দেশ বিদেশ
আরাভ নজরদারিতে রয়েছে
কূটনৈতিক রিপোর্টার
২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবারদুবাইতে পলাতক পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিষয়ে আপডেট কোনো তথ্য নেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। ব্রিফিং প্রস্তুতির সুবিধার্থে মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে দু’দিন ধরে আরাভ কাণ্ডের আপডেট চেয়ে প্রশ্ন জমা দিচ্ছিলেন সাংবাদিকরা। কিন্তু গতকালের পূর্ব-নির্ধারিত ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত কোনো আপডেট না পাওয়ায় অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেন। বিব্রতকর পরিস্থিতি সামাল দিতে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন পরবর্তীতে জেনে জানাবেন বলে সময় নেন। ব্রিফিংয়ে তিনি এ-ও বলেন, আরাভ খানের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সহায়তা চায়নি। তিনি বলেন, হয়তো বা আরাভের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি আমাদের কাছে কোনো সাহায্য চায় বা আমাদের যে দূতাবাস আছে সেখানে সাহায্য চায়, তবে অবশ্যই আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে তথ্য প্রদান করে সহায়তা করবো। তিনি জানান, এ বিষয়ে দূতাবাস নিজে থেকেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তিস্তা নিয়ে দিল্লির জবাবের অপেক্ষায় ঢাকা: এদিকে তিস্তা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি জানতে চেয়ে দিল্লির কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছিল ঢাকা তার জবাব এখনো আসেনি বলে জানান মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। বলেন, এনিয়ে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনোকিছু বলতে চাইছে না বাংলাদেশ। সমপ্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তিস্তা প্রকল্পের অধীনে আরও দু’টি সেচ খাল খননের কথা জানা যায়। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক হাজার একর জমির মালিকানা পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগকে হস্তান্তর করা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, এই দু’টি খাল খনন করা হলে ভারতের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার কৃষকরা উপকৃত হবে। কিন্তু তা বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। কারণ, এর ফলে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে পানির প্রবাহ আরও কমে যাবে। বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেন অবশ্য বলেছেন, তিস্তা প্রকল্পের অধীনে খাল খনন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে গত ১৬ই মার্চ ভারতের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তবে এখনো চিঠির কোনো উত্তর পাননি। পশ্চিমবঙ্গের নর্থবেঙ্গল ইউনিভার্সিটির ভূগোল বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক সুবীর সরকার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, তিস্তা প্রকল্পের অধীনে যে খাল খনন করার কথা বলা হচ্ছে সেটি আসলে নতুন কিছু নয়। বরং তিস্তা বাঁধ নির্মাণ মূল প্রকল্পেরই অংশ। তার মতে, প্রায় ২০ বছর আগে বাঁধ ও মূল খাল নির্মাণ শেষ হলেও এর পানি বণ্টন করার খালগুলো এখনো তৈরি হয়নি। এই খালগুলো তৈরি না হওয়ায় পানি সেচের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না এবং অপচয় হচ্ছে। যে জায়গা দিয়ে এই খালগুলো নির্মাণ করা হবে এতোদিন সেগুলো অধিগ্রহণ করা যায়নি বলে খালের নির্মাণকাজ আটকে ছিল। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ভূমির মালিকানা পাওয়ার কারণে এখন এটি খননের কাজ শুরু হচ্ছে। মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: ওদিকে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধাসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের দেয়া প্রতিবেদন বিচার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। বৃহস্পতিবারের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সেহেলী সাবরীন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনের পয়েন্টগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানকার পয়েন্টগুলো যাচাই বাছাই করতে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আহ্বার করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা কাজ করেছি। গত ২০শে মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়। অন্যান্য প্রসঙ্গ: এদিকে এক প্রশ্নের উত্তরে সেহেলী সাবরীন জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে দেশে আনতে কাজ করে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ মিশন থেকে অর্থ বেহাত হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেখানের মিশনে এটি জানতে চাওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেলেই সবাইকে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন সেহেলী সাবরীন।