খেলা
অবশেষে জয়ের দেখা চট্টগ্রামের
স্পোর্টস রিপোর্টার
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার
টানা ৭ হারের লজ্জার শঙ্কায় ছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। প্রথম চার ম্যাচে দুই জয় পেলেও এরপর আর জয়ের মুখ দেখেনি শেষ আসরে প্লে অফ খেলা চট্টগ্রাম। এরই মধ্যে ছিটকে পড়েছে বিপিএলের রেস থেকে। অন্যদিকে চলতি আসরে ৩ ম্যাচ জেতা ঢাকা ডমিনেটর্সের একই অবস্থা। নিজেদের শেষ ম্যাচে সান্তনার জয়ই ছিল তাদের লক্ষ্য। সুযোগও এসেছিল। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে চ্যালেঞ্জার্সরা ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৮ রানে থামে। ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাও ভালো হয়েছিল ঢাকার। কিন্তু চট্টগ্রামের দারুণ বোলিংয়ের সামনে শেষ ম্যাচে করে অসহায় আত্মসমর্পণ। ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলে শেষ হয় তাদের ইনিংস। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হারে ১৫ রানের ব্যবধানে। এমন ম্যাচ হারের পর দলের অধিনায়ক ও টুর্নামেন্টের এখন পর্যন্ত সেরা উইকেট শিকারি নাসির হোসেনও জানালেন তাদের হতাশার কথা। নাসির বলেন, ‘আসলে আমার মনে হয়েছে শেষ ম্যাচ, ক্রিকেটারদের তেমন কোনো পাওয়ার লক্ষ্য ছিল না। বিশেষ করে ব্যাটাররা যেন হালই ছেড়ে দিয়েছিল। তবে বোলাররা ভালো করেছে। কিন্তু যারা ব্যাট করতে এসেছে দায়িত্ব নিতে পারেনি। অনেক গা ছাড়া ব্যাট করেছে।’ জয়ের জন্য ১১৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ঢাকার ওপেনার সৌম্য সরকার। চট্টগ্রামের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর করা দ্বিতীয় ওভারে ৩টি চার মারেন তিনি। দলীয় ২২ রানে আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ২ রানে আউট করে চট্টগ্রামকে প্রথম সাফল্য এনে দেন শুভাগত। ষষ্ঠ ওভারে থামেন সৌম্য। কার্টিস ক্যাম্পারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৬ বলে ২১ রান করেন একবার জীবন পাওয়া সৌম্য। তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আরিফুল হক। ৭ রানে ফেরেন তিনি। মিডল-অর্ডারে ছোট ছোট ইনিংস খেলে ঢাকাকে জয়ের পথে রেখেছিলেন অধিনায়ক নাসির হোসেন ও ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স ব্লেক। তবে নাসিরকে ২৪ রানে ক্যাম্পার ও ব্লেককে ১৩ রানে ফিরিয়ে দেন নিহাদুজ্জামান। এতে ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। দলীয় ৯৮ রানে অষ্টম উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে ঢাকা। জাহিদুজ্জামানকে ১৮ ও শরিফুল ইসলামকে ৩ রানে আউট করেন মৃত্যুঞ্জয়। হামজাকে ১ রানে আউট করেন ক্যাম্পার। ম্যাচ জিততে এমন অবস্থায় ২ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ওভারে ১৯ রান দরকার পড়ে ঢাকার। জিয়ার করা ঐ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩ রান নিতে পারে ঢাকা। ক্যাম্পার ৩টি এবং মৃত্যুঞ্জয়-জিয়া ২টি করে উইকেট নেন। টুর্নামেন্টে ১২ ম্যাচ খেলে ৩ জয় ও ৯ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখন পঞ্চম স্থানে ঢাকা। অন্য দিকে ১১ ম্যাচে ৩ জয় ও ৮টি হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে চট্টগ্রাম। চট্ট্রগামের অবশ্য এখনো এক ম্যাচ বাকি। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক শুভাগত হোম। কিন্তু ঢাকা ডমিনেটর্সের দুই বোলার আরাফাত সানি ও আল-আমিন হোসেনের তোপের মুখে পড়া চট্টগ্রাম সাত ওভারে ২৮ রানেই ৫ উইকেট হারায়। ওপেনিং জুটিতে ১৮ রান যোগ করেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার মেহেদি মারুফ ও ইরফান শুক্কুর। পঞ্চম ওভারে ব্যক্তিগত ৭ রান করা শুক্কুর সানির শিকার হলে প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। পরের ওভারে ব্যক্তিগত ৮ রানে রান আউট হন আরেক ওপেনার মারুফ। এরপর ভারতের উন্মুক্ত চাঁদকে খালি হাতে বিদায় করেন আল আমিন। চট্টগ্রামের মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটার আফিফ হোসেন ও শুভাগতকে ১ রানের বেশি করতে দেননি সানি। শুরুতেই মহাবিপদে পড়ে যাওয়া চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন পাকিস্তানি ব্যাটার উসমান খান ও আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৯ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৪তম ওভারে ক্যাম্পারকে ১১ রানে আউট করে জুটি ভাঙেন আফগানিস্তানের স্পিনার আমির হামজা। পরের ওভারে উসমানকে ব্যক্তিগত ৩০ রানে থামিয়ে ইনিংসে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন সানি। ২৯ বল খেলে ৪টি চার মারেন উসমান। ১৭তম ওভারে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৫ রানে রান আউট হন আফগানিস্তানের দারউইশ রাসুলি। এতে ৮ উইকেটে ৮০ রানে পরিণত হয় চট্টগ্রাম। তবে শেষ দিকে ২০ বলে ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে চট্টগ্রামকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন জিয়া। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। বল হাতে ২২ রানে ৪ উইকেট নেন সানি।