বাংলারজমিন
সিলেটে বিদ্যুৎহীন থাকা ক্রাশার মিলে চুরি, আতঙ্ক বাড়ছে
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৬ জুলাই ২০২৫, রবিবারবিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় সিলেটের ধোপাগুলস্থ ক্রাশার মেশিন এলাকায় ব্যাপকহারে চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎহীনতার সুযোগে চোরেরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাথর ভাঙার মেশিনের কয়েক লাখ টাকার যন্ত্রাংশ ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুরি করে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়। চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় ধোপাগুলের পাথর মিল মালিকদের মধ্যে মারাত্মক উদ্বেগ বিরাজ করছে। সমপ্রতি ভোলাগঞ্জের স্থানীয় পাথর প্রক্রিয়াজাতের অভিযোগ এনে সিলেটের জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত টাস্কফোর্স ধোপাগুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এখানকার প্রায় সকল স্টোন ক্রাশার মিশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ক্রাশার মিশিনের মালিকদের অভিযোগ-তারা ২০-২৫ বছর ধরে বৈধ সংযোগ নিয়ে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ব্যবসার যথাযথ অনুমতিপত্র, অনাপত্তিপত্র, সংগ্রহ করে সরকারের নির্ধারিত আয়কর ও ভ্যাট প্রদান করে তারা দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এখানকার প্রতিটি মেশিনে ২০-২৫ জন দিনমজুর হিসেবে প্রতিদিন কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আকস্মিক কোনো কারণ ছাড়া, কিংবা কোনো প্রকার নোটিশ ব্যতিরেকে প্রশাসন অমানবিকভাবে এ অঞ্চলের ক্রাশার মেশিন বন্ধ করে দেয়ায় এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল হাজারো ব্যবসায়ী শ্রমিকেরা মারাত্মক সংকটে নিপতিত হয়েছেন। ধোপাগুল পাথর ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবির হোসেন বলেন, পুনর্বাসন কিংবা বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে আমাদের বৈধ মিশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে প্রশাসন আমাদের সাথে অন্যায় আচরন করেছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতের আঁধারে আমাদের মিল ফ্যাক্টরির মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। আমরা অতিসত্বর বিচ্ছিন্ন করে দেয়া আমাদের বৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ ফেরত চাই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত কয়েকদিনে ধোপাগুলে ২০টির অধিক ক্রাশার মেশিনে চুরি সংঘটিত হয়েছে। এরমধ্যে এস এস স্টোন ক্রাশার, সুন্দরবন স্টোন ক্রাশার, এম আর স্টোন ক্রাশার, দরবস্ত স্টোন ক্রাশার, ফাইভ স্টার স্টোন ক্রাশার, ফরহাদ স্টোন ক্রাশার, শাহজালাল স্টোন ক্রাশার, মেহের আলী স্টোন ক্রাশারের মালিকগণ অভিযোগ করেছেন গত কয়েকদিনে রাতে আঁধারে চোরেরা এসব মিলের লাখ লাখ লাখ টাকার বৈদ্যুতিক মোটর, ক্যাব্ল, ও ক্রাশার মেশিনের যন্ত্রাংশ নিয়ে গেছে। ফরহাদ স্টোন ক্রাশারের স্বত্বাধিকারী আজির মিয়া জানান, শুক্রবার রাতে চোরেরা তার মিল থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকার বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছে। পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা ও স্টোন ক্রাশার বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের দিনমজুর মানুষেরা চরম বিপাকে পড়েছেন। রোজগার না থাকায় অসহায় এ মানুষেরা পরিজন নিয়ে গভীর সংকটে দিনাতিপাত করছেন। একদিকে রোজগার বন্ধ এবং অন্যদিকে চোরের উপদ্রব সব মিলিয়ে ধোপাগুল এলাকার পাথর সংশ্লিষ্ট জীবিকা নির্বাহকারী হাজারো মানুষ মহাসংকটে দিনাতিপাত করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী শ্রমিকরা অবিলম্বে তাদের ব্যবসা চালু করার দাবি জানিয়েছেন।