ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে

স্টাফ রিপোর্টার
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, শুক্রবার
mzamin

‘বিএনপি’র হাঁটু ভাঙা’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সোনার ছেলেদের হাতে তারা লাঠি তুলে দিচ্ছে। ইডেন কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে এই সরকার।  গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি’র কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলার প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।   তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং, মিছিলে ও ছাত্রদের ওপর লাঠি, বন্দুক, টিয়ারগ্যাস দিয়ে আক্রমণ করা শুরু করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তার মানে তারা এরইমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। বুধবার ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি’র নাকি হাঁটু ভাঙা।

 আমরা কিন্তু লাঠিও নিইনি। তারপরও ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে।

বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ একটা সন্ত্রাসী দল উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু লাঠি নয়, রাম দা, কুড়াল নিয়েছে। তাদের জন্ম হয়েছে সন্ত্রাসের মধ্যদিয়ে। এজন্য তারা একদিকে বলে আমাদের সোনার ছেলেদের হাতে কলম তুলে দিয়েছে। অন্যদিকে সেই সোনার ছেলেদের হাতে লাঠি, বন্দুক, রাম দা তুলে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে শুধু তা নয়, নিজেরাও সংঘাতে জড়িয়েছে। ইডেন কলেজে নিজেরা মারামারি করে একটা ন্যক্কারজনক অবস্থা সৃষ্টি করেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা জনগণের সঙ্গে নাই। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। সেজন্য আজকে আপনাদের এই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়।  তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে আমরা গত ২২শে আগস্ট থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছি, সেখানে তারা পুলিশের গুলিতে নূরে আলম, রহিম, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের দুই শাওনসহ ৫ জনকে হত্যা করেছে। যখন সবাই জেগে উঠছে তখন এই আন্দোলনে দমন করার জন্য তারা সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারা গুম করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজকে ২৫ হাজারের মতো তারা আসামি বানিয়েছে, আমাদের ৩ হাজার ছেলেমেয়েদের আহত করেছে।  

ফখরুল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত ছেলেরা এখানে এসেছিল, আজকে আমাদের একজন ছেলে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এভাবে অসংখ্য নেতাকে তারা আহত করছে, হত্যা করছে। মুন্সীগঞ্জের কর্মকর্তা বললেন ইটের আঘাতে নাকি শাওন মারা গেছে, কিন্তু ওই শাওনের ডেথ সার্টিফিকেট যখন দেয় তখন ডাক্তার পরিষ্কার করে বলেছে মাথায় বন্দুকের গুলিতে শাওনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে সমানে মিথ্যাচার করছেন। ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগের আমলে সব নির্বাচন নাকি সুষ্ঠু হয়, মানুষ ভোট দিতে পারে। নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নাকি ক্ষমতায় এসেছেন তারা। অথচ বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার সেই বক্তব্য শুনে হাসছে।  বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি আপ্যায়ন হয়েছে লাঠি দিয়ে। ছাত্রদল ফুল আর মিষ্টি নিয়ে গেছে ভিসির সঙ্গে দেখা করতে। আর সেখানে অতিথি আপ্যায়ন হয়েছে লাঠির মাধ্যমে। 

এমনভাবে ছেলেমেয়েদের পেটানো হয়েছে, সাপকে মানুষ এভাবে পেটায় না। স্বৈরাচারকে হটাতে গেলে অনেক বাধা আসবে বলে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা এসব বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাবো। তবে বড় ধরনের কোনো বাধা আসলে তা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা বিএনপি জানে। বিএনপি’র এ নেতা বলেন, ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করবে, সেটা ভুলে যান। দেশের জনগণ এটা করতে দেবে না। আমরা আপনাদের প্রতিহত করতে প্রস্তুত। তবে আমরা মিটিং মিছিল করবো আর সেখানে গুলি করবেন, সেটা আমরা যেকোনো ভাবে প্রতিহত করবো। মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বললেন, লাঠি খেলা চলবে না। আর পুলিশ বলছেন, লাঠি নিয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। আমরা লাঠি নিয়ে কোথাও যাই না। আপনারা ঘোষণা দেবেন লাঠি নিয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। অন্যদিকে লাঠি দিয়ে পেটাবেন, এটা তো ভালো কথা হলো না।

 তিনি আরও বলেন, আমরা লাঠি মিছিল করি না। আমরা লাঠি খেলাও করি না। ওটা আপনারা (আওয়ামী লীগ) করেন। আপনারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে যে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা দেশের মানুষ কখনো ভুলবে না। ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায়  প্রতিবাদী ছাত্র সমাবেশে সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শাম্মী আকতার, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, এসএম জিলানী, মোনায়েম ?মুন্না, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, রাকিবুল ইসলাম ও আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বক্তব্য দেন।  

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status