হয়ে গেছে।। পাকিস্তান এস্টাবলিশমেন্ট ( মিলিটারি ) যেমন ১৯৭১ এককভাবে জেনারেল ইয়াহিয়ার স্বীদ্ধান্তে, জুলফিকার আলি ভুট্টোর অসততায় যেমন পূর্ব পাকিস্তানের উপর হামলে পড়েছিল, ঠিক সেভাবেই নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে, শেহবাজ শরীফ, জারদারি আর মাওলানা ফজলুর রেহমানদের মতো চাটুকারদের সাথে নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ইমরান খানকে হত্যার চেষ্টা করছে। এর জন্য তারা তাদের ঐতিহ্যবাহী শক্তিশালী বিচার বিভাগকেও ধ্বংস করতে প্রস্তুত । পাকিস্তান ঐ ১৯৪৭ এর আবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে । এবং দেউলিয়াত্ব বরন করতে বাধ্য হয়েছে । ৭৫ বছর যাবত এই এস্টাবলিশমেন্ট ঐ দেশটিকে কুরে কুরে খাচ্ছে ।
এর অর্থ হল বিচার থাকবে না দেশে । হাঁ পাকিস্তানে এতদিন রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিদের শাসন ক্ষুন্ন হয়েছে বার বার, সামরিক হস্তক্ষেপ হয়েছে, এখন বিচার ব্যবস্থা ও শেষ ।