ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

সিলেটে সুলতানার দাবিদার দুই স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২০ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার
mzamin

আইরিন সুলতানার দুই স্বামী। নগরের রাস্তায় তাকে নিয়ে চলছে টানাটানি। কে নেবে সুলতানাকে। ডিভোর্স হয়নি প্রথমজনের সঙ্গে। দ্বিতীয় জনের সঙ্গেও বিয়ে হয়ে গেছে। সংসার করছেন তারা। বিষয়টি সুরাহার জন্য  নেয়া হলো এক মহিলা কাউন্সিলরের কাছে। সেখানেও কোনো সুরাহা আসেনি। পরে তাদের পুলিশের সোপর্দ করা হয়। এদিকে- গতকাল পুলিশ তাদের আদালতে প্রেরণ করে।

বিজ্ঞাপন
কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার শাহজাহান মিয়ার মেয়ে আইরিন সুলতানাকে ১৯ বছর আগে বিয়ে করেন চাঁদপুর শাহরাস্তি থানার বাদিয়া গ্রামের রুস্তুম আলীর ছেলে মো. খোকন মিয়া। বিয়ের পর তাদের ঘরে চার সন্তান। এক পর্যায়ে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সিলেটে আসেন। প্রায় তিন বছর আগে চলে যান মালদ্বীপ। এরপরই সুলতানা নানাজনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার কাউয়াদি গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে কবির হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুলতানার। ১৫ মাস আগে সিলেটে কোর্ট ম্যারেজ করেন কবির এবং সুলতানা। চার সন্তান ও স্বামী খোকনের সংসার ছেড়ে সুলতানা চলে যান কবিরের ঘরে। কবিরের সঙ্গে বিয়ের সময় সুলতানা নিজেকে তালাকপ্রাপ্ত বলে দাবি করেন। এদিকে- সন্তানদের ফেলে স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে মালদ্বীপ থেকে সিলেটে ফিরেন খোকন মিয়া। খুঁজতে থাকেন স্ত্রীকে। বুধবার বিকাল ৫টায় সিলেট মহানগরের লামাবাজারস্থ আয়েশা মেডিকেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে রাস্তায় সুলতানাকে দেখেন খোকন। এ সময় সঙ্গে ছিল কবিরও। কবির হোসেন দক্ষিণ সুরমার কদমতলীস্থ ড্রাইভার রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি। বিয়ের পর সুলতানাকে তিনি আয়েশা মেডিকেয়ারে আয়া’র চাকরি পাইয়ে দেন। আয়েশা মেডিকেয়ারের সামনে স্ত্রীকে জাপটে ধরেন প্রথম স্বামী। বাধা দেন দ্বিতীয় স্বামী। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 

এক স্ত্রী ও দুই স্বামী নিয়ে টানাটানির ঘটনায় ভিড় জমে এলাকায়। শেষে খোকনের এক সঙ্গী তাদের তিনজনকে সিএনজি অটোরিকশাতে তুলে নগরীর উপশহরে কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা লাকীর অফিসে নিয়ে যান। গতকাল কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা লাকী মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আমি বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আইনি জটিলতা থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি জানান- পরকীয়ায় পড়ে কবিরের সঙ্গে ঘর ছাড়ে সুলতানা। প্রথম তরফের চার সন্তানই রয়েছে খোকনের কাছে। এ কারণে সুলতানা প্রথম স্বামীর সঙ্গে যেতে প্রথমে সম্মত ছিলেন। পরে কী হয়েছে আমি জানি না। এদিকে- সিলেটের শাহ্পরাণ থানা পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনাস্থল কোতোয়ালি থানায় হওয়ায় তাদেরকে কোতোয়ালিতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়। তবে- ওই সময় থানা থেকে সটকে পড়ে প্রথম স্বামী খোকন। এর ফলে দ্বিতীয় স্বামী কবির সহ সুলতানাকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। গতকাল সকালে সুলতানা ও কবিরকে কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সারা দিন গড়িয়ে গেলেও খোকনের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি কিংবা তিনি থানায় এ দু’জনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও দায়ের করেননি। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে কোতোয়ালি থানা পুলিশ  সুলতানা ও কবিরকে আদালতে প্রেরণ করে। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানিয়েছেন- কেউ মামলা না করায় তাদের মেট্রো আদালতে সোপর্দ করা হয়। তিনি বলেন- কেউ মামলা করলে আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিতাম। কিন্তু দিনভর অপেক্ষার পরও কেউ মামলা দেননি। এদিকে- সিলেটের কোর্ট পুলিশের প্রসিউকিশন কর্মকর্তা এএসআই মাসুদ আহমদ জানিয়েছেন- মেট্রো আইনে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে জরিমানা গ্রহণপূর্বক তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিকালেই তারা জামিন পান বলে জানান তিনি।  

 

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status