বাংলারজমিন
জুলাই আন্দোলনে আহত ইয়ামিনের কপালে জোটেনি চিকিৎসা
বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবারনেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের আশিয়ল গ্রামের ১৪ বছরের ইয়ামিন। বাবার মৃত্যুর পর গাজীপুরে গিয়ে একটা হোটেলে চাকরি নেন। হোটেল থেকে পাওয়া রোজগারের টাকা দিয়েই চলতো তার পরিবার। গত বছরের ৫ই আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে যোগ দেয় ইয়ামিন। এক সময় ১৬-১৮টি রাবার বুলেট গিয়ে বিঁধে তার সারা শরীরে। গুরুতর আহত ইয়ামিনকে গাজীপুরের মডার্ন হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে কাজে ফিরলেও এখনো শরীরে রয়ে গেছে ১২-১৪টি রাবার বুলেট। বর্তমানে প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে থমকে আছে তার চিকিৎসা। জানা গেছে, শুরুর দিকে কিছুদিন চিকিৎসা নিলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। অর্থ সংকটের কারণে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারিভাবে তেমন কোনো অনুদানও পাননি তিনি। জুলাই আন্দোলনের আহতদের তালিকায় নামও ওঠেনি তার। কোনো রকম সহযোগিতাও জোটেনি। এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ দুর্দশায় পড়েছেন তিনি।
ইয়ামিন জানান, গত ৫ই আগস্ট যখন মার্চ টু ঢাকার ডাক দেয়া হয় তখন সবার সঙ্গে আমিও আন্দোলনে যোগ দেই। ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনে এগোতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকলে তার দুই হাত, বুক, পিটসহ শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় থাকে উদ্ধার করে গাজীপুরের মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায় তার বন্ধুরা। কিন্তু অর্থাভাবে বেশিদিন চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
ইয়ামিন আরও জানান, সরকারের কাছে তার আবেদন, তাকে জুলাই আন্দোলনের আহতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় যাতে তিনি আগের মতো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে পরিবারের হাল ধরতে পারেন। ইয়ামিনের মা জানান, আমার ছেলে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে গিয়ে আহতও হয়েছে। ছেলেটারে চিকিৎসা করাতে পারিনি। আমরা গরিব মানুষ তাকে যেন জুলাই আন্দোলনের আহতদের তালিকায় নাম দিয়ে স্বীকৃতি দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসান জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে ইয়ামিনের বিষয়টি জানতে পারলাম। যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।