ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

রাজনৈতিক সহিংসতা সুষ্ঠু নির্বাচনের বড় প্রতিবন্ধকতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
mzamin

রাজনৈতিক সহিংসতাকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা মনে করছেন ঢাকায় নিযুক্ত  মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের। কোনো পক্ষ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। গতকাল আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম)- এর নিয়মিত মাসিক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহম্মেদ। সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী, আমলা, শিক্ষক, গবেষক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়াও শ্রমিক নিরাপত্তা, বিনিয়োগ, মিয়ানমার ইস্যুসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে ৫টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমত, শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন
দ্বিতীয়ত, এ দেশের প্রতিশ্রুত গণতন্ত্র, বহুদলীয় গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা, স্বচ্ছতা, সুশাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা। তৃতীয়ত, সামাজিক ও পরিবেশগত প্রতিকূলতা মোকাবিলায় সক্ষমতা। চতুর্থত, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরা পর্যন্ত তাদের আশ্রয় দেয়া। পঞ্চমত, এই চার লক্ষ্য সার্থকভাবে পরিপালন করলে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শ্রমমান উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়া। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ভিত্তিতে এসব অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে পিটার হাস বলেন, দুঃখজনকভাবে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের অনুকূলে নেই। তবে অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের মতো যুক্তরাষ্ট্রও রোহিঙ্গাদের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজন মিটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মার্কিন উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রয়োজন হবে। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যুক্তরাষ্ট্র সফরে গত সপ্তাহে মার্কিন এফডিআইয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে বিনিয়োগের পরিবেশ।  এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, মার্কিন উদ্যোক্তারা কোনো দেশে বিনিয়োগের আগে দুর্নীতি সংক্রান্ত বাস্তবতা, সহজ ব্যবসা পরিবেশ, দক্ষ শ্রমশক্তির সহজপ্রাপ্যতা ও বেশি মুনাফার বিষয়টি বিবেচনা করে। দুঃখজনকভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। জিএসপি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, শ্রমিক নিরাপত্তা প্রশ্নে বাংলাদেশের জিএসপি স্থগিত করা হয়। এখনো রপ্তানি পণ্যের বাইরে স্থানীয় বাজারের জন্য যেসব পণ্য উৎপাদিত সেগুলোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি নেই। শ্রম আইনের জটিলতাও এখনো কাটেনি। এ ছাড়া শ্রমঅধিকার এবং সিবিএ (কালেকটিভ বার্গেনিং এজেন্সি) যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) শুল্কমুক্ত রপ্তানিতে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়টিও জড়িত। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের মধ্যকার আগামী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংলাপে এ নিয়ে আলোচনা হবে। ভূ-রাজনীতি এবং ভূ-অর্থনীতি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন ব্যাহত হচ্ছে। নেতিবাচক এই প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হবে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, গবেষণা সংস্থা সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার। এনবিআর’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status