ঢাকা, ১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনা

বড় ভাইয়ের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছোট ভাই

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
২২ মার্চ ২০২৩, বুধবার

খুলনা থেকে গত রোববার ভোরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়া ইমাদ পরিবহনের বাসটিতে ছিলেন ২ ভাই আশফাক উজ্জামান লিঙ্কন (৪০) ও ইসরাক হোসেন (৩৪)। এরমধ্যে ছোট ভাই ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজ কর্মস্থলের জন্য নেমে গেলেও বড় ভাই লিঙ্কন ঢাকা যেতে থেকেছেন বাসেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ঢাকায় পৌঁছানো হলো না তার। মাদারীপুরের শিবচরে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৯ জনের প্রাণ গেছে। মৃত্যুর এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন লিঙ্কনও। খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া এলাকার এই বাসিন্দা ২ ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। ছোট ভাই ও বোনের বিয়ে হলেও লিঙ্কন এখনো বিয়ে করেননি। তিনি ঢাকায় থাকতেন। করোনার শেষ দিকে খুলনায় আসেন এবং পজেটিভ শনাক্ত হলে হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারপর থেকে তিনি খুলনাতেই আছেন। রোববার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েও আর পৌঁছানো হয়নি তার। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনা ঘটলেও লিঙ্কনের পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সাড়ে ১১টার দিকে। আর লিঙ্কনের মৃত্যু নিশ্চিত হয় ১২টার দিকে। এ খবর তার বাবা শাহজাহান মোল্লাকে জানানো হয় দেড়টার দিকে। কিন্তু অসুস্থ মা হাসনা হেনাকে জানানো হয়নি। তবে বাড়িতে স্বজনদের আনাগোনা ও লোকজনের বিমর্ষ চেহারা মায়ের মন বুঝতে সময় নেয়নি। 

তাই তিনি ছেলের কথা বলছেন আর কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা শাহজাহান মোল্লা বলেন, ওরা ২ ভাই ভোর ৪টায় বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ছোট ছেলে ইশরাক রাজবাড়ীতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ম্যানেজার। আর বড় ছেলে লিঙ্কন ঠিকাদারি করে। এখন ছোট ছেলেই বড় ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসছে। লিঙ্কনের মেজো মামা হুমায়ুন কবীর বলেন, ইশরাক ও লিঙ্কন একত্রে যায়। ইশরাক ভাঙ্গায় নামে। আর সেখান থেকে রাজবাড়ীতে তার কর্মস্থলে চলে যায়। এরপরই সে খবর পায় বড় ভাই থাকা ওই বাসটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। সে লিঙ্কনের সঙ্গে কথা বলতে তার নম্বরে কল দেয়। ফোনটি একজন রিসিভ করে তাকে দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করে এবং জানায় ফোনটির মালিক সম্ভবত মারা গেছেন। এরপর সে রাজবাড়ী থেকে ঘটনাস্থলে যায়। তিনি বলেন, আমরা দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু নিশ্চিত হলেও বাবাকে জানাই দুপুর দেড়টার দিকে। মাকে ঘটনা জানাইনি। কিন্তু লোকজনে বাড়ি ভরে যাওয়ার পর মায়ের মন বুঝতে বাকি রাখে না। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। টুটপাড়ার ৯ নম্বর কবি নজরুল সড়কের ৩ তলার বাসায় লিঙ্কন তার বাবা মায়ের সঙ্গেই থাকতেন। 
উল্লেখ্য,  গত ১৯শে মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status