বাংলারজমিন
প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন ফুটপাথে, নার্স এনে প্রসব করালো পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৫ জানুয়ারি ২০২৩, বুধবারসোমবার রাত সাড়ে ৯টা। চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান মোড়ের অন্ধকার গলির এক জায়গা থেকে নারীকণ্ঠে ভেসে আসছিল গোঙানির শব্দ। অনেকেই পাশ কাটিয়ে গেছেন, কৌতূহলে আবার পথচারীদের কেউ কেউ উঁকি মেরেও দেখছিলেন। দু’একজন খেয়াল করে দেখলেন, ওই নারী মূলত প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন। সেই কাতরানি বাড়ছে মিনিটে মিনিটে। এমন দৃশ্য দেখে প্রান্ত নামের এক পথচারী জাতীয় জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনাটি জানান। ঢাকা ঘুরে সেই খবর চলে আসে জামালখান এলাকায় থাকা কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টহল টিমের কাছে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ওই টিম। উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা খেয়াল করে দেখেন, ওই নারী বাচ্চা প্রসবের শেষ মুহূর্তে অতিক্রম করছেন। রক্তপাত হচ্ছিল তার শরীর থেকে।
এসআই মোস্তফাসহ তার পাঁচ সদস্যের টিম দৌড়ে যান সেই হাসপাতালে। বুঝিয়ে বলতেই জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামসহ নার্সরা দ্রুত পৌঁছে যান ‘বীর চট্টলা’ রেস্টুরেন্টের পাশের গলির সেই জায়গায়। নার্সদের চেষ্টা, পথচারীদের উৎকণ্ঠা মাড়িয়ে এর মিনিট দশেকের মাথায় জামালখান মোড়ে রাস্তার উপরে ওই নারীর গর্ভ ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে ফুটফুটে এক নবজাতক ছেলে সন্তান। কিন্তু মায়ের অবস্থা তখন খুবই খারাপ। ‘ইনোভা’ নামের সেই বেসরকারি হাসপাতালে সেই পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো অবস্থা নেই। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের একটি এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন। এরপর সেই এম্বুলেন্সে মা ও নবজাতককে নিয়ে এসআই মোস্তফা ও তার টহল টিম গেলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মা-ছেলে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জাহিদুল কবির মানবজমিনকে বলেন, ওই নারীর প্রচুর রক্তপাত হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে এম্বুলেন্সযোগে উক্ত নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমের দায়িত্ব নেন। বাচ্চা ও মা বর্তমানে সুস্থ আছে। এ ব্যাপারে হাসপাতালকে অবহিত করা হয়েছে। এভাবে বাংলাদেশ পুলিশের সকল ইউনিটের সদস্যগণ সার্বক্ষণিক অসহায় মানুষের পাশে থাকবে।