রাজনীতি
গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচিতে গণঅধিকারের অনীহা
নাইম হাসান
(২ মাস আগে) ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৫ অপরাহ্ন

ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় কর্মসূচি হিসেবে আজ সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ। বিক্ষোভ সমাবেশটি সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করছে না গণঅধিকার পরিষদ।
গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য দলের চেয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক কাঠামো অনেক ভালো। সমাবেশে দলের লোকসমাগমও অনেক বেশি হয়। তবে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য নেতারা গণঅধিকার পরিষদকে তেমন মূল্যায়ন করছে না। তারা ভাবেন- এটা একটা নতুন দল। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের তরুণ নেতৃবৃন্দরা অনেকটা হতাশ।
এছাড়া গত ১১ই জানুয়ারি যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর দেশে এসে সরাসরি প্রেস ক্লাবের সমাবেশে যোগদান করার কথা ছিলো। এই কারণে তিনি এয়ারপোর্টেও মিডিয়ায় কথা বলেননি। গণঅধিকার পরিষদের নেতারা জানান, নুরের সমাবেশে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি গণতন্ত্র মঞ্চের অন্য নেতাদের জানালেও তারা সমাবেশ দীর্ঘায়িত না করে দ্রুত শেষ করে দেন। এই কারণে নুর সমাবেশে যোগদান করতে পারে না।
আজকের কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদ যোগ দেবে না জানিয়ে সংগঠনটির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান মানবজমিনকে বলেন, আমাদের যেহেতু একটি ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে উত্থান হয়েছে, আন্দোলনটা সামনের দিকে কিভাবে এগিয়ে নিতে হবে এক্ষেত্রে আমাদের একটা অভিজ্ঞতা আছে। সে অভিজ্ঞতা সবার শোনা উচিত এবং আমাদের মূল্যায়ন করা উচিত। ২০-৩০ বছর আগে যারা আন্দোলন করেছেন, সেটার প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিলো এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ২০১৮ সাল থেকে আমরা রাজপথে কয়েকটা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি এবং আমরা সফল হয়েছি। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি তরুণদেরকে প্রাধান্য দিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া দরকার। দলে তরুণদের মূল্যায়নের জায়গাটা একটু বাড়ানো দরকার।
পাঠকের মতামত
গণতন্ত্র মঞ্চ যাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে গণঅধিকার তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ভালভাবে জানে। শুধু মাত্র ওয়ান ম্যানের মিডিয়া উপস্থিতিতে আন্দোলন দুরে থাক; দলও গঠণ হয় না। রাজনীতিতে পুরাতনদের দল গঠণ, দলের নেতা তৈরি, কর্মী তৈরিতে তারা কতটুকু অভিজ্ঞ নতুন প্রজন্মের সংগঠণ গণঅধিকার পরিষদ ভালভাবে জানা উচিত ছিল। যা হবার হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদকে এককভাবে নিজদল গঠণে মনোযোগ দিতে হবে। এজেন্ডা ঠিক করে বিভাগ, জেলা ও মহানগর কমিটি অতি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কেন্দ্রের মত বিভাগীয় কমিটিতে যেন প্রত্যহ কর্মসুচি থাকে। সাংগঠনিক তৎপরতা থাকে।
ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের 'উকিল তত্ব' কতোটা ফলদায়ক তা জানার জন্য নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আওয়ামী লীগের ৩ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা খুবই তাৎপর্যবহ। যেখানে জন্মলগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতি করা লোক নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে আওয়ামী লীগের কাছে আত্মসমর্পণ করে, সেখানে দলীয় স্বার্থে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ কোরবানি দিতে দ্বিধাবোধ করছেনা আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এটা একটা মৌলিক পার্থক্য। এই পার্থক্যের কারণে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে। বিএনপির নেতৃত্বের দুর্বলতা নাকি কিছু কিছু নেতার সুবিধাবাদী নীতি তা চিহ্নিত করা দরকার। তবে যাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়টি পাকাপোক্ত হয়েছে হঠাৎ করে তাদের মতবিরোধ দুর্বল নেতৃত্বের ফলে হতে পারে। সরকারের চাপের কথা বলা হবে। কিন্তু, সুদৃঢ় নেতৃত্বের চুম্বকীয় শক্তির জোর যদি চাপ মোকাবিলা করতে না পারে তাহলে নেতৃত্বের দুর্বল দিকটাই সামনে আসে। বিএনপির নেতৃত্বকে মনে রাখতে হবে নির্বাচনের এখনো এক বছর বাকি। এক বছর আগেই যদি দলে ও জোটে অনৈক্য দেখা দেয় তাহলে আগামী এক বছরে অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দলের ও জোটের সুবিধাবাদীদের চিহ্নিত করা জরুরি এবং তাদেরকে দলমুক্ত করাও জরুরি।