ঢাকা, ১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

ব্যাংকিং খাতে চরম অস্থিরতা: আবারো সুদের হার বাড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

মানবজমিন ডেস্ক
২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার

ব্যাংকিং খাতে প্রচণ্ড অস্থিরতার মধ্যেই নতুন করে সুদের হার বাড়ালো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে পর পর দুইটি বড় ব্যাংকের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকিং খাত নিয়ে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। ব্যাংকগুলোর এই অসহায় অবস্থার জন্য সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে সুদের হার বৃদ্ধিকে। ধারণা করা হচ্ছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার কমিয়ে আনতে পারে মার্কিন সরকার। কিন্তু হলো তার উল্টো। অস্থিরতা আরও তীব্র হতে পারে এমন শঙ্কা সত্ত্বেও আবারো সুদহার বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার ০.২৫ পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাবি করেছে, ব্যাংকিং খাত শক্ত অবস্থানে আছে। তবে তারা সঙ্গে সতর্কতা দিয়েছে, যেসব ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক মাসে সেগুলোর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় ও দ্রব্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে গত বছর থেকেই সুদহার বাড়িয়ে চলছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক। তবে সুদহার বৃদ্ধির বিষয়টি ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এ মাসেই সিলিকন ভ্যালি এবং সিগনেচার নামে দুটি ব্যাংকে ধস নেমেছে শুধু এ কারণে। ব্যাংকগুলো যেসব বন্ড কিনে রেখেছে, আশঙ্কা করা হচ্ছে সুদহার বৃদ্ধির কারণে সেসব বন্ডের দাম কমে যাবে। বিশ্বের দেশগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সংকটের কারণে ২০০৮ সালের মতো বড় অর্থনৈতিক ধস নামবে বলে মনে করেন না তারা। গত সপ্তাহে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও তাদের সুদের হার ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। বৃহস্পতিবার নিজেদের সুদের হার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। কয়েক দিন পূর্বেই দেখা গেছে, দেশটিতে মূল্যস্ফীতি নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ১০.৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি দেখে দেশটি।  ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল বলেন, ফেড এখনো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। আর এ জন্য সুদের হার বৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এতে করে ব্যাংকিং খাতকে পুরোপুরি অবহেলা করা হচ্ছে। যদিও পাওয়েলের দাবি, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে ‘আলাদা বৈশিষ্ট্যের’ ছিল। তবে সুদের হার বৃদ্ধি যে এই সংকটকে আরও প্রকট করতে পারে তাও স্বীকার করে নেন তিনি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক। তাদের হিসেবে, ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ০.৪ শতাংশ। আর ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ১.২ শতাংশ। যা সাধারণের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস তারা দিয়েছিল তা থেকেও এটি কম। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত টানা ৯ দফা সুদহার বাড়িয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছর যেখানে ঋণের ক্ষেত্রে নামমাত্র সুদ দেয়া লাগতো, এখন তা বেড়ে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন নিয়ন্ত্রক ব্যাংক আরও জানিয়েছিল, সুদহার বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে নিজেদের সুর নরম করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা বলেছে, সুদহার বৃদ্ধির বদলে ‘নীতিতে পরিবর্তন আনলে সবচেয়ে ভালো হবে।’  প্যান্থিয়ন ম্যাক্রোইকোনমিকস নামের একটি সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ান শেপার্ডসন বলেছেন, ‘ফেডারেল রিজার্ভের এ সিদ্ধান্ত সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা ভীত।’ সুদহার বাড়া মানে হলো বাড়ি কেনার খরচ বেড়ে যাওয়া, ব্যবসার পরিধি বাড়ানোসহ বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাওয়া। সুদহার বাড়িয়ে মূলত এসব বিলাসী পণ্যের চাহিদা কমানোর চেষ্টা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরমাধ্যমে বাজার স্থিতিশীল থাকবে সেই আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষ অর্থ খরচ কমিয়ে ব্যাংকে জমা রাখতে পছন্দ করবে। এটিও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status