ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

পরিকল্পনা ছিল ২০২৩ সালে কোনো লোডশেডিং হবে না

কাজী সোহাগ
২৫ জানুয়ারি ২০২৩, বুধবার
mzamin

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ৩৩তম বৈঠক। উপস্থিত ছিলেন ছয়জন    এমপি। আর ১৯ জন বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করা হয়। এরমধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় ২০২৩ সালে দেশে কোনো লোডশেডিং হবে না। সঙ্গে সঙ্গে এমপিরা বিষয়টি নিয়ে স্পষ্টভাবে জানতে চান। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি মো. আলী আজগার বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে বলে অনেক অপপ্রচার ছড়িয়েছে। রিজার্ভ, খাদ্যশস্য, দুর্ভিক্ষ নিয়েও অনেক অপপ্রচার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে এ সকল বিষয় মোকাবিলা করছেন। তিনি বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থাতেও আগামী ২০২৩ সালে কোনো লোডশেডিং না হওয়ার বিষয়টি সম্ভব হবে কিনা তা জানতে চান।

বিজ্ঞাপন
বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, মূলত গ্যাস সরবরাহজনিত সমস্যার কারণে পূর্বে বিদ্যুতে সমস্যা হয়েছে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০২৩ সালে অনেকগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এ প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে বিদ্যুতে কোনো লোডশেডিং হবে না মর্মে তিনি আশ্বস্ত করেন। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সচিব আরও বলেন, ২০২৩ সালে যাতে কোনো লোডশেডিং না হয় সে বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সংসদীয় কমিটিকে আশ্বস্ত করার পরও চলতি বছরে ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে দিনে ছয় থেকে সাতশ’ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

 দেশের কোনো কোনো এলাকায় দিনে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। শীত মৌসুমে তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ চাহিদার সময়ও চলছে লোডশেডিং। ঢাকার বাইরে অনেক এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানির অভাবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখের পর থেকে দেশে ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। শীত মৌসুমে গড়ে প্রতিদিন বিদ্যুৎ চাহিদা ৯ থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ৯ হাজারের কিছু বেশি। বিদ্যুৎ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন বিদ্যুতের উৎপাদন ও পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯শে জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১০ হাজারের একটু বেশি। সর্বনিম্ন উৎপাদন হয় ৬ হাজার ৬৯৫ মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১০ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। যদিও উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। সংকট স্বীকার করে দায়িত্বশীলরা বলছেন, কয়লার অভাবে একদিকে রামপাল আর অন্যদিকে পায়রা থেকে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ মিলছে না। আবার ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় কয়লার আমদানিও হচ্ছে না পর্যাপ্ত। যে কারণে লোডশেডিং হচ্ছে সারা দেশেই।

 মন্ত্রণালয়ের জবাব পাওয়ার পর সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব দিয়ে সংসদ সদস্য আলী আজগার বলেন, সরকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে আগামী ২০২৩ সালে লোডশেডিং হবে না। এ বিষয়ে মোবাইলে এসএমএস কিংবা অপর কোনো মাধ্যমে সংসদ সদস্যসহ প্রতিনিধিগণকে অবহিত করলে তাদের মাধ্যমেই তৃণমূল পর্যায়ে জনগণ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় এ অগ্রগতির বিষয়টি মন্ত্রণালয় বা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্রিফ করার মাধ্যমে জাতিকে অবহিত করার জন্য তিনি বলেন। এ বিষয়ে কমিটির পরামর্শ মোতাবেক বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় উন্নতি ও অগ্রগতির বিষয়টি জাতিকে অবগতি করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে সচিব জানান। সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, নভেম্বরে ওই প্রস্তাব দেয়া হলেও পরে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি মন্ত্রণালয়। তাছাড়া কমিটির বৈঠকে যেভাবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে যে ব্রিফিং দেয়া হয়েছিলো বর্তমানে তার বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। তবে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদীয় কমিটির ওই বৈঠকে এমপিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-সংসদীয় কমিটির সভাপতি সংরক্ষিত আসনের এমপি ওয়াসিকা আয়শা খান, হবিগঞ্জ-৩ আসনের আবু জাহির, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আলী আজগার, বগুড়া-৩ আসনের নূরুল ইসলাম তালুকদার, সংরক্ষিত মহিলা আসনের খালেদা খানম ও নার্গিস রহমান। 

অন্যদিকে ১৯ জন শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. নিজাম, অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয়) এস এম এনামুল কবির, যুগ্ম সচিব (সমন্বয়) মো. জাহিদুল ইসলাম, পাওয়ার এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)-এর চেয়ারম্যান মুনীরা সুলতানা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) চেয়ারম্যান মোহাং সেলিম উদ্দিন ও (অর্থ) দীপংকর বিশ্বাস, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো)-এর চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, কোল পাওয়ার জেনারেশন পরিদপ্তরের পরিচালক মো. রুকন উদ্দিন, প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শক (সিইআই) খায়ের মো. আক্কাস আলী, নওপাজেকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌ. এ এম খোরশেদুল আলম, ইজিসিবি’র পনা পরিচালক মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.), বি-আর পাওয়ারজেন লিঃ-এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী আশুতোষ রায়, পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, ডিপিডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ জান, ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম এবং উপ-সচিব ও কাউন্সিল অফিসার আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status