দেশ বিদেশ
আইএমএফের ঋণের পরের কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবারআন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী জুন মাসে তাদের আসন্ন বোর্ড সভায় বাংলাদেশের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্যাকেজের শেষ দুটি কিস্তি অনুমোদন করবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিশ্চিত করে বলেন, আইএমএফ অবশিষ্ট তহবিল ছাড়ে সম্মত হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে কারিগরি আলোচনা এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পর্যালোচনার পর এই অগ্রগতি হয়েছে। চতুর্থ এবং পঞ্চম কিস্তি পাওয়া যাবে। যার পরিমাণ প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার। এটি মূলত গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছাড়ের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সংস্কারের শর্ত পূরণ না হওয়ায় বিলম্বিত হয়েছে।
এই শর্তগুলোর মধ্যে ছিল মুদ্রানীতি কঠোর করা, কর রাজস্ব সংগ্রহের উন্নতি, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার বাস্তবায়ন এবং সুশাসন নিয়ে কৌশল গ্রহণ।
এর আগে আইএমএফের বৈঠকে অংশ নেয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের যা বলার স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি। এখন মূলত ঋণের কিস্তি নির্ভর করছে সংস্থাটির বোর্ড সভার ওপর। আমরা এখনো ঋণের কিস্তির বিষয়ে আশাবাদী।
এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের প্রথমদিকে আইএমএফের একটি মিশন ঢাকা সফর করে এবং কাঠামোগত সংস্কারে বাংলাদেশের অগ্রগতির স্বীকৃতি জানায়। দলটি জ্বালানি মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করার জন্য চলমান কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে।
এসব উন্নতি সত্ত্বেও, আইএমএফ ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতি এবং বৈদেশিক রিজার্ভের উপর চাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে কর্মকর্তারা আশাবাদী তারা চলমান দুর্বলতাগুলো দ্রুতই কাটিয়ে উঠবে।
জুন মাসে প্রত্যাশিতভাবে অনুমোদিত হলে, বাংলাদেশ আসন্ন মুক্তিতে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার পাবে, যার মধ্যে বর্ধিত তহবিল সুবিধা এবং স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্ব সুবিধা উভয়ের অধীনে তহবিল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত ৭ কিস্তিতে এই ঋণ দেয়ার কথা। যথাসময়ে প্রথম তিন কিস্তির ২৩১ কোটি ডলার ঋণ পায় বাংলাদেশ। সর্বশেষ কিস্তি পায় ২০২৪ সালের জুনে। চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। কিন্তু নানা শর্তে সেই ঋণ আটকে যায়। পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করলে চলতি বছরের মার্চে ঋণের চতুর্থ কিস্তি পাবে। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ঘোষণা আসে, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একত্রে চলতি বছরের জুনে দেয়া হবে। এ নিয়ে আলোচনার জন্য গত মাসে বাংলাদেশে আসে আইএমএফ মিশন। ওই সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের অবসরে আবারো আলোচনা হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ে সংস্থাটির প্রতিনিধিদল। ওই আলোচনায় দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় বাংলাদেশে ফিরে পৃথক বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নর বলেছেন, শর্ত মেনে আইএমএফের ঋণ নিতেই হবেÑ এমন অবস্থানে নেই বাংলাদেশের অর্থনীতি।