দেশ বিদেশ
এখন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারবে বড় জাহাজ
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার
পরীক্ষামূলকভাবে সফলতা পাওয়ার দুমাস পর ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) বড় জাহাজ ভেড়ানোর বিষয়ে সার্কুলার জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) বড় জাহাজ ভেড়ানো যাবে জানিয়ে এ সার্কুলার জারি করা হয়।
গত রোববার বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বড় জাহাজ ভেড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এর আগে গত ১৬ই জানুয়ারি বন্দরের চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালের (সিসিটি) ১ নম্বর জেটিতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো হয়। জানা যায়, লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়েলিং ফোর্ড’ গত এক বছর ধরে ৩টি বিষয়ে জরিপ চালিয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে চ্যানেলের যে অবস্থা এবং জেটি যেভাবে রয়েছে তাতে বন্দরে ঠিক কতো গভীরতা সম্পন্ন এবং দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো যায়, বন্দরের দুই তীরের কী পরিমাণ জায়গা জেটি বা ইয়ার্ড সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহার করা যায় এবং কোন ধরনের পদক্ষেপ নিলে বন্দরে সর্বোচ্চ কতো গভীরতা সম্পন্ন এবং দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো যাবে- এ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে জরিপটি চলে। এরমধ্যে গত মাসে পাঠানো ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বন্দরের যে অবকাঠামো রয়েছে তা ব্যবহার করে ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো যাবে। তবে বহির্নোঙ্গর ও গুপ্তখালের সন্নিকটের বাঁকে কিছুটা কাজ করে নদীর দুয়েকটি পয়েন্টে ড্রেজিং করলে বন্দর চ্যানেলে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে ও ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বর্তমানে বন্দরের জেটিতে ১৯০ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে। এ জাহাজগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার টিইউউএস কনটেইনার বহন করা যায়। ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়লে বন্দরে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার কনটেইনার পরিবহন করানো সম্ভব। বন্দরে আঠারোটি জেটি রয়েছে। সব জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না। তবে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) ১০ মিটার গভীরতা দেয়া সম্ভব। ফলে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি আরও সহজ হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে বন্দরে ১৬০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৭ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়ানো যেতো। ১৯৮০ সালে তা বাড়িয়ে ১৭০ মিটার লম্বা ও ৮ মিটার ড্রাফট করা হয়। ১৯৯০ সালে ১৮০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো হতো। ১৯৯৫ সালে ১৮৬ মিটার লম্বা ও ৯ দশমিক ২ মিটার ড্রাফট করা হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দরে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়ানো শুরু হয়।