বাংলারজমিন
সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি আজ শুরু
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবারজেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে সিলেটে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এতে ঘুরবে না গাড়ির চাকা। পণ্যসহ সব ধরনের পরিবহন শ্রমিকরা এ কর্মবিরতিতে অংশ নেবেন বলে মানবজমিনকে জানিয়েছেন জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ময়নুল ইসলাম।
তিনি জানান, জেলা প্রশাসক প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে শনিবার থেকে সিলেট জেলায় পণ্য পরিবহনের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। টানা তিনদিন তারা কর্মবিরতি পালন করলেও তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়নি। এ কারণে আজ থেকে তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। এ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রেবাস, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। রোববার সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক শেখ এমরান হোসেন ঝুমু, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম এ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন- বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত সিলেটের গণপরিবহন-পণ্য পরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে বঞ্চিত ও অবহেলিত। বৃহত্তর সিলেটের লাখ লাখ শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী ও মালিক-শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম পাথর কোয়ারি। কিন্তু ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের মদতপুষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে সিলেটের কোটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। ২০১৮ সালে বন্ধ করে দেয়া হয় সিলেটের সকল পাথর কোয়ারিসমূহ। ফলে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুঃখ ও দুর্দশা। কর্মহীন হয়ে পড়েন বৃহত্তর সিলেটের প্রায় কোটি মানুষ।
বর্তমানে রোজগারবঞ্চিত সিলেটের প্রান্তিক এ জনপদে বিরাজ করছে দুর্ভিক্ষাবস্থা। স্মারকরিপিতে তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার বাস-মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০ বছর এবং ট্রাক-পিকআপ কাভার্ডভ্যান ২৫ বছর, সিএনজি ও ইমা লেগুনার ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে। সিলেটের সকল পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালুমহাল এবং পাথর কোয়ারি খুলে দিতে হবে। বিআরটিএ কর্তৃক সকল গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণ পরিবহন ও পণ্য পরিবহনের ওপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। সিলেটের সকল ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুৎ মিটার ফেরত ও ভাঙচুরকৃত মিলের ক্ষতিপূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর ও বালুর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সড়কে বালু ও পাথরবাহী গাড়িসহ সকল ধরনের পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এসব ঘটনার জন্য দায়ী জেলা প্রশাসককে তারা সিলেট থেকে প্রত্যাহারের আল্টিমেটামও দিয়েছেন।