দেশ বিদেশ
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচন চান বারের সাবেক নেতৃবৃন্দ
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ মার্চ ২০২৩, বৃহস্পতিবার
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সংকট উত্তরণে নতুন নির্বাচন চান বারের সাবেক নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ। গতকাল বার ভবনের হলরুমে সাবেক নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ সদস্যদের সমন্বয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি করেন তারা। বক্তারা বলেন, ১৫ ও ১৬ই মার্চ পুলিশ দিয়ে যে নির্বাচন করার চেষ্টা হয়েছে তা ব্যর্থ হয়েছে। সেদিন আসলে বারের কোনো নির্বাচন হয়নি। তাই বারের সংবিধান অনুযায়ী তলবী সভা করে ১৪ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করার দাবি জানানো হয়। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কমিটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। বক্তারা ১৫, ১৬ই মার্চ সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে কালো দিবস হিসেবে পালন করার দাবি জানান।
পরে মতবিনিময় সভায় বক্তাদের দাবির বিষয়গুলো আলোচনা করে সাবেক নেতৃবৃন্দরা পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্তগুলো হলো- ১. গত ১৫ ও ১৬ই মার্চ পুলিশ দিয়ে যে নির্বাচন করার চেষ্টা হয়েছে তা ব্যর্থ হয়েছে। সেদিন বারের কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২. ১ লা এপ্রিলের পূর্বেই বারের সংবিধান অনুযায়ী তলবী সভা করে ১৪ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে সংবিধান অনুযায়ী নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং বারের সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। বারের রুটিন কার্যক্রম কমিটি পরিচালনা করবে। ৩. বারের বর্তমান চলমান ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আপাতত স্থগিত করার জন্য সাবেক নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরে সোনালী ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে চিঠি প্রদান করবে। অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সিনিয়র ৩ জন সদস্য অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করবে। ৪. ১৫, ১৬ই মার্চ যেহেতু ভোটের নামে প্রহসন এবং ভোট ডাকাতি হয়েছে সুতরাং এই দিবসটি সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। ৫. যেহেতু ১লা এপ্রিল ২০২৩ থেকে কোনো কমিটি থাকবে না, সেহেতু বারের সাবেক সভাপতি, নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ ও বারের সিনিয়র সদস্যবৃন্দ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভোট ডাকাতির নির্বাচিত কমিটির নেতৃত্বকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাবেন।
বার ভবনের হলরুমে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সমিতির সাবেক সভাপতি, সহ-সভাপতি, সম্পাদকদের বেশ কয়েকজন অংশ নেন। এতে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সহ-সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম মেহেদী, একেএম জগলুল হায়দার, এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন, এডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সাবেক সহ-সম্পাদক ড. গোলাম রহমান ভূইয়া, এম. আসাদুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট বার সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পর নতুন নির্বাচনের দাবি করলেন বারের সাবেক নেতৃবৃন্দ। ওই দাবির প্রেক্ষিতে নবনির্বাচিত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নির্বাচন একতরফা হয়নি। আইনজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির জন্য গণতন্ত্রবিরোধী, ভোটবিরোধী, নির্বাচনবিমুখ, সন্ত্রাসী কর্মকা- করা বিএনপি’র দুই প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজলকে দায়ী করেন।
ইতিমধ্যে গত ১৮ই মার্চ সমিতির সম্পাদক মো. আবদুন নূর দুলাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে বলা হয়, আগামী ২রা এপ্রিল রোববার বিকাল সাড়ে তিনটায় সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সম্পাদকের ২০২২-২০২৩ সেশনের প্রতিবেদন উপস্থাপন, কোষাধ্যক্ষের অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন, নির্বাচন সাব-কমিটির আহ্বায়কের ২০২৩-২০২৪ সেশনের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা, নবনির্বাচিত কার্যকরী কমিটির পরিচিতি ও নবনির্বাচিত সভাপতির ভাষণ এবং বিদায়ী সভাপতির বিদায়ী ভাষণ।