প্রথম পাতা
এক দুর্ঘটনায় থেমে গেল ৩ দম্পতির জীবন
এ ছবি এখন কেবলই স্মৃতি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫ মে ২০২২, রবিবারডা. বাসুদেবের পরিবার
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশেই ধান মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন ফিরোজ মোল্লা ও তার স্ত্রী রুমা বেগম। আরেক নবদম্পতি মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন বাড়ি। ঢাকা থেকে প্রাইভেটকারে স্ত্রী-সন্তানসহ অসুস্থ মাকে দেখতে বাড়ি যাচ্ছিলেন বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক বাসুদেব সাহা। মহাসড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনা একসঙ্গে কেড়ে নিয়েছে তাদের প্রাণ। একসঙ্গে তিন দম্পতির এমন করুণ মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ সবাই। পরিববারগুলোতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঢাকা থেকে রওনা হয়ে পদ্মায় ফেরিতে উঠার পর চিকিৎসক বাসুদেব সাহা স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে ছবি তোলে ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন। এই ছবি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিন জনই একসঙ্গে ছবি হয়ে যান। তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সহকর্মীদের মাঝে।
বাস প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন।
ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা রাজিব পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মিল্টন বাজার এলাকায় পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা প্রাইভেটকার ও কাশিয়ানী সদর থেকে ছেড়ে আসা মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে সড়কের পাশে ধান মাড়াইয়ের কাজ করা শ্রমিক ও মেশিনের ওপর গিয়ে পড়ে। প্রাইভেটকারে থাকা চার জন ও ধানের কাজ করা স্বামী-স্ত্রী সেখানেই নিহত হন। সড়কে মোটরসাইকেলে থাকা নবদম্পতির মৃত্যু হয় বাসের চাপায়।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি হাসান জানান, রাজিব পরিবহন নামে একটি বাস মাওয়া থেকে খুলনার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় কাশিয়ানী উপজেলার মিল্টন বাজার এলাকায় খুলনা থেকে ঢাকাগামী একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে তিনটি বাহনই দুমড়ে মুচড়ে ঘটনাস্থলেই ৭ জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আহত ৩০ জনের মধ্যে ১৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- গোপালগঞ্জের দিদার শরীফ (৫০), সোবাহান (৩৮), রুমা (৩০), মাসুম মোল্লা (১৩), ইসমত আরা (৪০), আলিফ (৫), সিফাত (৩), নড়াইলের বাদল (২৫), বায়েজিদ (১২), মারুফ (২২), ঢাকার আরজু বেগম (৩৫), ফারুক হোসেন (৫০), হীরা বেগম (৩৬), হাওয়া বেগম (৩৪), হোসাইনুর (১২), আব্দুর রহমান (৫), পিরোজপুরের কালাম মোল্যা (৪৭), কামরুল (৪৬), শরীয়তপুরের জোহরা (৭৫)।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, গোপালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন এবং জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।