বাংলারজমিন
বন্ধ করা অবৈধ ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট , জানে না প্রশাসন
হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
২৫ নভেম্বর ২০২২, শুক্রবার
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে প্রশাসনের বন্ধ করে দেয়া দু’টি ইটভাটায় আবারো শুরু হয়েছে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। গত ১৮ই এপ্রিল হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে উপজেলার ৩টি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ইটভাটাগুলো হলো- বলড়া ইউনিয়নের সততা ব্রিকস, আমিন ব্রিকস ও স্বাধীন ব্রিকস। হাইকোর্টের দেয়া ঢাকাসহ ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটা সম্পর্কিত নির্দেশের প্রেক্ষিতে উপজেলার এই ৩টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু গত এক মাস ধরে আবারো ইটভাটার কার্যক্রম চালু করেছে সততা ও স্বাধীন ব্রিকস। নিয়মিত ইট তৈরির পাশাপাশি দু’টি ভাটায় ইট পোড়ানোও হচ্ছে। নিষিদ্ধ হলেও ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সরজমিন সততা ও স্বাধীন ব্রিকসে গিয়ে দেখা যায়, দু’টি ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। অর্ধশতাধিক শ্রমিক মাটি প্রস্তুত, ইট তৈরি, শুকানো এবং পোড়ানোর কাজ করছেন। শ্রমিকরা জানান, প্রায় এক মাস ধরে দু’টি ভাটার কাজ চলছে। তবে ইট পোড়ানো হচ্ছে সপ্তাহখানেক ধরে। তিন সপ্তাহ ধরে সততা ব্রিকসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন বলে জানান ভেলাবাদ থেকে আসা লিটন। তিনি বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে ইটভাটার কাজ চলছে। সততা ব্রিকসের আরেক শ্রমিক বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে ভাটার কাজ চলছে। আমরা ১৯ জন শ্রমিক প্রতিদিন ৩০ হাজার করে ইট তৈরি করছি। এক সপ্তাহ ধরে ভাটায় ইট পোড়ানো চলছে। স্বাধীন ব্রিকসের শ্রমিক আলামিন বলেন, ‘ভাটার কাজ শুরু হয়েছে প্রায় মাসখানেক আগে। আমি ৪দিন ধরে কাজে এসেছি। তিনদিন যাবৎ ৩টি চেম্বারে ইট পোড়ানো চলছে। প্রতিটি চেম্বারে ১৬ হাজার ইট ধরে।’ ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। তবে আগুন ধরানোর সময় কাঠ ব্যবহার করা হয়। প্রতিবার আগুন ধরাতে প্রায় ৩০০-৪০০ মণ কাঠ পোড়াতে হয়।’ সততা ব্রিকসের মালিক ও বলড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোসলেম উদ্দিন খান কুন্নু বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টে মামলা করেছি। মামলা চলছে। উপজেলায় রাস্তা তৈরি, ঘর নির্মাণসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। আমরা ইট প্রস্তুত না করলে সরকারি কাজই তো চলবে না।’ অপরদিকে স্বাধীন ব্রিকসের মালিক শীতল চৌধুরী ও সজীব বলেন, ‘ইটভাটায় আমরা ৪জন অংশীদার। আমাদের ভাটার কাগজপত্র নবায়ন না থাকায় গত বছর প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছিল। এ বছর আমরা সব কাগজপত্র ঠিক করতে ঢাকায় পাঠিয়েছি। তবে ঠিক হয়ে এখনো আসেনি।’ হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যদি আবার ভাটা চালু করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুর আলম বলেন, ‘দ্রুতই আমরা অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে নামবো।’ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ‘তারা আবারো ভাটা চালু করেছে এটা জানা ছিল না। দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’