ঢাকা, ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

টেকনাফে টানা ভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে দেড় হাজার পরিবার

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার
mzamin

কক্সবাজারের টেকনাফে কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ডুবে গেছে কয়েকশ’ ঘরবাড়ি। দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিনগামী যাত্রীবাহী সার্ভিস বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড় ধসের শঙ্কায় পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। 
কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও ৪ঠা জুলাই সন্ধ্যা থেকে টেকনাফে একটানা ভারী থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত শুরু হয়। যা সোমবার বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারের টেকনাফে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ অবস্থায় টেকনাফ উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। সোমবার সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কম-বেশি নিম্নাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি রয়েছে শত শত পরিবার। ওই পরিবারগুলো এখনো পর্যন্ত চুলোয় আগুন জ্বালাতে পারেনি। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব পরিবারগুলোকে। টেকনাফ পৌরসভার কলেজ পাড়ার অধিকাংশ বসতবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া, টেকনাফ সরকারি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরো প্রাঙ্গণ পানিতে একাকার। হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী, ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজার, ফুলের ডেল এলাকা, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী, লম্বা বিল, কানজর পাড়া, মিনা বাজারসহ সরকারি বরাদ্দকৃত ঘরবাড়ি ও ওয়াব্রাংয়ের সরকারি বরাদ্দকৃত ঘরবাড়ি বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সাবরাং ইউনিয়নের কুরাবুইজ্জা পাড়া, ফতেহলিয়া পাড়া, মুন্ডার ডেইল, চান্দলী পাড়ার একাংশ, হাদুর ছড়া, খুরের মুখের অধিকাংশ বসতবাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। হ্নীলার রঙ্গিখালী এলাকার কামাল উদ্দিন জানান, পূর্ব রঙ্গিখালী গ্রামের প্রায় ৩০০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভুগছি। অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে অস্বাভাবিক জীবনযাপন হয়ে পড়ে। এই সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান এখনো গৃহীত হয়নি। অনেক সময়ই শুকনো খাবার বা তাৎক্ষণিক সহায়তা পেয়েছি। তবে, বারবার এই সাময়িক সহায়তা আমাদের সমস্যার মূল সমাধান নয়। আমরা ত্রাণ চাই না, আমরা একটি স্থায়ী সমাধান চাই। প্রয়োজনে আমরা নিজেরা শ্রম দেবো, সরকারিভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করে পানি নিষ্কাশনের বা জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ চাই। টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বশির আহমদ বলেন, ভারী বৃষ্টিতে অনেক বাড়িঘরে পানি ঢুকে বাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। মূলত কিছু দুষ্কৃতকারী কর্তৃক খাল দখলের পাশাপাশি ড্রেন পরিষ্কার না থাকায় এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সাবরাংয়ের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, এভাবে একটানা বৃষ্টিতে চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। খাওয়া-দাওয়া করতে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জনজীবন অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন জানান, টানা বৃষ্টির প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পানিবন্দি পরিবারগুলোর নিকট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে মাইকিং করা হয়েছে।

 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

দেনমোহর কমাতে অভিনব কৌশল/ তালাকের পর আবার বিয়ে, কিছুই জানে না গৃহবধূ

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status