ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

বিয়ের প্রলোভনে দায়মুক্তিপত্র আদায় সেই বিয়ে নিয়েই জাবি শিক্ষকের প্রতারণা

জাবি প্রতিনিধি
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার
mzamin

ছাত্রীদের শিক্ষক বানানো ও বিয়ের প্রলোভনে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ছবি ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিপাকে পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি। শুরু হয় ক্যম্পাসজুড়ে আন্দোলন। সহকারী প্রক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। এই কমিটির শাস্তি থেকে বাঁচতে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে আবারো বিয়ে ও উন্নত জীবনের লোভ দেখিয়ে লিখে নিয়েছেন অভিযোগের দায়মুক্তিপত্র। লেখায় বিশ^বিদ্যালয়ের দুই প্রক্টর সহযোগিতা করেছেন দাবি ওই ছাত্রীর। এই সহযোগিতাকে ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। তবে এবারো হয়েছেন প্রতারিত। দায়মুক্তিপত্র ভিসি’র কাছে জমা হওয়ার পরপরই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এই শিক্ষক। তাইতো পূর্বের দায়মুক্তিপত্র প্রত্যাহারের জন্য পুনরায় ভিসি বরাবর আবেদন করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের ৪৩ ব্যাচের এই ছাত্রী।

বিজ্ঞাপন
গত বছরের ২৪শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় মাহমুদুর রহমান জনির উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে দিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানো হয়। পরে গত ১৬ই জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর দায়মুক্তি পত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন ওই ছাত্রী। এতে উল্লেখ করেন, ‘মাহমুদুর রহমান জনি আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। পরে কীভাবে দরখাস্ত লেখা যায়- সে বিষয়ে প্রক্টর স্যারের কাছে পরামর্শ নেয়া হয়। প্রক্টর স্যার কিছু পয়েন্ট বলে দেন এবং গুছিয়ে লিখতে বলেন। এ ছাড়া আরেকজন সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কিছু সাংবাদিক প্রক্টর অফিসে চলে আসে। তাই আমাকে বের করে শৈবাল স্যারের গাড়িতে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর বাকি লেখা সম্পন্ন করা হয়। পরদিন প্রক্টর স্যারের বাসায় আবেদনটি জমা দিই।’ বিয়ের প্রলোভনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার না করার শর্তে জনি আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে আমার থেকে ভিসি বরাবর চার পৃষ্ঠার একটি দায়মুক্তিপত্র লিখিয়ে নেয় এবং যথারীতি সে একজন প্রতারক। তার প্রতারণা এরপরও অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায় সব সত্য বিষয়গুলো আমি সবার সামনে আনতে চাই। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কাছে দায়মুক্তিপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জেনেছি। তারা দায়মুক্তি পত্রের ওপর ভিত্তি করে মিস লিড হচ্ছে। কিন্তু আসল সত্যটা সবার জানা উচিত বলে মনে করি।’ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী আরও বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সময়ে ওই শিক্ষক ও তার স্ত্রী পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নন্দিতা সরকারের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক, সর্বশেষ সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও নির্যাতিত হয়েছি।’ অভিযোগের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, ‘তাকে দিয়ে জোরপূর্বক দায়মুক্তিপত্র লেখাতে যাব? আমার উপস্থিতিতে সে নিজেই প্রক্টরের বাসায় গিয়ে দায়মুক্তিপত্র জমা দিয়েছে। যেহেতু প্রক্টর স্যারকে জমা দিয়েছে, সেহেতু স্যার ভালো বলতে পারবে। আমি কিছুই লেখিনি। আমি এর মধ্যে নাই। আমি আমার পরিবারের বাইরে এখন কোনো কিছুর মধ্যেই নাই।’ চাপ প্রদানের অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘চাপে ফেলে কাউকে কোনো কিছু লেখায়নি এবং কী লিখেছে, কী লেখেনি আমি কোনো কিছুই জানি না এবং লেখার সময়ও আমি ছিলাম না। আমার অফিস বন্ধ থাকায় বাসায় এসে একটি মুখবন্ধ করা চিঠি দিয়ে যায়। আমি সেটা খুলেও দেখিনি। আমি ভিসি বরাবর জমা দিয়েছি।’ এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান জনির বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। ভিসি অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘দায়মুক্তি পত্র পেয়েছি। কিন্তু ভুক্তভোগী সরাসরি আমাকে দেয়নি। এটা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছে। তাই আমি এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলবো না।’

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক/ এবারো ভোগাতে পারে ১৩ কিলোমিটার

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status