ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শরীর ও মন

সার্জারি ছাড়াই পাইলসের সুচিকিৎসা

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল
৭ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবারmzamin

মলাশয়ের রোগগুলো হলো- এনাল ফিসার, পাইল্স, রেক্টাল পলিপ, রেক্টাল ক্যান্সার, আইবিএস, পাইলোনিডাল-সাইনাস, এনাল আবসেস, রেক্টাল প্রলাপস, এনাল ওয়াট ইত্যাদি। এই রোগগুলোর মধ্যে সাধারণত রোগীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন পাইল্স রোগে। পাইল্স রোগটির কিছু বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা রয়েছে এবং নিয়ম অনুসরণ করে রোগটির যথাযথ চিকিৎসা করলে সহজেই পাইল্স নিরাময় হয়। দীর্ঘদিন ধরে বাসা বেঁধে থাকা পাইল্সও অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। সর্বনাশটা হয় হাতুড়ে এবং অপচিকিৎসার মাধ্যমে এবং অপচিকিৎসার মাধ্যমে পাইল্স রোগটির জটিলতা আরও বেড়ে যায়।
পাইল্স হলে বা হয়ে গেলে বেশি চিন্তার প্রয়োজন নেই। সাধারণত মলাশয়ের একটি সাধারণ রোগ হলো পাইল্স রোগ। এ রোগটি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে এবং এর ধরনও আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। উপসর্গ অনুযায়ী শতকরা ৯০ ভাগ পাইলসের রোগী সার্জারি ছাড়াই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ভালো হয়ে যান। জটিলতা হয় পাইলসের রোগীদের নিয়ে অপচিকিৎসায়। তাই আমরা যতটুকু পারি, সচেতন করার চেষ্টা করি, যাতে রোগীরা শুরুতে সঠিক চিকিৎসা করে ভালো থাকেন।

বিজ্ঞাপন
সাধারণত যে পাইলসগুলো ভেতরে থাকে তা হলো- ইন্টারনাল পাইল্স। আর যে পাইল্স থাকে বাইরের দিকে, তা হলো এক্সটারনাল পাইলস বা এক্সটারনাল হেমরয়েড।
 

উপসর্গ: মলত্যাগের পর রক্ত যাবে এবং রক্ত যাওয়ার সঙ্গে সাধারণত কোনো ব্যথা হয় না। অনেক সময় বেশি রক্তও যায়। পাইল্স যদি প্রথম ধাপে হয়, সেক্ষেত্রে মলদ্বারে বাড়তি মাংসের মতো কোনো কিছুই থাকে না। শুধু মলত্যাগের পর তাজা রক্ত যায়।
আর যদি দ্বিতীয় গ্রেডের হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে মলত্যাগের পর তাজা রক্ত যায়, সাধারণত ব্যথা হয় না এবং মলত্যাগের পর মনে হয়, ভেতর থেকে কি যেন বাইরের দিকে বের হয়ে আসে এবং সেটি এমনিতেই ভেতরে ঢুকে যায়। কারও যদি তৃতীয় ধাপের পাইল্স হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে মলত্যাগের পর বাড়তি মাংসের মতো বের হয়, আগে এমনিতেই ঢুকে যেত এখন চাপ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়। যদি চতুর্থ ধাপের পাইল্স হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আগে মলত্যাগের পর বাড়তি যে মাংসটি বের হতো সেটি এমনিতেই ঢুকে যেত, এখন আর ঢুকছে না, এ রকম সমস্যা নিয়ে অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। অনেক সময় পাইল্স-এর ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে, এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। একে বলা হয় থ্রবোসড পাইল্স। পাইলসের চিকিৎসা তার ধরনের বা উপসর্গের ওপর নির্ভর করে এবং সার্জারি করতে হবে কি-না তা পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা নির্ধারণ করে থাকেন।

যদি প্রথম ধাপের পাইল্স হয়ে থাকে এবং রোগীরা শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে আসেন, সেক্ষেত্রে; কিন্তু কোনো অপারেশনের প্রয়োজন হয় না। এ ধরনের রোগীকে ওষুধ দেওয়া হয় এবং পায়খানা স্বাভাবিক করার জন্য নরম খাবারসহ প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, পানি পান করতে হবে। যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে, তাহলে মল নরম করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হয়। সাধারণত প্রথম ধাপের পাইল্স শুধু অভিজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী ভালো হয়ে যান। যদি ওষুধে কাজ না হয়, তখন বিনা অপারেশনের মাধ্যমে বেন্ডিং বা সেক্লরো থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। যেমন রিং লাইগেশন, ইনজেকশন। কারও যদি দ্বিতীয় ধাপের পাইল্স হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রেও অপারেশন করতে হয়।
 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ), কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। চেম্বার: ১৯ গ্রীন রোড, এ.কে. কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা। ফোন: ০১৭১২-৯৬৫০০৯

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2023
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status