দেশ বিদেশ
চলতি অর্থবছর আশ্রয়ণের আওতায় আসছে ৫ হাজার হিজড়া
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবারবাংলাদেশের কেউ ঠিকানাবিহীন, গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এই ভিশন খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রায় ৮ লাখ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। গত বুধবারও ভূমিসহ গাজীপুর, সিলেট ও বরিশালে প্রায় ৪০ হাজার ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় এবার হিজড়াদের জন্যও আবাসানের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। চলতি অর্থবছর সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আসবে ৫ হাজার হিজড়া। গতকাল রাজধানী বনানী বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান লাইট হাউসের কার্যালয়ে আয়োজিত হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে প্রবেশাধিকার বিষয়ক এডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোক্তার হোসেন এ উদ্যোগের কথা জানান। লাইট হাউসের নির্বাহী প্রধান মো. হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ফাতেমা শবনম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট কাজী তামান্না ফেরদৌসসহ হিজড়া নেতৃবৃন্দ। ইউএসএইড’র আর্থিক সহায়তায় এবং পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনায় ‘যুব ও কিশোরদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য’ বিষয়ে ‘সুখী জীবন’ প্রকল্প ঢাকা (দক্ষিণ ও উত্তর) সিটি করপোরেশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং গাজীপুর জেলার ৫টি থানা/উপজেলায় বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় হিজড়া গোষ্ঠীর চাহিদাকে সামনে রেখে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবনমান উন্নয়নে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে লাইট হাউস। সভায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোক্তার হোসেন বলেন, সরকার দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। কোনো গোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, হিজড়া গোষ্ঠী অনেক ছোট হলেও তাদের দিয়ে সরকার অনেক কিছু করতে পারবে। তাই তাদেরকে ব্যাপকহারে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে তাদের জীবনমান ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগকে সফল বাস্তবায়ন করতে লাইট হাউস এডভোকেসি সভার আয়োজন করে। সভার উদ্দেশ্য হলো- হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়নে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত কর্মসূচি সম্পর্কে ধারণা লাভ এবং তাদের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করা। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ বাস্তবায়নে সমন্বয়সাধন এবং বাস্তবায়িত কর্মসূচিতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সুপারিশমালা প্রণয়ন। সভায় জানানো হয়, হিজড়া সম্প্রদায় বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোট হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬২৯ (শহরে বসবাস করে ৬ হাজার ৩৪৬ এবং গ্রামাঞ্চলে ৬ হাজার ২৮৩ জন)। আবহমানকাল থেকেই এই জনগোষ্ঠী অবহেলিত ও অনগ্রসর। এ লক্ষ্যে এই জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, তাদের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, তাদের পারিবারিক, আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা, বাসস্থান, জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বোপরি তাদেরকে মূল স্র্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সম্পৃক্তকরণের জন্য এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় তাদের বিভিন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।