দেশ বিদেশ
২৫০ প্রতিবন্ধীকে আশার আলো দেখাচ্ছেন সিদ্দিক উল্যাহ
স্টাফ রিপোর্টার
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
প্রতিবন্ধীদের মধ্যে কেউ কেউ অদম্য মেধাবী। লেখাপড়ায় আলো ছড়াচ্ছেন। কিন্তু অনেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও বেকার। সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েও চাকরি পাচ্ছেন না। সমস্যা একটাই তারা প্রতিবন্ধী। সরকারি চাকরিতে চূড়ান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কোটা পূরণ করা হলেও প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ হচ্ছে না। প্রতিবন্ধীদের কোটা বরাদ্দের কথা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। ২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েও শতাধিক প্রতিবন্ধী চাকরি পাননি। এদের মধ্যে একজন মো. মাহবুব শেখ। বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ করেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা দেন। তবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেও চাকরি পাননি মাহবুব। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো কারণ ছাড়াই চূড়ান্ত নিয়োগে তাকে বাদ দেয়া হয়। বাগেরহাটের পার্থ প্রতিম মিস্ত্রি, নারায়ণগঞ্জের পারুল বেগম, লালমনিরহাটের রেজওয়ান হোসেন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেও নিয়োগ পাননি। চাকরি না পাওয়া এমন সংক্ষুব্ধ ২৫০ প্রতিবন্ধী এবার নিয়োগ পেতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তারা ২০২০ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ পাননি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর পরিদপ্তরে ঘুরেও কাজ হয়নি। পরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার সহায়তায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের জন্য ১১৪টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রতিবন্ধী কোটায় কেন তাদের নিয়োগ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। মুন্সীগঞ্জের রাসেল ঢালী সিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার আইনি সহায়তায় হাইকোর্টের রায়ে চাকরি পান। শুধু রাসেল ঢালীই নন, প্রতিবন্ধীদের পাশে থাকতে বরাবরই ইচ্ছা পোষণ করেন সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। বিনা ফিতে দিতে চান আইনি সহায়তাও। এর মাঝে বিনা খরচায় আইনি সেবা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার এই কৃতি সন্তান। যে কোনো চাকরিতে অধিকার বৈষম্যে সব সময় পাশে দাঁড়ান তিনি। এজন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়তই সরকারি-বেসরকারি চাকরিপ্রত্যাশীরা তার কাছে আসছেন। পরীক্ষায় পাস করেও নিয়োগ বঞ্চিতদের আশার আলো দেখান সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। নিজ খরচে দরিদ্র চাকরিপ্রত্যাশীদের যাতায়াতের ব্যবস্থাও করে থাকেন। এজন্য তিনি গরিবের আইনজীবী উপাধি পেয়েছেন। এডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, সরকার কোটা পদ্ধতি চালু থাকার পরও কেন প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ হচ্ছে না- সেটি বোধগম্য নয়। শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরিই নয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যেকোনো সমস্যায় আইনি সহায়তা দিতে চাই। এক্ষেত্রে আমার কোনো ধরনের পারিশ্রমিক লাগবে না।