বাংলারজমিন
সুনামগঞ্জে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের বালু বিক্রি হচ্ছে অন্যত্র
এম.এ রাজ্জাক, সুনামগঞ্জ থেকে
৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবারসুনামগঞ্জে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের উত্তোলিত বালু ব্যবসায়ীদের নিকট বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। অপরদিকে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করার ফলে হুমকির মুখে পড়ছে নদী পাড়ের কৃষিজমি, ঘাটসহ ঘরবাড়ি। ড্রেজার দিয়ে বালু বন্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না গ্রামবাসী। উল্টো তাদের প্রতিনিয়ত মামলা হামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারের লোকজন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জলিলপুর গ্রামের সুরমা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে নৌকায় লোড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা মতে, উত্তোলিত বালু গোডাউনে আনলোড করার কথা থাকলেও অবাণিজ্যিক বালু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার। দিনের ১৩ ঘণ্টায় ৫ নৌকা মাটি প্রকল্পে যাওয়ার কথা থাকলেও যাচ্ছে ২ থেকে ৩টি। উত্তোলিত বালু হবতপুরসহ শহরে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করছে তারা। রাতের আঁধারেও হবতপুর ডাম্পিং স্টেশনে নৌকা থেকে বালু বিক্রি করে তারা।
জানা যায়, সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার ১৩টি সারের বাফার গুদাম নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায়, বাংলাদেশ ডক ইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড নির্মাণ করছে। জেলা বালুমহাল কমিটি, নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট রাজস্ব, ভ্যাট ট্যাক্সের বিনিময়ে ৭ লাখ ঘনফুট বালু ও বালু মিশ্রিত মাটি উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করে। প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার জলিলপুর ও ব্রাহ্মণগাঁও মৌজায় সুরমা নদীর চর থেকে বালু ও বালু মিশ্রিত মাটি উত্তোলনে অনুমতি দেয় জেলা বালুমহাল কমিটি। বিষয়টি তদারকির জন্য সহকারী কমিশনার ভূমি সপ্তাহে নির্ধারিত বালু উত্তোলন নিশ্চত করে জেলা প্রশাসকে রিপোর্ট করেন। স্থানীয় শামিম নামে একজন জানান, দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা ডেজার মেশিন চালিয়ে এখান থেকে বালু লোড নৌকায় করে নিয়ে যাচ্ছে। করিম নামে একজন জানান, খেয়ালখুশি মতো ড্রেজার চালানোর ফলে নদী ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে জলিলপুর, হবতপুর, ব্রাহ্মণগাঁওসহ গ্রামের কৃষিজমিও খেলার মাঠ। ড্রেজার চালক হুমায়ন কবির বলেন, বালু বিক্রি ও রাতে ড্রেজার চালানোর অভিযোগটি সঠিক না। সার সংরক্ষণ ও বিতরণ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা আক্কাছুল হাবিব জানান, মেশিনের সমস্যার কথা বলে সাইটে নিয়মিত মাটি না ফেলার বিষয়টি ঠিক না। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা জেরিন বলেন, অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নিবেন তিনি।