প্রথম পাতা
প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশিদের বর্ণনা
মাটির সঙ্গে মিশে গেছে সুউচ্চ ভবনগুলো
হাফিজ মুহাম্মদ, আঙ্কারা, তুরস্ক থেকে
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবারতুরস্কে ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। হতাহতের সংখ্যার সঙ্গে বাড়ছে নিখোঁজের সংখ্যাও। স্বজনদের আহাজারিতে প্রকম্পিত চারপাশ। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাসের ট্রাবজন সড়কের দু’পাশের বিল্ডিং যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া গাজিয়ান্তেপের কয়েকশ’ বছরের পুরাতন ‘গাজিয়ান্তেপ দুর্গ’ লণ্ডভণ্ড হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে মালাতিয়া প্রভিন্সের গ্রান্ড মসজিদও। এদিকে ভূমিকম্প ভোর রাতে হলেও একের পর এক আফটার শক হচ্ছে। পরবর্তীতে ১০৫ টির অধিক আফটার শক অনুভূত হয়। দুপুর ২.৩০ এর দিকে মালাতিয়াতে পুনরায় ৭.৬ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইস্তানবুলেও বিকালে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলেন তখন। তিনি যে বিল্ডিংয়ে থাকেন সেটিও ফাটল ধরেছে। ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর একটি হচ্ছে আদানা। এখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিও কিছুটা বড়। তবে এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি সকলে সুস্থ আছেন বলে জানা যায়। বড় কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি কায়সেরি ও আঙ্কারায়। তবে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। কায়সেরিতে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ফারহানা চৌধুরী রুমি বলেন, ভূমিকম্পে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তারা তাদের ডরমিটরি থেকে নিচে চলে আসেন। একই সময় বাইরে তুষারপাত হচ্ছিল। ঠাণ্ডায় তারা কাবু হয়ে গেছেন। তিনি জানান, তাদের ভবনগুলো ঠিক থাকলেও ছাত্রদের ডরমিটরিতে ফাটল ধরেছে। কাহরামানমারাসে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা খুবই কম। তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও অন্য দুইজন সম্পর্কে কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তুরস্কের দক্ষিণ অঞ্চলীয় ১০টি শহরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১১ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়েছে। আহত হয়েছে ৮ হাজারের কাছাকাছি এবং ২৮২৪টি ভবন ধসে পড়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বরাতে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনদলু এজেন্সি জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কাহরামানমারাসের পাজারজিক জেলা শহর। গতকাল ভোররাত ৪টা ১৭ তে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৭। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমিকম্পে কাহরামানমারাস ছাড়াও গাজিয়ান্তেপ, মালাতিয়া, আদানা, হাতাই, দিয়ারবাকির, আদিয়ামান, উসমানিয়ে, সানলিউরফা, কিলিস বিভাগের ২ হাজারের অধিক বিল্ডিং ধ্বংস হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন অনেক মানুষ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করছেন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।