ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

সোনাইমুড়ীতে মাটিখেকোদের কবলে ফসলি জমি

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার
mzamin

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলাব্যাপী ফসলি জমি মাটি খেকোদের কবলে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু লোকজনের যোগসাজশে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিচয়ে রাঘববোয়াল’রা দিনের পর দিন ফসলি জমির মাটি কেটে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলছে। রাঘববোয়ালরা জড়িত থাকায় মাটি খেকোদের প্রতিরোধে কৃষি অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন চরম অসহায়!  উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলা নাটেশ্বর ইউপি’র আবুল খায়েরের ছেলে সালাউদ্দিন, একই এলাকার সাত্তার, চৌধুরী, বেল্লাল, কৃষ্ণপুর এলাকার কিরণ, বারগাঁও ইউপি’র গ্রিন পার্কের ম্যানেজার মো. আজমল, একই ইউপি’র জসিম, সাত্তার মিয়ার ব্রিক ফিল্ডের শাকিল, দুলাল, কিরণ, আনোয়ার, সোনাপুর ইউপি’র মনির, আমিশাপাড়া ইউপি’র রিপন, বজরা ইউনিয়নের মটুবি ও রাজারামপুর এলাকায় মো. হোসেন, মামুন, জয়াগ ইউনিয়নের বাওর কোট এলাকার মো. স্বপন, বজরা ইউনিয়নের অন্য এলাকায় পার্শ্ববর্তী উপজেলার আখের মাঝিসহ অনেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে ফসলি জমিতে ৩-৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নির্বিচারে ফসলি জমি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি ও ট্রাক্টর, মিনি ট্রাক দিয়ে পরিবহনে রাস্তাঘাটে গর্ত, কালভার্ট বিধ্বস্তকরণসহ জনচলাচলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এসব মাটি পরিবহনের ফলে রাস্তাঘাটে ধুলোবালিতে পরিপূর্ণ হয়ে বাতাসে মিশে পথচারীর বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। ফলে দিন দিন জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরিকৃত রাস্তাঘাট বিপর্যস্ত হচ্ছে। নাটেশ্বর ইউপি এলাকায় বিধি পরিপন্থি ভাবে ফসলি জমিন কেটে পরিবেশ বিনষ্ট করার বিষয়ে জানতে চাইলে, নাটেশ্বর ইউপি’র মাটি খেকো কন্ট্রাক্টর সালাউদ্দিন বলেন, আমি স্থানীয় এমপি সাহেবের ভাতিজা, পরিবেশ অধিদপ্তর- নোয়াখালী ও উপজেলা  প্রশাসনকে ম্যাানেজ করেই মাটির ব্যবসা করছি, এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো কিছু জানার থাকলে এমপি সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নির্দেশনা দেন। কৃষি জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করে নাম সর্বস্ব মূল্যে মাটি কিনে ফসলি জমি ও পরিবেশ বিনষ্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বারগাঁও ইউপি’র গ্রিন পার্কের ম্যানেজার মো. আজমল সাংবাদিকদের কাছে মাটি কেনা-বেচার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আপনাদের কোনো কিছু জানার থাকলে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। কৃষ্ণপুর এলাকার অজি উল্যা ও আরিফ বলেন, আমার বাড়ির পাশে কালভার্ট ভেঙে ফেলায় তাদেরকে বললাম কি শুরু করেছো! জবাবে মাটির কন্ট্রাক্টর বলে, পরিবেশ অধিদপ্তর, থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনসহ সবদিক ম্যানেজ করেই মাটির ব্যবসা করছি।  নাটেশ্বর ইউপি’র কৃষক আবু নাছের, বজরা এলাকার মোরশেদ, বাওর কোট এলাকার শফি উল্যা, মাসুদসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, মাটি খেকোরা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন ভেকু মেশিনে মাটি কেটে ট্রাক্টর-মিনি ট্রাক দিয়ে বহন করে।

বিজ্ঞাপন
রাস্তাঘাট পুল কালভার্টকে জনচলাচলের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে, তারা আরও বলেন ইউএনও মাঝে মাঝে নাম কাওয়াস্তে মোবাইল কোর্টে সহনীয় পর্যায়ে জরিমানা করলেও মাটি খেকোদের রুখতে কোনো কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করে না। মাটি খেকোদের রুখতে তাদের ব্যবহৃত এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন, মাটি পরিবহনের ট্রাক্টর-ট্রাক জব্দ ও মাটি খোকোদের পরিবেশ আইনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিলেই মাটি খেকোদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সস্প্রসারণ কর্মকর্তা নুরে আলম চৌধুরী বলেন, ফসলি জমি রক্ষায় জমির মাটি বিক্রি না করতে উপজেলার সব কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এভাবে মাটি কাটা প্রতিরোধের বিষয়ে এজেন্ডাভিত্তিক আলোচনা হয়। ইউএনও ও এসিল্যান্ড স্যার মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে অভিযান করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

মোবাইল হ্যান্ডসেট/ ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ এখন সংকটে

মৌলভীবাজারে জাতীয় পার্টির সম্মেলন সম্পন্ন / ‘আমরা আওয়ামী লীগে নেই, বিএনপিতেও নেই

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status