বাংলারজমিন
সিরাজগঞ্জে কার্পাস তুলাচাষে ভাগ্য ফিরছে চাষিদের
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবারসিরাজগঞ্জের ৪টি উপজেলায় বেড়েছে কার্পাস তুলার চাষ। চলতি মৌসুমে সরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে ৫০০ হেক্টর জমিতে অন্তত ১ হাজার ৪০০ কৃষক তুলা চাষের বাম্পার ফলন পেয়েছে। লাভজনক ও ফলন ভালো হওয়ায় তুলাচাষে অনেকেই ভাগ্যবদল হওয়ায় ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে তুলাচাষিরা। কামারখন্দ তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ২৬০ টন। এবার চাষ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০০ টনে। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। এ হারে কৃষকের আয় হবে মোট মূল্যের ৭০ ভাগ। এই মৌসুমে জেলার সদর, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও আংশিক উল্লাপাড়া উপজেলায় এ কার্পাস তুলা চাষ হচ্ছে। বতর্মানে জেলার চার উপজেলার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা তুলা চাষ করছেন। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। প্রথমে তুলাচাষে আগ্রহ কম থাকলেও এখন চাষ বেড়েছে। জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার বারইভাগ এলাকার তুলাচাষি শহীদুল ইসলাম বলেন, গত মৌসুমে এক বিঘা জমিতে তুলাচাষে খরচ হয়েছিল ৫-৬ হাজার টাকা। অন্যদিকে উৎপাদিত তুলা বিক্রি হয়েছিল ৪০ হাজার টাকায়। এবার আমি ২ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বাজারমূল্য প্রতি কেজি ৯০ টাকা। তবে এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি ১ লাখ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার তুলা বিক্রি করতে পারবো। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের তুলাচাষি আলম সেখ বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে কার্পাস তুলাচাষে খরচ কয়েকগুণ কম। আমি সরকারিভাবে বীজ, সার ও ওষুধ পেয়ে চলতি মৌসুমে ৩৫ শতক জমিতে কার্পাস তুলা চাষ করেছি। কামারখন্দ (ভদ্রঘাট) তুলা উন্নয়ন বোর্ডের (কটন ইউনিট অফিসার) উজ্জ্বল চন্দ্র বলেন, উৎপাদিত তুলা বাজারজাতে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকেরা তুলা উৎপাদনে আগ্রহ দেখাতো না। উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় তুলাচাষে প্রণোদনাসহ উৎপাদিত তুলা বাজারজাতকরণের নিশ্চয়তা দেয় সরকার। একইসঙ্গে প্রণোদনা হিসেবে সরকারিভাবে বীজ, সার এবং ওষুধ বিতরণ করা হয় এবং উৎপাদিত তুলা ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির নিশ্চয়তা দেয়াতেই পাল্টে যাচ্ছে প্রান্তিক কৃষকের চিন্তাধারা। অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম হওয়ায় কার্পাস তুলাচাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক। আগামীতে তুলাচাষে এ এলাকার কৃষকের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে বলে তিনি জানান। জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের (উপ-সহকারী) কৃষি কর্মকর্তা শামিনুর ইসলাম শামীম বলেন, খাদ্যের পরই বস্ত্রের স্থান। আর এ বস্ত্রের ৭০ ভাগ আসে তুলা থেকে। তুলা একটি লাভজনক ফসল। দিন দিন এই এলাকায় তুলার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৫০০ টন। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। তবে তুলাচাষ কৃষি অফিসের আওতায় না হলেও সরকারের উন্নয়নে সহযোগিতা করার মনোভাব নিয়ে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।