খেলা
টাইগারদের গতিতে মুগ্ধ ‘সাদা বিদ্যুৎ’
স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৩ মে ২০২২, শুক্রবার
অনুশীলনের একটি মুহূর্ত যেন নষ্ট করতে চান না অ্যালান ডোনান্ড। সংবাদ সম্মেলনে যখন সাংবাদিকরা তার অপেক্ষায় তখন মাঠে তার মনোযোগ নেট বোলারদের নিয়ে। লম্বা সময় তাদের সঙ্গে কথা বললেন, দিলেন টিপসও। বাকি সময় কাটিয়েছেন জাতীয় দলের পাঁচ পেসারকে নিয়ে। বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ হয়ে এসেছেন ‘সাদা বিদ্যুৎ’ খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা ক্রিকেটার। দায়িত্ব নিয়েই পেয়েছেন একঝাঁক প্রতিভাবান পেস বোলার। বিশেষ করে টেস্ট বোলার ইবাদত হোসেন চৌধুরী ও খালেদ আহমেদকে দেখে তিনি চমকে গেছেন বলেই জানান। ডোনাল্ড বলেন, ‘আমি মনে করি আমার জন্য সবচেয়ে বড় চমক ছিল ইবাদত এবং খালেদ। আমি তাদের ইঞ্জিন ক্ষমতা দেখে বিস্মিত। ফাস্ট বোলিং হলো বিশাল সাহস এবং সংকল্প। আমি এর আগে টেস্ট ম্যাচে দুই স্পিনার এবং দুই সিমারকে দেখিনি, কিন্তু তারা যেভাবে নিজেদের পরিচালনা করেছে, যেভাবে নিজেদের কাজ করেছে, বিশেষ করে ডারবান টেস্টে- অসাধারণ। যে একটা ঘণ্টায় আমরা পিছিয়ে গিয়েছিলাম এটা বাদে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুই টেস্টে অলআউট করা দারুণ নৈপুণ্য ছিল। যা দেখলাম তাতে আমি অনেক খুশি। আমি মনে করি প্রতিটি একক প্রশিক্ষণ সেশনে আমরা যে আলোচনা করেছি, এবং এর থেকে আমরা যে শিক্ষা লাভ করি তা যথেষ্ট। আমরা যেখানে যাচ্ছি তাতে আমি সন্তুষ্ট।’
চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই পেসার ও দুই স্পিনার নিয়েই রণপরিকল্পনা সাজাবে বাংলাদেশ এমনটাই জানা গেছে। কারা সেই দুই পেসার! দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইনজুরি নিয়ে ফিরে আসা তরুণ পেসার শরিফুল এখন ফিট। জানা গেছে তিনি একাদশে অন্যতম পছন্দ। এই তরুণকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ডোনাল্ডও। তিনি বলেন, শরিফুলকে দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ ছিলাম বিশেষ করে ওয়ানডেতে। আমি তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দেখেছি। সে খুব দারুণ ছিল। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে তাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের উইকেটে পেসারদের দারুণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এই কন্ডিশনে পেস বোলারদের সুবিধা পাওয়া বেশ কঠিন। তবে দায়িত্ব নিয়েই নয়া কোচ ডোনাল্ড খুঁজে বের করেছেন পেসারদের সাফল্য পাওয়ার পথ। তার মতে নতুন বল গুরুত্বপূর্ণ। পুরোনো বলে বোলিংয়ের ওপরও দেয়া হচ্ছে জোর। তিনি বলেন, ‘আমাদের আজকের অনুশীলনটা ছিল পুরোনো বলের বোলিং নিয়ে। প্রতিটি সেশনে বল রিভার্স সুইং করানো নিয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের পুরোনো বলে খুবই ধৈর্যশীল হতে হবে। সঙ্গে সৃষ্টিশীল হতে হবে। আমাদের অবশ্য এই উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হবে, সেটা নিয়ে কিছু বলতে হবে না। ওরা এসব উইকেটেই বল করে অভ্যস্ত। তবে আমার মনে হয়, সার্বিকভাবে আমরা কতটা ধৈর্য ধরতে পারি, কতটা সৃষ্টিশীল হতে পারে, সেটার পরীক্ষাই হবে এ সপ্তাহে।’
ডোনাল্ড বলেন, ‘এখানকার কন্ডিশনে সবারই খুব ঘাম ঝরবে। আর্দ্রতা খুবই বেশি। উপমহাদেশে সাধারণত যেমন থাকে আরকি। ৩০ ওভারের পর আমরা নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কতটা চাপ তৈরি করতে পারি, সেটা দেখতে হবে। আর অবশ্যই, বল পুরোনো হলে রিভার্স সুইং করাতে হবে। সুতরাং আমাদের ধাপে ধাপে এগোতে হবে। তবে এই কন্ডিশন অবশ্যই পেসারদের পরীক্ষা নেবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মানসিক শক্তি, সৃষ্টিশীলতা ও শৃঙ্খলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
১৫ই মে শুরু হবে চট্টগ্রাম টেস্ট। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট কেমন হচ্ছে তা নিয়ে বেশ আলোচনা। ব্যাটসম্যানদের জন্যও উইকেট হতে পারে স্বর্গরাজ্য। গতকাল সকাল থেকেই ম্যাচ পরিস্থিতিতে অনুশীলন করে টাইগাররা। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়কে লম্বা সময় ম্যাচের আবহে অনুশীলনের সুযোগ দিয়ে পরে নাজমুল হোসেন শান্ত-মুমিনুলরাও একে একে ব্যাটিংয়ে নামেন। দুজনের ব্যাটিংয়ে আম্পায়ারের ভূমিকায় দেখা যায় পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে। টেস্টে উইকেটকিপিং করেন লিটন কুমার দাস। তামিম-জয়ের ওপেনিং জুটির প্রস্তুতির মঞ্চে তিনিও কিপিংয়ের প্রস্তুতিটা ঝালিয়ে নেন। এক প্রান্ত থেকে বোলিং করেন বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম। আরেক প্রান্তে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা খালেদ আহমেদ। দুজনকেই ভালোভাবে সামলান তামিম-জয়।